পূর্ব কলকাতা
অস্থায়ী মেরামত
বেহাল গ্রন্থাগার
চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু জমি না মেলায় সম্প্রসারণ কিংবা নতুন ভবন তৈরি করা যাচ্ছে না। ফলে ভগ্নপ্রায় বিডি মার্কেটের মধ্যে কোনওমতে চলছে বিধাননগর টাউন লাইব্রেরি। অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই ছাদ থেকে চাঙর খসে পড়ছে। সব মিলিয়ে বেহাল দশা এই গ্রন্থাগারের। এমনই মত পাঠক এবং গ্রন্থাগারের কর্মীদের।
বিডি মার্কেটের দোতলায় একটি ঘরে চলে বিধাননগর টাউন লাইব্রেরি। নিয়মিত পাঠক ৪১৭ জন। সদস্য সংখ্যা ১৭০০। গ্রন্থাগারে রয়েছেন তিন জন কর্মী। কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে গ্রন্থাগারের অবস্থা খারাপ বলে মত পাঠকদের একাংশের। আট-ন’মাস বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। জেনারেটর চালিয়ে কোনও মতে চলছে পাঠক পরিষেবার কাজ। উপরন্তু ভবনের হালও বেহাল।
এই গ্রন্থাগারের এক পাঠক বিধাননগরের বিসি ব্লকের বাসিন্দা শঙ্করলাল চৌধুরি বলেন, “ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কিছু জায়গায় ছাদের লোহা দেখা যাচ্ছিল। কিছু দিন আগে ছাদ থেকে চাঙর খসে পড়ছে। বর্ষায় কী ভাবে গ্রন্থাগারটি চলবে তা নিয়ে সংশয় আছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। জেনারেটর দিয়ে কাজ চলে। শুনছি, নিজস্ব খরচে অস্থায়ী ভাবে মেরামতির কাজ হবে।”
সহ-গ্রন্থাগারিক নন্দা ভৌমিক বলেন, “মেরামতি নিয়ে জেলাস্তরে গ্রন্থাগার বিভাগের আধিকারিকদের পাশাপাশি বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আপাতত তাঁদের অনুমতি নিয়ে গ্রন্থাগার বিভাগের খরচে মেরামতির কাজ হবে।”দীর্ঘ দিন ধরে এই অবস্থা চললেও কেন এখনও মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হল না? মন্তব্য করতে রাজি হননি গ্রন্থাগারিক।
পাঠকদের একাংশের অভিযোগ, গত বর্ষার পর থেকে এই গ্রন্থাগারের বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে কাজ চলে। দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত গ্রন্থাগার খোলা থাকে। বিডি মার্কেট বিধাননগর পুরসভার অধীন। দোতলা এই বাজারটির ভবনের হাল বেহাল। ফলে গ্রন্থাগারটিও একই দশা। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই গ্রন্থাগারের মেরামত করতে হলে বিধাননগর পুরসভা করবে অথবা তাঁরা প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেবে। এত দিন এই অনুমতি না মেলায় মেরামতির কাজ হয়নি।
এই গ্রন্থাগারের অ্যাডমিনিষ্ট্রেটর প্রদীপ নিয়োগী বলেন, “বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি পাওয়া যায়নি। গ্রন্থাগার বিভাগের উচ্চস্তরের আধিকারিকদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তাঁরা পুরসভা ও মহকুমাশাসককে জানিয়েছেন। পুরসভার তরফে জানতে পেরেছি যে, মার্কেটের সংস্কার করা হবে। তত দিন বিকল্প ব্যবস্থা হবে। তাই আপাতত আমাদের নিজেদের খরচে মেরামতির মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন পুরকর্তৃপক্ষ।” তিনি আরও বলেন, “জমি পেলে গ্রন্থাগারের সম্প্রসারণ করা যায়। চাহিদাও বেড়েছে। প্রশাসনের কাছে ফের আবেদন করব।”
এই বিষয়ে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পূর্ত) অনুপম দত্ত বলেন, “বিডি মার্কেটে এই সময় কোনও মেরামতির কাজ করা হবে না। কারণ, কিছু দিন পরেই মার্কেট সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে। তা নিয়ে সার্বিক একটি পরিকল্পনা আছে। এখন কেউ যদি নিজেদের খরচে অস্থায়ী ভাবে মেরামত করেন, তাহলে আপত্তি নেই।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.