|
|
|
|
|
অ্যাটাকিং থার্ড |
শুরুতে ছন্নছাড়া দেখালেও এই
জার্মানি নিজেদের পাল্টে ফেলবে
ট্রেভর জেমস মর্গ্যান |
|
শনিবার গভীর রাতে অস্ট্রেলিয়ায় বসে ম্যাচটা দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, সোমবার যাঁরা আমার লেখা পড়বেন তাঁরা কতটা অবাক হতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী এক ইংরেজ কিনা জার্মানদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছে!
একজন ইংরেজের মুখে জার্মানদের প্রশংসা ব্যাপারটা যতই অদ্ভুত ঠেকুক, আমি কিন্তু ঠিক সেটাই করব। হ্যাঁ, মেনে নিচ্ছি প্রথম ম্যাচে ভাগ্য জার্মানদের পাশে ছিল। ওরা ওদের পুরো ক্ষমতা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। দল হিসাবে ওদের বেশ ম্যাড়ম্যাড়ে আর ছন্নছাড়া দেখিয়েছে। কিন্তু তাতে কী-ই বা এল গেল? ঘটনা হচ্ছে, দিনের শেষে, পয়েন্ট তালিকায় জার্মানির নামের পাশে তিন পয়েন্ট।
আর সেটাই আসল কথা।
বিশ্ব জুড়ে অন্য সব কোচের মতো আমিও কোচ হিসাবে আমার ইস্টবেঙ্গলের ছেলেদের একটা কথা বলে থাকি। বড় টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে তোমাদের খেলা দেখে যদি বিশেষজ্ঞরা খুশি না হয় বা দর্শকের মন না ভরে, তাতে কোনও ক্ষতি নেই। শুধু একটা জিনিস নিশ্চিত করো, প্রথম ম্যাচ থেকে যেন পুরো পয়েন্ট ঘরে আসে। জার্মানরা ঠিক সেটাই করল। এই ম্যাচটা জেতায় জার্মান ড্রেসিংরুমের মেজাজটা মানসিক ভাবে তুঙ্গে থাকবে। আর পরের ম্যাচ থেকে ওরা একেবারে গিয়ার বদলে ফেলে খেলতে শুরু করলে আমি মোটেই অবাক হব না। |
|
অনেকেই বলতে পারেন, ইউরো শুরুর আগে প্রাক-টুর্নামেন্ট আলোচনায় এই জার্মান দলটাকে যতটা শক্তিশালী বলে তুলে ধরা হচ্ছিল, আদতে দলটা তত আহামরি নয়। আমি কিন্তু একেবারেই সে রকম মনে করি না। বরং আমার বিশ্বাস, এই জার্মানি সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। একবার সেমিফাইনালে পৌঁছাতে পারলে তার পরে তো আর স্রেফ দু’টো ম্যাচের মামলা!
আমার অবশ্য আরও বেশি অবাক লাগল মেসুট ওজিলকে দেখে। প্রথম ম্যাচে ওর বল পজেশন ছিল খুব ভাল। কিন্তু পেনিট্রেট করতে পারল না। টুর্নামেন্টের পরের দিকে গিয়ে এই ব্যাপারটা জার্মানদের দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। কিন্তু প্রথম রাউন্ডেই জার্মানির কোচ এটা নিয়ে তেমন ভাববেন বলে মনে হয় না। আসলে ইউরোর মতো বড় মঞ্চে আপনাকে দলের সেরা প্লেয়ারদের ছেড়ে দিতে হয়, যাতে নিজেদের হয়ে চিন্তা-ভাবনাটা তারা নিজেরাই করতে পারে। ওজিলের মতো চ্যাম্পিয়নরা খুব ভাল করে জানে ঠিক কখন, কোথায় ওদের নিজের খেলাটা বদলাতে হবে। আর কোচ হিসাবে আপনাকে সেই স্বাধীনতাটুকু ওদের দিতেই হবে। জোর দিয়ে বলতে পারি, ওজিল নিজের সেরাটা তুলে রেখেছে। টুর্নামেন্ট যত গড়াবে, ততই জ্বলে উঠবে ও।
অন্য দিকে, সেই এক পুরনো গল্প চলছে পর্তুগালের। মাঠে নেমে ওরা নজরকাড়া ফুটবল খেলবে, খুব ভাল কিছু মুভ করবে কিন্তু দিনের শেষে হেরে ফিরবে। পর্তুগালের ক্ষেত্রে এই গল্পটা এখন বড্ড বেশি দিন ধরে চলে আসছে। শনিবারের ম্যাচেও ওরা শেষ ষোলো মিনিট জার্মানির ডিফেন্সকে নাকানি-চোবানি খাইয়ে ছাড়ল কিন্তু জার্মানির বক্সে তোলপাড় তোলার পরেও গোল করতে পারল না।
নানিকে দেখে হতাশ হলাম। আরও বেশি হতাশ হলাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে দেখে। ডেনমার্ক নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে দেওয়ায় পর্তুগাল কিন্তু আরও চাপে পড়ে গেল। ওরা এ বার জার্মানদের দেখে একটু শিখতে পারে। যে, সব সময় নজরকাড়া ফুটবল খেলার দরকার নেই। শুধু এটুকু নিশ্চিত করো যাতে পুরো পয়েন্ট ঘরে আসে।
হ্যাঁ, এক জন ইংরেজ আবার সেই জার্মানদের প্রশংসা করছে ... কিন্তু কী আর করা যাবে? এটাই জীবন। এটাই ফুটবল। |
|
|
|
|
|