বর্ষার প্রস্তুতি
জল-ছবি বদলাবে, আশায় পুরকর্তারা
সন্ন বর্ষায় জল জমার হাত থেকে কি রেহাই পাবেন শহরবাসী? নাকি ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলেই প্রতি বারের মতো এ বারও ডুবে থাকবে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা?
বর্ষা আসার আগেই এই জল্পনা শুরু হয়েছে পুরসভার অন্দরমহলে। উত্তর ও মধ্য কলকাতা নিয়ে সামান্য আশান্বিত হলেও ভারী বৃষ্টিতে দক্ষিণ কলকাতার বেহালা ও সংলগ্ন এলাকায় এ বারও জল জমার আশঙ্কায় খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
বর্ষায় শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে নানা জায়গায় রাস্তা, গলি, কোথাও বা একতলার ঘরবাড়িও ডুবে থাকে নোংরা জলে। অসহ্য সেই পরিস্থিতি থেকে এ বার শহরবাসীকে মুক্ত করতে চায় পুর-প্রশাসন। তৃণমূল সরকারের এক বছর পূর্তি লগ্নে দাঁড়িয়ে এমনই আশার বাণী শুনিয়েছিলেন নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ রাজীব দেব।
কিন্তু তা কি সম্ভব? নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিক জানান, ঘণ্টায় ১২ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির জল ধরে রাখার ক্ষমতা আছে শহরের। যা স্বাভাবিক নিয়মে সহজেই মাটির তলায় চলে যায়। তার বেশি বৃষ্টি হলে কলকাতার বেশ কিছু অংশে জল জমে। আর বৃষ্টির পরিমাণটা ৩০০ মিলিমিটার ছাড়ালে শহর কার্যত জল জমে অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
রাজীববাবুর দাবি, বর্ষায় কলকাতার এই পুরনো চেহারাটা বদলাতে এ বার আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে পুরসভা ও রাজ্যের সেচ দফতর। পাম্পিং স্টেশনের অকেজো পাম্পগুলো বর্ষার আগেই সারিয়ে ফেলা হয়েছে।
তা হলে এ বার কি ভারী বৃষ্টিতে জল জমবে না?
বেহালার এই হাল কি ফিরবে? ফাইল চিত্র
রাজীব দেবের জবাব, “জল হয়তো জমবে। তবে তা দ্রুত বার করে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে শহরের পাম্পিং স্টেশনগুলি।”
সে কি আগে ছিল না?
রাজীববাবুর যুক্তি, ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা পুরনো কলকাতার (প্রধানত উত্তর ও মধ্য কলকাতা) বিভিন্ন এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে জলের গতি রুদ্ধ হত। এ বার সে সব পরিষ্কার করা হয়েছে। দ্রুত নিকাশির জন্য মাটির নীচে বসানো হয়েছে বিশেষ ধরনের পলিমার পাইপ (জিআরপি লাইনিং)। ইতিমধ্যেই মধ্য ও উত্তর কলকাতার কিছু এলাকায় ওই পাইপলাইনের কাজ হয়েছে। রাজীববাবুর বক্তব্য, “বৃষ্টি হলেই উত্তর ও মধ্য কলকাতার কয়েকটি এলাকায় দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকত পলির কারণে। এ বার সেই সমস্যা থাকবে না।” একই সঙ্গে গোটা কলকাতায় যে সব খাল বেয়ে জল যায়, সেগুলিও নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে বলে মেয়র পারিষদ জানান।
পুরসভা সূত্রের খবর, পুরনো কলকাতায় বৃষ্টির জমা জল বেরোয় পামার্স ব্রিজ, বালিগঞ্জ, ধাপালক ও মানিকতলা ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশন দিয়ে। পরে ওই জল স্টর্ম ওয়েদার চ্যানেল (এস ডব্লিউ এফ), ড্রাই ওয়েদার চ্যানেল (ডি ডব্লিউ এফ), টাউন হেডকাট ও সাবার্বান হেডকাট খাল হয়ে চলে যায় কুলটিগাঙে। সেখান থেকে তা পড়ে বিদ্যাধরীতে। বেহালা-সহ দক্ষিণ কলকাতার একটা অংশের জল চড়িয়াল, মণিখালি হয়ে চলে যায় সাগরে।
সেচ দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, পাম্পিং স্টেশনে জল আসা ও সেখান থেকে নদীতে জল যাওয়ার জন্য সারা শহরে যে সব ক্যানাল বা খাল আছে, সেগুলি আগে নিয়মিত পরিষ্কার হত না। কাজের দায়িত্ব নিয়ে পুরসভা ও সেচ দফতরের মধ্যে চাপান-উতোর চলত। এ বার সেই সমস্যা মিটেছে। বর্ষার আগেই বাগজোলা, বেলেঘাটা, টালিগঞ্জ-পঞ্চান্নগ্রাম, টালিনালা, কেওড়াপুকুর, চড়িয়াল, মণিখালি-সহ শহরের বিভিন্ন খালে জমে থাকা কচুরিপানা ও পলি সাফাই হচ্ছে। সেচ দফতর ও পুরসভা একসঙ্গে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছে বলে ওই ইঞ্জিনিয়ারের দাবি। তবে প্রশাসকেরা যা-ই বলুন না কেন, পরপর কয়েকটি কালবৈশাখীর সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের কিছু অংশে যে ভাবে জল জমেছে, তাতে শহরবাসীর আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.