ফুলহার নদীর ভাঙনে তলিয়েছে জমি, বসতবাড়ি। মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে একচালার ছাউনি দেওয়া ঘর। সেই ঘরেই গাদাগাদি করে কাটাতে হয় ৫ জনকে। রোজগার বলতে টিউশন করে বাবার সামান্য আয়। যা দিয়ে ৫ জনের ঠিকমতো খাবারও জোটে না। দুঃস্থ পরিবারে সন্তান হয়েও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্কুলের সবাইকে চমকে দিয়েছেন শুভশ্রী মন্ডল। তাঁর প্রাপ্ত মোট নম্বর হল ৪৩১। ফুলহার নদীর ওপারে কাটাহা দিয়ারা হাই স্কুল থেকে এ বছর কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। লেটার পেয়েছে সবকটি বিষয়েই। শুধু স্কুলে নয়, চাঁচল মহকুমায় মেয়েদের মধ্যেও সর্বোচ্চ তিনি। শুভশ্রীর ফলে তার গ্রাম ঈশ্বরপাড়ার পাশাপাশি খুশির হাওয়া স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেও। ইংরেজি নিয়ে পড়শুনা করে কলেজে শিক্ষকতা করতে চান শুভশ্রী। সেই স্বপ্ন কী ভাবে স্বার্থক হবে তা নিয়ে পরিবারের পাশাপাশি দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শুভশ্রীও। কেননা বাইরে ভাল কলেজে পড়ার পথে অন্তরায় অর্থ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোপাল প্রামাণিক বলেন, “জেদ আর অদম্য লড়াই করার মানসিকতা থেকেই ও এত ভাল ফল করেছে। শিক্ষকশিক্ষিকারাও ওকে সাহায্য করতেন। কেউ ওর পাশে দাঁড়ালে শুভশ্রী উপকৃত হবে।” ফুলহার নদীর ও পারে মহানন্দটোলার গ্রাম ঈশ্বরপাড়া। বন্যা-ভাঙন যেখানে প্রতি বছরের ব্যাপার। তাতে অনেকের মতো সব খুইয়েছেন শুভশ্রীর বাবা মন্টু দাসও। তিন মেয়েকে নিয়ে টিউশন পড়িয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় তাকে। কেননা প্রত্যন্ত ওই গ্রামে যারা টিউশন পড়ে তাদেরও অবস্থা একই রকম। ফলে ঠিকমতো তাদের কাছ থেকে টাকাও জোটে না। আবার শিক্ষিত হওয়ায় দিনমজুরির কাজও করতে পারেন না। মন্টুবাবু বলেন, “ভাল পরিবেশ পেলে মেয়েটা আরও ভাল ফল করত। নিজের চেষ্টায় ও যা করেছে তাতে আমরা খুশি। একটাই চিন্তা, কীভাবে ওকে ভাল কলেজে পড়াব।” শুভশ্রী বলেন, “শিক্ষকতা করতে চাই। কী ভাবে সেই স্বপ্ন সফল হবে তা জানি না।”
|
দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার মার্কশিট হাতে না-পাওয়ায় ইসলামপুর কলেজের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফর্ম পূরণের কাজ আটকে দিলেন ২৫ জন ছাত্রছাত্রী। শুক্রবার ওই ঘটনার জেরে ইসলামপুর কলেজে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারী ছাত্ররা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাসের দফতরের সামনে বিক্ষোভও দেখান। তাঁদের অভিযোগ, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ হয়। সে সময়ে তাঁদের ফল অসম্পূর্ণ ছিল। কয়েকজন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেওয়া সত্বেও মার্কশিটে অনুপস্থিত হিসাবে দেখানো হয়। এখনও সংশোধিত মার্কশিট বিলি হয়নি। ফলে তাঁরা তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় বসতে পারবেন কি না সেটা স্পষ্ট নয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ সদুত্তর দিতে পারছেন না। ইসলামপুর কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে অনুপমা দাস, অনুপ রায়, রাকেশ রায়, মহম্মদ মঞ্জুরা বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য আমাদের এভাবে ভুগতে হচ্ছে। আমরা কলেজে পরীক্ষার ফর্ম জমা দিতে পারছি না। এমনকী আমরা জানতেও পারিনি পাস করেছি কি না।” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ যুক্তিসঙ্গত। চার মাস পরেও কলেজে মার্কশিট পৌঁছয়নি। সেটা মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানাব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।”
|
ঢিল ছোড়াছুড়ির অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকদের সংঘর্ষে ১৪ জন জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে কোচবিহারের ঘোকসাডাঙা থানার ফুলবাড়ির নবগঞ্জ বাজার এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। জখমদের ৪ জনকে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাম্প্রতিক পুরভোটে দলের সাফল্যের জেরে ঘোকসাডাঙা থানার ফুলবাড়ির নবগঞ্জ বাজার এলাকায় ওই দিন রাতে বিজয় মিছিল বার করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। পুলিশের অনুমতি নিয়ে নবগঞ্জ বাজার এলাকায় তাঁরা মিছিল করেন। সিপিএম সমর্থকরা ওই মিছিলে ইট ছুড়লে উত্তেজনা ছড়ায় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। সিপিএম পাল্টা অভিযোগ করেছে, বিজয় মিছিলের সময় দলের এক সমর্থকের বাড়িতে তৃণমূল সমর্থকরা ঢিল ছোড়ে। এলাকার একটি দলীয় অফিসেও হামলা চালানো হয়। তার জেরে উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মিছিলে পরিকল্পিত ভাবে ইট-পাথর ছুড়ে হামলা করে সিপিএম কর্মীরা। ওই ঘটনায় দলের ১২ জন জখম হন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক তারিণী রায় পাল্টা বলেন, “বিজয় মিছিল থেকে আমাদের এক মহিলা সমর্থকের বাড়িতে প্রথম ঢিল ছোড়া হয়। পরে তৃণমূল সমর্থকরা নবগঞ্জ বাজারে অন্য এক কর্মীকে মারধর করে দলের অফিসে হামলা চালালে বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানান।” এসডিপিও সীতারাম সিংহ বলেন, “দুপক্ষের গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।”
|
বিয়েবাড়ি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুই শিশু-সহ ছ’জনের। শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট থানার পতিরাম এলাকায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় মানুষজনের ক্ষোভের মুখে পড়ে জখম হন এক পুলিশকর্মী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালুরঘাট থেকে গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়ি এলাকায় যাচ্ছিল বরযাত্রী বোঝাই গাড়িটি। বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরে পতিরাম এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্পের সামনে একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় গাড়িটির। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ছ’জনের। বর-সহ গুরুতর জখম ১৩ জনকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার পরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকাবাসী। পুলিশের উপরেও চড়াও হয় জনতা। জখম হন এক পুলিশকর্মী। ঘটনাস্থলে যান প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
|
আন্তঃরাজ্য মোটরবাইক চোরাই চক্রের ২ পাণ্ডাকে গ্রেফতার করল কুমারগ্রামের কামাখ্যাগুড়ি আউট পোস্টের পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে তেলিপাড়া থেকে তাদের ধরা হয়। ধৃতদের নাম জনি মুশাহারি ও ইসান মোচারি। জনির বাড়ি অসম কোকরাঝার জেলার বাজুগাঁও। ইসান কুমারগ্রামের ছোটদলদলি গ্রামে।
|
ফুলবাড়ির ছবাভিটা ক্লাবের তরফে বৃহস্পতিবার এলাকার দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়। |