|
খাই খাই নিশ্চয়ই, ঠিক ঠিক উপায়ে |
খাওয়া নিয়ে গণ্ডাখানেক কু-অভ্যেস তৈরি করে ফেলেছেন তো? এখন ঘাম ঝরালেও
ওজন আর ঝরছে না।
ফাঁদ কেটে বেরোবেন কী করে? সহজ উপায় কিন্তু মজুত হাতের কাছেই। জেনে নিন। |
আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু খারাপ অভ্যেস ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে। বিশেষ করে খাওয়ার ব্যাপারে। নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে দারুণ সচেতন, কোনটা খাওয়া উচিত, কোনটা নয়, তা নিয়ে প্রচণ্ড খুঁতখুঁতে মানুষও কিছু না কিছু কু-অভ্যেসের শিকার হবেনই। আর এই অভ্যেসগুলো এমনই নাছোড় যে, এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া বেশ ঝামেলার। কাহাঁতক আর নিজের মনকে লাগাম পরিয়ে পিছনে টানবেন? একটা না একটা সময় ঠিক ঘুরেফিরে সেই বিচ্ছিরি অভ্যেসগুলো ফিরে আসবে। কী উপায়? দেখে নেওয়া যাক। |
|
বিদায় কুকি, চিপস |
দুপুর আর রাতের খাওয়ার মাঝে এক বার বা দু’বার কিছু হালকা খাবার খাওয়া ভাল। কিন্তু যখনই আপনার পাতে নিয়মিত পড়তে থাকবে চিপ্স, নিমকি বা কুকি, দুর্ভোগ ঠেকায় কে! সমস্যা শুধু পৈটিক নয়, অস্বাস্থ্যকর চুল, খসখসে ব্রণ ভরা ত্বক, ওবেসিটি, কনস্টিপেশন, অম্বল, কোলেস্টেরল-এর মতো নানা সমস্যায় জেরবার হতে হবে। কুকি, চিপ্স, চকোলেটের মতো খুচরো খাবার বাড়িতে যথাসম্ভব কম রাখার চেষ্টা করে দেখুন তো! চোখের সামনে না দেখলে কিন্তু খাওয়ার ইচ্ছেটাও কমে। এর বদলে হাতের সামনে তাজা ফল, পপকর্ন রাখলে ক্ষতিটা তো এড়াতে পারবেন!
|
মুড খুশ করতে ফুড নয় |
‘ইমোশনাল ইটিং’ আসলে কী, জানেন? অনেক সময় আমাদের মনে হতাশা, অবসাদ, রাগ, উদ্বেগ, একঘেয়েমি আসে। এই বিচ্ছিরি মুড কাটাতে মুখ চালানোর অভ্যেসই ‘ইমোশনাল ইটিং’। কারণ অনেকেরই ধারণা, খেলে মনে বেশ একটা ফুরফুরে ভাব আসে, অন্তত কিছু সময়ের জন্য। কিন্তু মন ভাল করতে অধিকাংশ মানুষের হাতেই উঠে আসে উচ্চ ক্যালরি যুক্ত খাবার। স্বাস্থ্যের ভাবনা ওঠে শিকেয়। মনটাকে অন্য দিকে ঘোরাতে নিজের প্রিয় লেখকের একটা বই পড়ে দেখুন তো! হাঁটা, হালকা জগিং বা প্রাণায়ামও চনমনে ভাব ফিরিয়ে আনে। কিচ্ছু ভাল না লাগলে চোখ বুঝে ছোট্ট একটা ঘুমের চেষ্টা করুন।
|
হাঁউ হাঁউ নয়, খান আয়েশ করে |
প্রতি দিন স্কুল-কলেজ বা অফিস বেরনোর আগে কোনও রকমে নাকেমুখে গুঁজেই দৌড়। কিন্তু ভাল করে না চিবোলে হজমটা হবে কী করে, ভেবে দেখেছেন? আরও আছে, পেট ভরে গেলে আমাদের পাকস্থলী মগজকে সেটা জানিয়ে দেয়। খুব দ্রুত খেতে থাকলে কিন্তু উদরপূর্তির খবর মস্তিষ্কের কাছে ঠিক মতো পৌঁছতেই পারবে না। ফলে পরিমাণ না বুঝে একগাদা খেয়ে ফেলার সমূহ সম্ভাবনা। তার চেয়ে বরং আধ ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যেস করে দেখতে পারেন। এই বাড়তি আধ ঘণ্টা বরাদ্দ করুন খাওয়ার পিছনে। হাঁউ হাঁউ করে খাওয়া শেষ না করে বেশ আয়েশ করে সময় নিয়ে খেলে হজমও হবে, আবার খাওয়াটা বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগও করতে পারবেন।
|
প্রাতরাশ এড়ালে ওজন কমে না |
প্রাতরাশ না খেয়ে সরাসরি লাঞ্চ করে যাঁরা ক্যালরি বাঁচাতে চান, তাঁরা কিন্তু ঠিক ভাবছেন না। সকালে অনেক ক্ষণ খাবার না খেয়ে থাকলে রক্তচাপ হঠাৎ কমে যাতে পারে। সকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার যুক্ত সাদামাটা খাবার (যেমন দই, ফল, ওটমিল ইত্যাদি) আপনার মগজকে পরিষ্কার করবে, আর ওজন ঝরাতেও সাহায্য করবে। কারণ এতে সারা দিন আপনি সাধারণ খাওয়াদাওয়া করবেন। খিদেয় কাতর হয়ে উচ্চ ক্যালরি যুক্ত খাবারের দিকে ছিলে ছেঁড়া ধনুকের মতো ছুটবেন না। তাই সকালে উঠেই এক গ্লাস জল খান। আর তার এক থেকে দুই ঘণ্টা পর প্রাতরাশ।
|
ব্যাগে থাক খুচরো খাবার |
বেরনোর সময় ব্যাগে শুধু পার্স, রুমাল আর হালকা প্রসাধনী? আর কিছু নিলেন না? কিছু শুকনো খাবার অন্তত রেখে দিন। যেমন ফল, এক মুঠো বাদাম ইত্যাদি। কিছু সবজি কেটে অল্প তেলে ভেজে একটা মুখরোচক স্ন্যাক বানিয়েও নিয়ে যেতে পারেন। রাস্তায় দেরি হলে বা কাজে আটকে গেলে খিদের মুখে তখন তো ফাস্ট ফুডের খোঁজে দৌড়বেন। তার চেয়ে ব্যাগের খাবার দিয়েই না হয় কিছু ক্ষণ খিদেটাকে ধামাচাপা দিলেন।
|
খাবারের বদলে বিউটি ট্রিটমেন্ট |
জিমে গিয়ে অনেক ক্ষণ ঘাম ঝরিয়েছেন। এতে ভারী খুশি হয়ে বাড়ি ফেরার পথে এক ঠোঙা জিলিপি কিনে আনলেন। ওজন কী করে কমবে বলুন তো? এটা কিন্তু ভয়ানক সমস্যা। ভাবটা এমন অনেক খেটেছি, ক্যালরি ঝরিয়েছি। এ বার একটা দুর্দান্ত ডিজার্ট বা মশলাদার স্ন্যাক খেলেও কিস্যু হবে না। তা, নিজেকে একটু আশকারা দিতে চান, দিন না! ঠেকাচ্ছে কে! কিন্তু খাবারের দিকে না গিয়ে নিজেকে একটা সুন্দর ওয়ার্কআউট প্যান্ট বা জগিং শু উপহার দিলে কেমন হয়? বা সালোঁতে গিয়ে একটা বিউটি ট্রিটমেন্ট? ডিজার্ট-এর চেয়ে কম লোভনীয় হবে না কিন্তু।
|
খেতেও মনোযোগ প্রয়োজন |
সারা দিনে টিভি দেখতে বা বই পড়তে সময় পান না, তাই এ সবের জন্য বেছে নেন খাওয়ার সময়টাই। কিন্তু মন তো আপনার একটাই। সেটা টিভি দেখা বা বই পড়ার দিকে চলে গেলে খাওয়ার দিকে মনোযোগ থাকবে কী করে? কী খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, খেয়ালই তো থাকবে না। খাওয়ার সময় বরং টিভির সুইচ অফ করে দিন। একলা খেতে ভাল লাগছে না? পরিবারের অন্যদেরও ডেকে নিন! এক সঙ্গে গল্প করতে করতে খেয়ে নিতে পারবেন। |
|