সরকারি বিধিভঙ্গের অভিযোগ
কাকে বলে মুখ খুললেন, চিঠি দুই কলেজ শিক্ষককে
চ্চশিক্ষা দফতরের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল সরকারি কলেজের দুই শিক্ষককে সংবাদমাধ্যমে মত প্রকাশের জন্য। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাঁরা সংবাদমাধ্যমে গিয়েছেন কি না, চিঠি দিয়ে দফতরকে সে কথা জানাতে হবে তাঁদের।
টিভি চ্যানেলগুলিতে যে সব আলোচনাসভা হয়, তাতে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই মতামত দেন। তেমনই কয়েকটি আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের অথর্নীতির শিক্ষক দেবাশিস সরকার এবং হুগলি মহসিন কলেজের বাংলার শিক্ষিকা শম্পা সেন। দু’টিই সরকারি কলেজ। সেখানে রাজ্য সরকারই শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শুক্রবার বলেন, “সরকারি আমলারা যদি সংবাদমাধ্যমে মত জানাতে চান, তা হলে তাঁকে যেমন সরকারের অনুমতি নিতে হবে, তেমনই সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনুমতি নিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে। ওই দু’জন অনুমতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে গিয়েছেন কি না, তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করে কলেজের পরিচালন সমিতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই সেখানকার কোনও শিক্ষক সংবাদমাধ্যমে মত জানালে সরকারের কিছু বলার নেই। কিন্তু সরকারি কলেজের শিক্ষক পদটি ‘ক্যাডার পোস্ট’। তাই চাকরির নিয়মেই তাঁদের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।
ব্রাত্যবাবু জানান, সুব্রত পাণ্ডা নামে সরকারি কলেজেরই এক প্রাক্তন শিক্ষক দু’টি চিঠি পাঠিয়ে ওই দুই শিক্ষক-শিক্ষিকার নামে অভিযোগ এনেছেন। তাঁর বক্তব্য, সরকারি কর্মী হয়েও ওই শিক্ষক-শিক্ষিকা কী করে সংবাদমাধ্যমে বসে সরকার-বিরোধী কথা বলেন?
উদ্দিষ্ট শিক্ষক দেবাশিসবাবু জানান, শিক্ষা অধিকর্তার কাছ থেকে যে চিঠি তিনি পেয়েছেন, তার সঙ্গে সুব্রতবাবুর চিঠিটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সুব্রতবাবুর চিঠিতে বলা রয়েছে, দেবাশিসবাবু সরকারি কলেজের শিক্ষক, অর্থাৎ সরকারি কর্মচারী। অথচ দেখা যাচ্ছে, তিনি টিভি চ্যানেলে বসে সরকার-বিরোধী নানা রকম কথা বলছেন। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এই সব অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাঁর আর্থিক লাভ হচ্ছে কি না এবং কাজের জায়গায় তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন কি না, তা-ও জানতে চেয়েছেন সরকারি কলেজের ওই প্রাক্তন শিক্ষক। দেবাশিসবাবু অবশ্য এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাননি। তিনি বলেন, “আমার যা বক্তব্য, নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে তা উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানাব।”
শম্পাদেবী অবশ্য জানান, টিভি চ্যানেলের আলোচনাচক্রে তিনি সরকার বিরোধী কোনও কথা বলেননি। অথচ সুব্রতবাবু তাঁর বিরুদ্ধে সরকার-বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ এনেছেন এবং উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে সেই ব্যাপারেই জবাব চাওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষিকার দাবি, কলেজের নির্দিষ্ট কাজের বাইরে তিনি যে অন্য ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন, অনেক আগেই তা শিক্ষা-অধিকর্তাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন এবং এই ক্ষেত্রে সেটাই দস্তুর।
শম্পাদেবী জানান, কেবল যে তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাই নয়। পাশাপাশি তাঁর কলেজের অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, শম্পাদেবীর নামে কতগুলি ক্লাস ধার্য রয়েছে, তিনি কতগুলি নিয়েছেন, কত দিন ছুটি নিয়েছেন ইত্যাদি। ওই শিক্ষিকা বলেন, “নাগরিক হিসাবে কিছু মতামত প্রকাশ করেছি মাত্র। তার জন্য সরকার বিরোধিতার মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ আনা হয়েছে। খুবই ভয়ের মধ্যে রয়েছি।” কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য অন্য রকম। তিনি বলেন, “কারও মত প্রকাশের ব্যাপারে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু অনুমতি ছাড়া সরকারি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোথাও নিজেদের মতামত জানাতে পারেন না। সরকারের পক্ষে বললেন বা বিপক্ষে, সেটা বিচার্য নয়। ”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.