|
|
|
|
প্রশ্ন তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে |
মহাকরণে জমা পড়ল জি টি এ সংক্রান্ত রিপোর্ট |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) আওতায় তরাই-ডুয়ার্সের এলাকা অন্তর্ভুক্তির দাবি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দিল উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি। রিপোর্ট জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জিটিএ-তে নির্বাচনের পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার।
শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষের কাছে ওই রিপোর্ট জমা পড়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, ওই কমিটির চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন প্রতিনিধি মারফত মহাকরণে রিপোর্ট পাঠান। আজ, শনিবার রিপোর্টের বিষয়বস্তু সরকারের তরফে জানানো হবে। তরাই-ডুয়ার্সের এলাকা অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রিপোর্টে কী বলা হয়েছে, এখন লাখ টাকার প্রশ্ন সেটাই। যদিও রিপোর্টের সুপারিশ নিয়ে কোনও পক্ষই এ দিন মুখ খোলেনি। তবে সেটি ১৬৮ পাতার বলে সরকারি সূত্রের খবর।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি রিপোর্ট দেখিনি। মুখ্যসচিব বোধহয় দেখেছেন। যা বলার, উনি বলবেন।” এর পরে মুখ্যসচিব বলেন, “রিপোর্ট জমা পড়েছে। তবে আমি তা পড়ে দেখিনি। আশা করছি, শনিবার বলতে পারব।” রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ করা বাধ্যতামূলক কি না, সে প্রশ্নে সমরবাবু জানান, এটি একটি কমিটির রিপোর্ট, তাই বিধানসভায় পেশ করার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। রিপোর্ট খুব শীঘ্রই সাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানান। |
|
জিটিও-তে তরাই ডুয়ার্সের মৌজা অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে মোমবাতি
জ্বালিয়ে বিক্ষোভ জানাল আইএনটিইউসি। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি। |
মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “রিপোর্ট জমা পড়েছে শুনেছি। তাতে কী আছি জানি না। আমরাও খোঁজ নিচ্ছি।” জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের এলাকা অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবের ধারাবাহিক বিরোধিতা করে আসছে যারা,
সেই আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বীরসা তিরকির কথায়, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, জিটিএ-তে সমতলের কোনও মৌজা অন্তর্ভুক্ত করার কথা রিপোর্টে উল্লেখ থাকবে না।” পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো জানান, ‘অন্যায্য’ ভাবে কোনও মৌজা জিটিএতে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তরাই-ডুয়ার্সে বড় ধরনের আন্দোলন হবে। এ দিন সন্ধ্যায় জিটিতে তরাই এবং ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আইএনটিইউসি-র জেলা সভাপতি অলোক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
গত জুলাইয়ে শিলিগুড়ি লাগোয়া পিনটেল ভিলেজে কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মোর্চা নেতৃত্ব তরাই, ডুয়ার্সের ৩৯৮টি মৌজা জিটিএতে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান। ওই দাবি খতিয়ে দেখতে ৯ সদস্যের কমিটি তৈরি করে রাজ্য সরকার। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় শ্যামল সেনকে। কমিটিতে রাজ্যের তরফে প্রতিনিধি ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির জেলাশাসক এবং আরও এক জন। কেন্দ্রের পক্ষে সেন্সাস অধিকর্তা কমিটিতে ছিলেন। মোর্চার চার প্রতিনিধি হলেন দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও কালচিনির বিধায়ক।
ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কমিটি তৈরি হয় গত বছর অগস্টে। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সময়সীমা আরও ছ’মাস বাড়ানো হয়। তবে কমিটির বিচার্য বিষয় নিয়ে তরাই-ডুয়ার্স ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় জুনের প্রথমার্ধেই রিপোর্ট যাতে জমা পড়ে, সেই ব্যাপারে মোর্চা আর্জি জানায়। কারণ, জুলাইয়ের মধ্যেই জিটিএ নির্বাচন সেরে ফেলতে চাইছে রাজ্য। শ্যামল সেনও জানিয়েছেন, জুলাই মাসে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁকে জুন মাসের প্রথম পক্ষে (১৫ তারিখের মধ্যে) তা জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সাধারণ ভাবে সরকারের তৈরি কোনও কমিশন বা কমিটির সুপারিশ সরকার নাও মানতে পারে। কিন্তু সরকার, মোর্চা-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক
দলের উপস্থিতিতে আগেই চুক্তি করে ঠিক হয়েছে, কমিটির সুপারিশ সব পক্ষ মেনে নেবে। মুখ্যসচিবও এ দিন সেই চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। শ্যামলবাবু অবশ্য বলেন, “ওই চুক্তির পরেও রিপোর্ট মানা হবে কি না, তা আমি বলতে পারব না।”
মহাকরণের খবর, আগামী ১৫ অথবা ২২ জুলাই জিটিএ-র ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ভোট হবে ইভিএমে। মুখ্যসচিব জানান, জিটিএ এলাকার পুনর্বিন্যাস করার জন্য যে খসড়া তৈরি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। সেই কাজ শেষ হলেই নির্বাচন হবে। তবে তা হবে জুলাইয়েই।
|
|
|
|
|
|