স্বামী ও ‘সতীন’কে গাছের সঙ্গে বেঁধে গায়ে-মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মিঞাপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর স্বামী কৃষ্ণ ননিয়া ও কৃষ্ণবাবুর ‘দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী’ রিতা ননিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ শঙ্করলাল সাহা বলেন, “দু’জনেরই অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের দ্রুত কলকাতায় বিশেষজ্ঞদের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণবাবুর বাড়ি সুতির নয়াবাহাদুর গ্রামে। পেশায় রাজমিস্ত্রি। বছর সাতেক আগে তাঁর বিয়ে হয় মিঞাপুরের ওই মহিলার সঙ্গে। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। তবে বছর দু’য়েক আগে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। কৃষ্ণবাবুর বিরুদ্ধে তিনি বধূ নির্যাতনের মামলা করেন। তার পরে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও হয়েছে। দু’টি মামলাই এখনও বিচারাধীন। এর মধ্যেই বর্ধমানের অন্ডালের বাসিন্দা রিতাদেবীকে ‘বিয়ে’ করেন কৃষ্ণবাবু। |
কৃষ্ণবাবুর মা কনকলতাদেবী বলেন, “রিতাকে একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেছে আমার ছেলে। তাকে আমি পুত্রবধূর মর্যাদা দিয়েছি।” কৃষ্ণবাবু বলেন, “ওই দিন দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী রিতাকে নিয়ে মোটরবাইকে করে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলাম। তখনই আমার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ভাই কয়েক জন যুবককে সঙ্গে নিয়ে আমাদের তাদের বাড়ি ধরে নিয়ে যায়। তারপরে গাছে বেঁধে মারধর করে গায়ে মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেয়।” তাঁর কথায়, “এরপরে ওই অবস্থাতেই কোনও মতে স্থানীয় এক ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে রিকশা করে রঘুনাথগঞ্জ থানায় যাই।”
ধৃত মহিলা অবশ্য তাঁর স্বামীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার ও সন্তানদের ভরনপোষণের দায়িত্ব নিচ্ছে না বলে বাবা স্বামীকে চড় থাপ্পড় মেরেছিল। কিন্তু আর কিছুই করা হয়নি।” রিতাদেবী অবশ্য দাবি করেন, “আমাদের বেঁধে জোর করে গায়ে-মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়েছে।”
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, “স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার আগে কৃষ্ণবাবু অন্য কোনও মহিলাকে আইনত বিয়ে করতে পারেন না। তবে কৃষ্ণবাবুর অভিযোগ মতো তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কৃষ্ণবাবুর শ্বশুর ও শ্যালকের নামেও অভিযোগ হয়েছে। তবে তারা পলাতক।” |