|
|
|
|
ভূমিকম্পের ক্ষতিপূরণ মেলেনি, তালিকায় নাম শুধু ঘনিষ্ঠদের |
সৌমিত্র কুণ্ডু • শিলিগুড়ি |
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্পে গঙ্গানগরের বাসিন্দা বেণু রায়ের বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরে। তার পরে ৮ মাস কেটে গেলেও তিনি ক্ষতিপূরণ পাননি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাতেও তাঁর নাম নেই। কাউন্সিলরের কাছে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর। ৬০ বছরের বৃদ্ধা কালী খাতি গঙ্গানগরের নেপালি বস্তিতে থাকেন। ভূমিকম্পের দিন হুড়োহুড়ি করে ঘর থেকে বার হতে গিয়ে পড়ে বাঁ হাত ভেঙে জখম হন। এখনও হাত ঠিক না হওয়ায় ‘ক্রেপ ব্যান্ডেজ’ বেঁধে রেখেছেন। জখম হলেও ক্ষতিপূরণ পাননি। তাঁরও বাড়ির দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। কাউন্সিলরের তৈরি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম নেই তাঁরও। শিলিগুড়ি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই দুই বাসিন্দা তো বটেই, শঙ্কর দাস, সুশীল শর্মা, কুসামা দেবীদের মতো অনেকেরই অভিযোগ, ভূমিকম্পে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তালিকায় তাঁদের নাম তোলা হয়নি। অথচ প্রত্যেকেই কাউন্সিলরের কাছে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জমা দিয়েছেন। অনেকে বাড়ির দেওয়ালের ফাটলের ছবি তুলে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করেছেন। সম্প্রতি ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের নেতৃত্বে এলাকার প্রায় তিন শতাধিক বাসিন্দা শিলিগুড়ি পুরসভায় গিয়ে ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মাকে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। তাঁদের অভিযোগ, গঙ্গানগর, মহারাজ কলোনি, সন্তোষীনগরের মতো বিভিন্ন এলাকার প্রায় পাঁচশো বাসিন্দার বাড়ি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কাউন্সিলর তাঁদের নাম তালিকায় রাখেননি। উল্টে কাউন্সিলরের দলের ঘনিষ্টদের নামই কেবল তালিকায় রাখা হয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একই বাড়ির একাধিক ব্যক্তির নামও তালিকায় রেখে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহের দাবি, “তালিকায় ভুল নেই। তবে ২ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের নাম জমা দিতে বলা হয়েছিল। তার মধ্যে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আরও কিছু নাম বাকি রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তাঁরাও কেউই এখনও টাকা পাননি কেন বুঝতে পারছি না। ঘটনা তদন্ত করে দেখা দরকার।” ডেপুটি মেয়র বলেন, “অমরনাথবাবুর ওয়ার্ডে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক বাসিন্দার নাম তালিকায় রাখা হয়নি বলে অভিযোগ মিলেছে। তা খতিয়ে দেখা হবে।” তৃণমূল নেতা চন্দ্রমোহন সিংহের অভিযোগ, “একই পরিবারের একাধিক লোকের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে। ওই তালিকা ঠিক নয়। তদন্ত হলে তা স্পষ্ট হবে। ভূমিকম্পে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওয়ার্ডের এমন অন্তত ৪৫০ জনের নাম তালিকায় নেই।” ভূমিকম্পে জখম কালী খাতি বলেন, “ভূমিকম্পের সময় ঘর থেকে বার হতে যাওয়ার সময় হুড়োহুড়িতে পরে গিয়ে হাত ভেঙে যায়। চিকিৎসা করাচ্ছি। জখমদের সরকারি সাহায্য, ঘরে ফাটল ধরলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় বলে শুনেছি। আমরা কিছু পেলাম না। কাউন্সিলরকে জানিয়েছিলাম। তালিকাতেই আমাদের নাম রাখা হয়নি।” সুশীল শর্মা, কেদার ভট্টাচার্যদের অভিযোগ, কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ লোকের নামই কেবল তালিকায় রাখা হয়েছে। |
|
|
|
|
|