|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা খেলা |
স্বপ্নের ফুটবল |
চন্দন রুদ্র |
কেউ এসেছিল কোন্নগর থেকে। কেউ আসানসোল থেকে। কেউ গড়িয়া থেকে। অনেকেরই নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা। তবুও স্বপ্ন রয়েছে বড় ফুটবল খেলোয়াড় হওয়ার। সম্প্রতি বেহালায় এমনই এক ঝাঁক খুদেদের নিয়ে হয়ে গেল সারা বাংলা অনূর্ধ্ব ১৪ ‘বিবেকানন্দ চ্যালেঞ্জ ট্রফি’। হাড্ডাহাড্ডি ফাইনালে কোনও ফল না হাওয়ায় টস হয়। টসে দুখীরাম মজুমদার ফুটবল কোচিং স্কিমকে হারিয়ে দেয় কুমারটুলি শীতলা সমিতির খুদেরা।
|
|
বিবেকানন্দ স্পোর্টস অ্যাকাডেমি ও বেহালা এয়ারপোর্ট রোড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-এর উদ্যোগে ১৬ দলের এই নকআউট ফুটবল ফাইনালের ১৫ সেকেন্ডের মাথায় দুরন্ত গোল করে দলকে এগিয়ে দেয় দুখীরামের অধিনায়ক মুস্তাক মোল্লা।
এর পরেই আক্রমণের ধার বাড়ায় কুমারটুলি। ফলও মেলে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কুমারটুলির অধিনায়ক শ্যাম দাস পেনাল্টি থেকে গোল করে খেলায় সমতা ফেরায়। দ্বিতীয়ার্ধে ঝড়-বৃষ্টির জন্য মাঝপথে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে টাইব্রেকারে দু’টি দলই চারটি করে গোল করে। অবশেষে টসে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় কুমারটুলি।
অধিনায়ক শ্যামের কথায়: “ওদের হারাতে পেরে ভাল লাগছে।” বাবা গাড়ি ধুয়ে সংসার চালান। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ভক্ত ভবানীপুরের এই ছেলেটির লক্ষ্য ভাল ফুটবলার হওয়া। কুমারটুলির কোচ আসগর আলির কথায়: “গরিব ঘরের ছেলেদের নিয়ে দল। অনেক অসুবিধার মধ্যে চলতে হয়।”
বিজয়ী দলের রাজেন মল্লিক পেল সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার। ওই দলের শুভঙ্কর বিশ্বাস পেল সেরা ফুটবলারের পুরস্কার। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কোন্নগর থেকে কলকাতায় অনুশীলন করতে আসে শুভঙ্কর।
|
|
বেহালা এয়ারপোর্ট রোড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের মাঠে ফাইনাল দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন এলাকার বহু মানুষ। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শুভেন্দু মণ্ডল বললেন, “ক্লাবে ছোটদের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে। এই প্রতিযোগিতা ওদের উৎসাহী করবে।” ক্লাবের সদস্য প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ী বললেন, “আমরা চাই, এই প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে একেবারে পিছিয়ে পড়া ঘরের ফুটবলাররা প্রচারে আসবে।”
বিবেকানন্দ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির সভাপতি ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় মাইতি বললেন, “এই প্রতিযোগিতা থেকে নজরকাড়া ফুটবলারদের বেছে নিয়ে ভবিষ্যতে একটি দীর্ঘমেয়াদি কোচিং ক্যাম্প চালু করার পরিকল্পনা করেছি।” ফাইনালে উপস্থিত ছিলেন অলিম্পিয়ান নিখিল নন্দী, গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারের স্বামী চিদরূপানন্দ প্রমুখ। ছিল বাজির প্রদর্শনী ও মীর কামালউদ্দিনের জাগলিংও। |
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|