কলকাতায় রাতের বায়ুদূষণের জন্য দায়ী মাত্রাতিরিক্ত ভারী ট্রাকের প্রবেশ বন্ধ করতে রাজ্যের বিভিন্ন রাস্তায় ট্রাক ওজন করার যন্ত্র (ওয়েব্রিজ) ও চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০০৫ সালের ওই নির্দেশের পরে এ পর্যন্ত রাজ্যে একটিই ওয়েব্রিজ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেটি এখনও চালু করা যায়নি। পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, ওয়েব্রিজ এবং চেকপোস্ট না থাকায় ভিন্ রাজ্য ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন বাড়তি ওজনের ট্রাক শহরে ঢুকছে। ফলে, কলকাতায় দূষণ যেমন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে রাস্তারও। তা ছাড়া, ট্রাক ওজন করার ব্যবস্থা নেই বলে বাড়তি পণ্যের রাজস্ব না পাওয়ায় রাজ্য সরকারের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এর জন্য পরিবহণ দফতরকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে ৪ বছর আগে ‘রাজ্য মোটর পরিবহণ ওয়েব্রিজ কর্পোরেশন’ তৈরি হয়। তারা এ পর্যন্ত মাত্র একটিই ওয়েব্রিজ তৈরি করতে পেরেছে। রাজ্যের কয়েকটি জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে ওয়েব্রিজ ও চেকপোস্ট তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল যৌথ উদ্যোগে। তার জন্য রাজ্যের আর্থিক দায় পর্যন্ত নেই। সেই পরিকল্পনাও কার্যকর হয়নি। এর জন্য পরিবহণ সচিবকে দায়ী করে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকে চিঠি দিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সুভাষবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও পরিবহণ সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর কথায়, “বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন। আমার পক্ষে কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয়।”
তবে গোপালিকার দাবি, ওয়েব্রিজগুলি তৈরির ব্যাপারে রাজ্য সরকারের আন্তরিকতার খামতি নেই। কিন্তু তা নিয়ে মামলা হওয়ায় সব কাজ থমকে গিয়েছে বলে পরিবহণ সূত্রের খবর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহণ আধিকারিকের বক্তব্য, ওয়েব্রিজ ও চেকপোস্ট দ্রুত তৈরির জন্য রাজ্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। কারণ ওয়েব্রিজ তৈরি না হওয়ায় কেবল দূষণই বাড়ছে না, বাড়তি ভার নিয়ে ট্রাক চলায় রাস্তাও নষ্ট হচ্ছে। কোন ট্রাক কত বাড়তি মাল বইছে তা জানতে না পারায় রাজ্য সরকারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু স্রেফ আমলাতান্ত্রিক গাফিলতিতে সেই কাজ আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ জানান সুভাষবাবু। |