নাকছাবি আর কানের দুল মিলিয়ে গয়নার ওজন সাকুল্যে দেড় আনা। সামান্য ওই সোনার গয়নার জন্য মরতে হল সাত বছরের এক শিশুকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জিয়াগঞ্জের মুকুন্দবাগ গ্রাম লাগোয়া রেললাইনের ধার থেকে এরিনা খাতুন নামে ওই বালিকার ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা। প্রথম শ্রেণির ছাত্রী এরিনাকে খুন করল কে? তার পরিবারের অভিযোগের আঙুল উঠেছে পড়শি অন্য এক কিশোরীর দিকে। দশম শ্রেণির সেই ছাত্রীকে এ দিন রাতে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। নাবালিকা হওয়ায় পরে অবশ্য তাকে জুভেনাইল বোর্ডের হাতে তুলে দেবে পুলিশ। এমনই জানিয়েছেন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর। |
মুকুন্দবাগ গ্রাম পঞ্চয়েতের প্রধান সাইফুল আলম জানান, পুলিশি জেরায় ওই কিশোরী এরিনার কান থেকে ছিনিয়ে নেওয়া দুল ও নাকছাবিও বের করে দেয় তার ঘর থেকে। হুমায়ুন বলেন, “জেরায় ওই মেয়েটি এরিনাকে খুনের কথা কবুল করেছে।” এরিনার বাড়ির লোকের দাবি, খুনের পরে দেহটি চলন্ত ট্রেনের তলায় ফেলে দেয় ওই কিশোরী। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা এরপরে ওই কিশোরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালান। এরিনারা দুই বোন এক ভাই। এরিনাই ছোট। তার বাবা বাদল শেখ সপ্তাহ খানেক আগে ওড়িশায় রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছেন। বাড়ির এক প্রান্তে তার খুড়তুতো বৌদি সারা বিবির বাড়ি। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ বাড়ির পিছনে পাটখেতে শাক তোলার নাম করে এরিনাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল ওই মেয়েটি। তারপর আর ওদের দেখিনি। এরিনাও ঈর বাড়ি ফেরেনি।” গ্রামের বিনয় মুরারি বলেন, “সন্ধ্যায় তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস চলে যায়। সেই সময়ে এক কিশোরীকে কিছু একটা টেনে হিঁচড়ে ছুঁড়ে ফেলতে দেখা যায়। তারপরেই মেয়েটি পাশের পাট খেতে ঢুকে পড়ে।” খবরটা পেয়েই লাইনের পাশে ছুটে গিয়েছিলেন এরিনার বাড়ির লোক। ছিন্ন ভিন্ন মেয়েটাকে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরাই। স্বাভাবিক ভাবেই গ্রামের লোকের সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওই কিশোরীর দিকে। তাকে বাড়ি থেকে বের করে মারধর করতেই সে কবুল করে এরিনাকে সেই গলা টিপে খুন করেছে। তারপর ছুঁনে দিয়েছে লাইনে। সেই সঙ্গে ওই সামান্য দুল ও নাকছাবির লোভেই যে ওই খুন তাও স্বীকার করে নেয় সে। রাতেই গ্রামে যায় পুলিশ। তাকে তুলে আনা হয় থানায়। ওই কিশোরীর দাদা মুকুন্দবাগ হাইস্কুলের শিক্ষক। তিনি বলেন, “এর আগেও বেশ কয়েক বার ও বিরুদ্ধে মোবাইল চুরি, দোকান থেকে সব্জি চুরির অভিযোগ উঠেছিলাম। এ সব কুকর্ম না করে লেখাপড়া নিয়ে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু কথা শুনল না!” |