কুলটি ইস্কো কারখানা
জারি হল লিজ দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি, ক্ষুব্ধ আবাসিকেরা
রাষ্ট্রায়ত্ত কুলটি ইস্কো কারখানার কর্মী আবাসনগুলিকে লিজ দেওয়ায় বিজ্ঞপ্তি জারি করায় বিক্ষোভ শুরু করলেন বাসিন্দারা। তাঁরা ঘর ছাড়বেন না ও কোনও লিজও নেবেন না বলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, আবাসন পিছু লিজ বাবদ অনেক বেশি টাকা ধার্য করা হয়েছে। যদিও কারখানা কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সুপ্রিম কোর্টের নিয়মনীতি মেনেই লিজ প্রক্রিয়া জারি রাখা হবে।
কুলটি কারখানা কর্তৃপক্ষ সোমবার প্রায় ১২০০ কর্মী আবাসন লিজ দেওয়ার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। শিমূলগ্রাম, কেন্দুয়া বাজার, আপার কুলটি ও ইন্দিরা গাঁধী কলোনিতে এই আবাসনগুলি রয়েছে। আবাসনগুলির চরিত্র বিন্যাস করে সর্বনিম্ন মূল্য ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ১১ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ মূল্য ৪ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। কুলটি কারখানার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কৃষ্ণকান্ত তিওয়ারি জানান, এককালীন এই টাকা জমা দিয়ে লিজ নিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে কেউ আর থাকতে না চাইলে তিনি লিজের অর্থ ফেরত পাবেন। প্রতি মাসে আবাসনগুলির জন্য নূন্যতম ৩০০ থেকে সর্বাধিক ২০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাড়া দিতে হবে। প্রথম দফায় ১১ মাসের জন্য লিজ মিলবে। এর পরে সময়সীমা বাড়ানো হবে। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটি কারখানার প্রাক্তন শ্রমিককর্মী বা তাঁদের নিকট আত্মীয়েরা প্রথমে লিজ নেওয়ার অধিকার পাবেন। পরে সেলের অধীনস্থ বিভিন্ন ইস্পাত কারখানার শ্রমিককর্মীরা এই সুযোগ পাবেন।
ছবি: শৈলেন সরকার।
কুলটি কারখানা অতীতে ইস্কোর কুলটি ইউনিট নামে পরিচিত ছিল। ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ কারখানাটি পাকাপাকি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত কারখানার প্রায় চার হাজার আবাসন দখল হয়ে রয়েছে। কিছু আবাসনে প্রাক্তন শ্রমিককর্মীরা বসবাস করছেন। বেশিরভাগই দখল করে নিয়েছেন কারখানা বহির্ভূত মানুষজন। ইতিমধ্যেই এই কারখানা সেলের গ্রোথ ডিভিশনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ২০০৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর কারখানাটি ফের চালু হয়। ঠিকাদার শ্রমিক নিয়োগ করে উৎপাদন চালু হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেটি লাভের মুখ দেখেনি। অথচ কারখানার কর্মী আবাসনগুলির জল ও বিদ্যুতের জন্য সেল কর্তৃপক্ষকে প্রতি মাসে অনেক টাকা ব্যয় করতে হয়। অবশেষে লিজ প্রক্রিয়া চালু করে এই ব্যয় সংকোচনে সচেষ্ট হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে, কর্মী আবাসন লিজ দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই এলাকায় শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আবাসিকেরা জোটবদ্ধ ভাবে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাইকে প্রচার করতে থাকেন, তাঁরা কিছুতেই আবাসন ছাড়বেন না। এমনকী তাঁরা লিজও নেবেন না। এমনই এক জন মনোজ পাসোয়ান বলেন, “আমরা এখানে সাত বছর ধরে বসবাস করছি। এখন লিজ দেওয়ার নামে ছাড়তে বললেই যাব কেন?” অধিকাংশ আবাসিকের দাবি, লিজের জন্য অনেক বেশি মূল্য ধার্য করা হয়েছে। ইন্দিরা গাঁধী কলোনির বাসিন্দা সহিকা দাস বলেন, “আবাসনগুলির অবস্থা খুব খারাপ। দেওয়ালে পলেস্তারা নেই। দরজা-জানালা ভেঙে গিয়েছে। মেঝে ফেটে গিয়েছে। এই অবস্থায় আবাসনগুলি লিজের জন্য অনেক বেশি টাকা চাওয়া হচ্ছে।”
কারখানা কর্তৃপক্ষের একাংশের অভিযোগ, প্রভাবশালী কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি এই আবাসনগুলি গায়ের জোরে দখল করে রেখেছেন। চড়া ভাড়ায় বহিরাগতদের থাকতে দিচ্ছেন তাঁরা। এমনকী মোটা টাকার বিনিময়ে আবাসনগুলি কেনা-বেচাও চলছে। লিজের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় সেই ব্যবসা মার খেতে বসেছে। তাই বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতা শুরু করেছেন তাঁরা।
কারখানার দায়িত্বে থাকা ডিজিএম কৃষ্ণকান্ত তিওয়ারি বলেন, “সেল কর্তৃপক্ষ অর্থমূল্য ঠিক করেছেন। উপযুক্ত নীতি নির্ধারণ করেই এ কাজ করা হয়েছে। লিজ নেওয়া বা না নেওয়া পুরোপুরি কর্মীদের বিষয়।” তাঁর দাবি, “প্রতি মাসে আবাসনগুলিতে জল সরবরাহের জন্য পাঁচ কোটি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চার কোটি টাকা বিল মেটাতে হয় কর্তৃপক্ষকে। আবাসনগুলি লিজ দেওয়া হলে সেই টাকা সাশ্রয় হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.