সরকারের বয়স এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবু কেন বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। সেটা আঁচ করেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র শুক্রবার কয়েকটি কর্মী সংগঠনকে ডেকে জানিয়ে দিলেন, সরকার এখনই ডিএ দিতে পারছে না।
সরকারি কর্মীদের সব চেয়ে বড় সংগঠন রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি অর্থমন্ত্রীর এ দিনের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে ডাক  পায়নি। যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা সরকারের দুই শরিক তৃণমূল ও কংগ্রেস প্রভাবিত ইউনিয়নের নেতা। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে তৃণমূল ইউনিয়নের নেতারা বলেছেন, “প্রত্যাশা থাকলেও এই সরকারকে আরও সময় দেওয়া উচিত।” কিন্তু কংগ্রেস প্রভাবিত ইউনিয়ন বকেয়া ডিএ-র দাবিতে ‘বৃহত্তর আন্দোলন’-এ নামবে বলে জানান তাদের নেতারা। অর্থমন্ত্রী এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছু জানাননি। ক্ষমতায় আসার পরে এক কিস্তি (১০%) ডিএ দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু তার পরেও ২০% ডিএ বাকি পড়ে গিয়েছে। তার উপরে জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আরও এক কিস্তি ডিএ ঘোষণা করার কথা। তখন রাজ্য কর্মীদের বকেয়া বেড়ে হবে ২৭%। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে কর্মীদের মধ্যে। কিন্তু রাজ্যের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির জন্য এখনই যে কর্মীদের বকেয়া ডিএ মেটানো সম্ভব নয়, বিভিন্ন সময়ে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। শুক্রবার ফের সেই কথাটাই বৈঠক ডেকে কর্মী ইউনিয়নগুলিকে জানিয়ে দিলেন তিনি।
সরকারি কর্মীদের তৃণমূল-সমর্থিত তিনটি সংগঠন স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন ইউনিফায়েড, ইউনাইটেড স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন এবং স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন প্রতিনিধিরা এ দিনের বৈঠকে ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন কংগ্রেসের সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের প্রতিনিধিরাও। অর্থমন্ত্রী বৈঠকে ইউনিয়নের নেতাদের বলেন, “রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কথা আপনারা জানেন। পরিস্থিতি অনুকূল হলে সরকার নিশ্চয়ই বকেয়া ডিএ দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবে।” অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার বিষয়টিও বিবেচনার আশ্বাস দেন তিনি।
পরে তৃণমূল ইউনিয়নের নেতারা বলেন, “এই প্রথম কোনও অর্থমন্ত্রী কর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থার কথা বিস্তারিত ভাবে জানালেন। তিনি কর্মীদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে শুনেছেন।” কংগ্রেস প্রভাবিত ইউনিয়নের নেতারা বলেন, “তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, কর্মীদের দাবি সঙ্গত হলে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সরকার সঙ্গত দাবি মানার পথে হাঁটল না।” কর্মী-নেতাদের বক্তব্য, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে যে-বেতন বৃদ্ধি হয়েছে, তার একটি অংশ এখনও বকেয়া। সেই অর্থও এখন দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। |
