রাজ্যের আবেদন খারিজ
পরীক্ষা দিতে পারবেন হলদিয়া মেডিক্যালের ছাত্ররা
লদিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত বি সি রায় মেডিক্যাল কলেজের ৭৭ জন ছাত্রছাত্রীর দুশ্চিম্তা অবশেষে কাটল। তাঁরা এমবিবিএসের ফার্স্ট সেমিস্টার পরীক্ষায় বসতে পারবেন। আগামী ২৬ জুন ওই পরীক্ষা হবে।
গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট ওই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার নির্দেশ দিলেও রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ওই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার কোনও ব্যবস্থা করেনি। উল্টে এ ব্যাপারে সংশোধনী চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। শুক্রবার মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি জগদীশ সিংহ খেরের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। বেঞ্চ রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। ওই বেঞ্চই গত মাসে বি সি রায় মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের এমবিবিএস ফার্স্ট সেমিস্টার পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছিল।
রাজ্য সরকার ওই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছিল কেন? রাজ্যের যুক্তি ছিল, ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া বেসরকারি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সরকারি কলেজের হয়ে পরীক্ষা দিতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টকে বিষয়টি জানিয়ে তারা আগের নির্দেশের সংশোধনী চেয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এ দিন রাজ্য সরকারের আর্জি খারিজ করে দেওয়ায় স্বাস্থ্য দফতর কিছুটা বিপাকে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি না কী করব। এ ব্যাপারে আমরা মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই)-র কাছে পরামর্শ চাইব।” স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আমরা মানতে বাধ্য। ওই ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেবেন। তাঁদের অ্যাডমিট কার্ডও দেওয়া হবে। কোন কলেজ থেকে তাঁরা পরীক্ষা দেবেন, তা পরে ঠিক করব আমরা।”
সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ ওই মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন সমিতির প্রধান। পরিকাঠামোর অভাবে ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিয়েছিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ও অনুমোদন তুলে নেয়। এর ফলে কয়েক লক্ষ টাকা ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা অগাধ জলে পড়েন। পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন তাঁরা। সেই মামলায় রায়ে কিছু দিন আগেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। অবিলম্বে ওই ছাত্রছাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করিয়ে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার জন্যও পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।
কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ও স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ কার্যকর করা নিয়ে তাদের কিছু সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসন-সংখ্যা নির্দিষ্ট। তার বেশি ছাত্র নেওয়া যাবে না। তার উপরে ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া পড়ুয়ারা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়তে পারে না। ওই নির্দেশের উপরে সংশোধনী চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনটি খারিজ করে দেয়। নতুন কোনও নির্দেশ অবশ্য এ দিন সর্বোচ্চ আদালত দেয়নি। তাদের আগের নির্দেশই এখন মানতে হবে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে।
রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন এ দিন খারিজ হয়ে গিয়েছে। হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তবে মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা যাবে না। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফল একটি সিল করা খামে রেখে দিতে হবে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে।”
রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ায় বি সি রায় মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা ২৬ জুনের সেই পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসাবে জোরকদমে পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছেন। কলেজের ছাত্র গড়িয়ার সুমিতাভ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানসিক চাপ ছিলই। সরকারের তরফে সহযোগিতা পাচ্ছিলাম না। এখন অনেক হালকা লাগছে। কলেজের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রেও সরকারের মানবিক হওয়া উচিত।” কলেজের প্রশাসনিক আধিকারিক শ্রীমন্ত বসু বলেন, “কলেজ অনুমোদনের জন্য এমসিআই-এর কাছে আবেদন করব। আমরা চাই কলেজের পরিকাঠামো দেখার জন্য এমসিআই প্রতিনিধি পাঠাক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.