তীব্র দহনের সঙ্গে সঙ্গে বর্ষার গড়িমসিতে বিপদের গন্ধ পাচ্ছে রাজ্য সরকার। ‘খরার মতো পরিস্থিতি’ দেখা দেওয়ায় আগাম ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। খরা ও বন্যার মতো দুর্যোগের মোকাবিলায় প্রতিটি জেলায় বিভিন্ন দফতরের টাস্ক ফোর্সকে ১৫ দিন অন্তর কলকাতায় তাদের সদর দফতরে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন বিপর্যয় মোকাবিলা টাস্ক ফোর্স সেই সব রিপোর্ট পর্যালোচনা করবে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও মাসিক বৈঠকে সেগুলি খতিয়ে দেখবেন। শুক্রবার মহাকরণে বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে ডাকা জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, রাজ্য জুড়ে তীব্র দহনে খরার মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এই বিপদের মোকাবিলায় এ দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পঞ্চায়েত, সেচ, কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের বেশ কয়েক জন মন্ত্রী এবং সচিবদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি প্রতিটি দফতরকে যে-কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় আগাম ‘প্রস্তুত’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলায় জেলায় পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য, ওষুধ, তেল, জামাকাপড় মজুত রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। গ্রামাঞ্চল ও জেলা শহরগুলিতে পানীয় জলের অভাব মেটাতে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সুব্রতবাবু। জলের গাড়ি পাঠানো হচ্ছে, পাউচ বিলির ব্যবস্থা হয়েছে। ১৮টি জেলায় অগভীর নলকূপ বসানোর জন্য সাত কোটি চার লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে জেলা পরিষদগুলির কাছে।
জেলায় জেলায় অসংখ্য পুকুর, খাল-বিল, কুয়ো শুকিয়ে গিয়েছে বলে সরকারের কাছে খবর এসেছে। ফলে বহু অঞ্চলে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানান, জলের অভাব মেটাতে আরও হাজার কুড়ি পুকুর খুঁড়তে হবে। প্রয়োজনে রাজ্যের বাঁধ ও জলাধার থেকে জল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। |