একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বকেয়ার দাবিতে এক নির্মাণ সহায়ককে বেধড়ক মারধর করে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আটকে রাখার অভিযোগ উঠল পাথরপ্রতিমার হেড়ম্বগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কাশীনগর এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দার বিরুদ্ধে। ওই মারধরে স্থানীয় তিন তৃণমূল কর্মী নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ। যদিও সজল বিশ্বাস নামে আহত নির্মাণ সহায়ক শুক্রবার রাত পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। পুলিশই ঘটনার রাতে তাঁকে উদ্ধার করে পাথরপ্রতিমা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। ওই এলাকার তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
পাথরপ্রতিমার বিডিও অচিন্ত্য হাজরা বলেন, “মারধরের ঘটনা শুনেছি। বিস্তারিত মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে।” কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অমিত নাথ বলেন, “ওই বিষয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে ব্লক প্রশাসনকে। অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কাশীনগর গ্রামে সজলবাবুর উপস্থিতিতে নদীবাঁধ মেরামতির জন্য ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মাটি কাটা এবং মাপজোকের কাজ হচ্ছিল। সেই সময়েই কয়েক জন গিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন।
সজলবাবু বলেন, “শ্রমিকদের নিয়ে এসে তিন বছরের আগের পাওনার দাবি জানায় জনা তিনেক তৃণমূল কর্মী। হুমকিও দেয়। ওদের পছন্দমতো কাজ করার কথা বলে। আমি রাজি না হওয়ায় অত্যাচারের শিকার হলাম। রাতে ওরা আমাকে পঞ্চায়েত অফিসে আটকে রাখে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। সুস্থ হলে বিস্তারিত প্রশাসনকে জানাব।”
মূল যে তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর দাবি, “অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি কোনও ভাবে ওই ঘটনায় জড়িত নই। ২০০৯ থেকে ২০১২ এই ক’বছরে শ্রমিকেরা বাঁধের কাজ করেও টাকা পাননি বলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন।” তবে, পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের শেখ রজ্জাক মেনে নিয়েছেন দলীয় কর্মীরাই সজলবাবুকে মারধরের ঘটনায় জড়িত। তিনি বলেন, “আমাদের দলীয় কর্মীরা কেন গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়লেন তা দেখা হচ্ছে। এক সরকারি কর্মীকে মারধর করা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে দলীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের আয়লার পরে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু নদীবাঁধের কাজ হয় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে। কিন্তু শ্রমিকদের নামের তালিকা এখনও ঠিকমতো তৈরি করা যায়নি। সেই কারণে ওই কাজ বাবদ প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে শ্রমিকদের। পঞ্চায়েত প্রধান বনমালী ঘড়ুইয়ের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। বিডিও-র আশ্বাস, “প্রাপকদের তালিকা তৈরি হলে সকলকেই তাঁদের বকেয়া দিয়ে দেওয়া হবে।” |