বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্নে জল ঢালছে টাকার পতন
ত কয়েক মাসে ডলারের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। হুড়মুড়িয়ে পড়েছে টাকা। ফলে কেরল-গোয়ার খরচেই তাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া ঘুরে আসার জুতসই হিসেব এখন আর মিলছে না। তাই সেই বাড়তি খরচ বয়ে বিদেশে বেড়াতে যাওয়ার আগে দু’বার ভাবছেন সাধারণ পর্যটকেরা। অনেক ক্ষেত্রে মরিশাসের জন্য বাজেট না-বাড়িয়ে তাঁরা উঠে বসছেন আন্দামানের উড়ানে। বেড়ানোর জন্য অনেকেরই বিদেশ পাড়ির পরিকল্পনা বদলে দিচ্ছে টাকার মূল্যহ্রাস।
সস্তার উড়ান ও কম দামের হোটেল এই দুই ডানায় ভর করে গত ক’বছরে বিদেশে বেড়ানোর স্বপ্নপূরণ হয়েছে অনেকের। কেরল-গোয়া-কাশ্মীরের প্রায় কাছাকাছি খরচেই তাঁরা পৌঁছেছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। দেদার কেনাকাটাও করেছেন। কিন্তু ডলার মহার্ঘ হওয়ায় সে পথে হাঁটতে যে তাঁরা এখন দু’বার ভাবছেন, তা স্পষ্ট ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (টাই)-র পরিসংখ্যানে।
টাই-এর পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান অপর্ণা বসু মল্লিক জানাচ্ছেন, আগে খোঁজ নেওয়ার পর অন্তত ৫০% মানুষ বেড়ানো চূড়ান্ত করতেন। এখন তা ২৫%। সংগঠনের অন্যতম কর্তা মনোজ সরাফের দাবি, ছ’মাস আগেও তাইল্যান্ড যাওয়ার (৪ দিন-৫ রাত) মাথা পিছু খরচ ছিল ২৫ হাজার টাকা। এখন ডলারের দাম বাড়ায় তা প্রায় ৩৩ হাজার। ইউরোপে বেড়েছে প্রায় ১৫ হাজার। সাধারণত এই সময়েই পুজোর মরসুমের বুকিং শুরু হয়। কিন্তু এ বার এই প্রবণতায় দৃশ্যতই ভাটার টান। পর্যটকদের বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির সংগঠন আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার কর্তা বিনীত গোপালের শঙ্কা, বেড়াতে বিদেশ যাওয়া ভারতীয়ের সংখ্যা কমতে পারে ১০%।
তবে এ জন্য শুধু টাকার পড়তি দামকেই দায়ী করতে নারাজ পর্যটন শিল্প। তাদের দাবি, আরও সমস্যা আছে। যেমন, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমা সত্ত্বেও জ্বালানি সারচার্জ বাড়িয়েছে বিমান সংস্থাগুলি। বাজেটে পরিষেবা কর বাড়ায় ‘সস্তা’র উড়ানের ভাড়াও ঊর্ধ্বমুখী। আন্তর্জাতিক উড়ানে যাত্রী পিছু আদায় করা অর্থের অঙ্ক প্রায় দু’হাজার টাকা বাড়িয়েছে দিল্লি বিমানবন্দর। বেড়েছে ভিসার খরচ। এ সবের সঙ্গেই যোগ হয়েছে টাকার পতন জনিত সমস্যা। এমনকী পর্যটকদের দেওয়া চেক ভাঙানোর আগেই টাকার দাম ফের পড়লে, সেই বাড়তি খরচ তাদের বইতে হচ্ছে বলে পর্যটন সংস্থাগুলির দাবি।
কিন্তু টাকার দাম পড়লে তো ভারতে আসার খরচ কমা উচিত বিদেশি পর্যটকদেরও? লাভ হওয়া উচিত পর্যটন সংস্থাগুলির। তবে এ যুক্তি মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট শিল্পের বড় অংশ। তাদের দাবি, অন্তত ছ’মাস আগে পরিকল্পনা করে ভারতে আসেন বিদেশি পর্যটকেরা। তাই তাঁদের ক্ষেত্রে এ জন্য কোনও হেরফের হওয়া শক্ত। আর যাঁরা হঠাৎই ব্যাগ গুছিয়ে আসেন, তাঁরা সাধারণত সংগঠিত পর্যটন সংস্থার মাধ্যমে এ দেশে পা রাখেন না। ফলে এর থেকে সংস্থাগুলির ফায়দা তোলা শক্ত। ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন-এর কর্তা এল ম্যাথুজের দাবি, পেট্রোল ও বিমান জ্বালানির দাম বাড়ায় বরং ভাটা পড়তে পারে বিদেশিদের ভারত ভ্রমণে। তবে অন্য অংশের মতে, টাকার দাম কমায় বেশি বিদেশি এলে, পর্যটন সংস্থার সঙ্গে সুফল পেলেও পেতে পারে স্থানীয় হোটেল-সহ আনুষঙ্গিক পরিষেবা সংস্থা।
এ সবের মধ্যেও আশার রুপোলি রেখা দেখছে পর্যটন শিল্প। কারণ, কেরল, গোয়া, আন্দামান, কাশ্মীর-সহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের কদর বাড়ছে। প্রসঙ্গত, সিকিম, দার্জিলিং এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলও বিপুল সংখ্যক পর্যটক টানছে, দাবি অ্যাসোসিয়েশন অফ ডোমেস্টিক ট্যুর অপারেটর্স অফ ইন্ডিয়ার অন্যতম কর্তা দেবজিৎ দেবের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.