দু’ একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মোটামুটি শান্তিতেই মিটল ৮ রাজ্যের ২৬টি বিধানসভা ও ১টি লোকসভা আসনের উপনির্বাচন। বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৬৭.২৪ শতাংশ ও ৭৪ শতাংশ। ২০১১-তে দু’টি কেন্দ্রেই ভোট পড়েছিল ৮০ শতাংশের উপরে (দাসপুরে ৮২.০৮ ও বাঁকুড়ায় ৮০.০৬)। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেও এ দিনের ভোটের হারকে যথেষ্ট ভাল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলি। রোদ চড়ার আগেই বেশির ভাগ ভোটার ভোট দিতে চেয়েছেন। তাই দু’টি কেন্দ্রেই বুথে বুথে লম্বা লাইন পড়ে সকাল থেকে।
রাজ্যের দু’টি কেন্দ্রেই ভোট হয়েছে শান্তিতে। কোনও পক্ষই বিশেষ কোনও অভিযোগ করেনি। বিরোধী বামেরা বরং ভোটের দিনে প্রশাসনের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া এলাকায় ইভিএম বিকল হয়ে কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকা ছাড়া বিশেষ সমস্যায় পড়তে হয়নি প্রশাসনকে। দিনের শেষে দুই কেন্দ্রেই নিজেদের প্রার্থীই জিতবেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল ও সিপিএম। শুক্রবারই অবশ্য বোঝা যাবে, কোন পক্ষের দাবির ওজন কতটা।
বাঁকুড়া শহরে তৃণমূলের একাংশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে দলের মধ্যেই অবশ্য অভিযোগ উঠেছে। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ-র দাবি, “সবাই মিলেই ঝাঁপিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী মিনতি মিশ্র বড় ব্যবধানেই জিতবেন।” দাসপুরের সিপিএম প্রার্থী সমর মুখোপাধ্যায় এ দিন বুথে-বুথে ঘুরেছেন। নিজেও ভোট দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “৪টি বুথে প্রত্যক্ষ এবং আরও কয়েকটি বুথে পরোক্ষ সন্ত্রাস হলেও জনগণের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। জেতার ব্যাপারে আশাবাদী।” |
আবার তৃণমূল প্রার্থী মমতা ভুঁইয়ারও দাবি, “জেতার ব্যাপারে সন্দেহ নেই। মার্জিন কী হয়, সেটাই দেখার।” দুই কেন্দ্রেই গত বছর তৃণমূল প্রার্থীরাই জিতেছিলেন বড় ব্যবধানে। তাঁদের মৃত্যুতেই উপ-নির্বাচনের আয়োজন।
ত্রিপুরায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নলছড়ের উপনির্বাচনে ৮টি ‘স্পর্শকাতর’ বুথে ছিল বাড়তি নিরাপত্তা। সিপিএম বিধায়ক সুকুমার বর্মণের মৃত্যুতে সোনামুড়ার মহকুমার নলছড় (সংরক্ষিত) আসনটি শূন্য হওয়ায় এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হল। এখানে সিপিএমের প্রার্থী তপনচন্দ্র দাস, কংগ্রেসের দ্বিজেন্দ্রলাল মজুমদার, বিজেপি-র পরিমল বর্ধন এবং আমরা বাঙালি’র বিপ্লব দাস। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যেই। নলছড়ের উপনির্বাচন রাজনৈতিক কারণে এ বার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বছরের গোড়ার দিকে এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সিপিএমের শক্ত ভিত বলে পরিচিত হলেও নলছড়কে কেন্দ্র করেই রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। কংগ্রেস এই কেন্দ্রে মাত্র এক বারই জিতেছিল, ১৯৮৩-তে।
এ দিন ভোট হল অন্ধ্রপ্রদেশের ১৮টি বিধানসভা ও নেল্লোর লোকসভা আসনে। ভোট পড়েছে ৮০ শতাংশ। এ রাজ্যে তিরুপতিতে কংগ্রেস এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের বুথ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের হাটিয়ায় ভোট পড়েছে বেশ কম। প্রাথমিক হিসেবে মাত্র ৩৪ শংতাংশ। ৮টি বুথে ইভিএম-এ গোলমাল হওয়া ছাড়া বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। এই কেন্দ্রের সেলিব্রিটি ভোটার মহেন্দ্র সিংহ ধোনি দুপুরে বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিতে আসেন।
এ ছাড়া ভোট হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, ও মধ্যপ্রদেশের একটি করে আসনে। দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পত জানিয়েছেন, মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। গণনা শুক্রবার। |