ফাইনালে রাফা বনাম নোভাক
এই ফেডেরার আর কী করে গ্র্যান্ডস্লাম জিতবে
ছরখানেক আগে আনন্দবাজারের পাতাতেই লিখেছিলাম, ফেডেরার আর গ্র্যান্ডস্লাম জিতবে না। তখন অনেকেই বলেছিলেন, এটা কী লিখলেন? এত তাড়াতাড়ি চ্যাম্পিয়নকে ছুড়ে ফেলতে নেই। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম, ফেডেরারের শরীর আর দিচ্ছে না। ফিটনেসের তুঙ্গে থাকা নাদাল বা জকোভিচের সঙ্গে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ছে। রোলাঁ গারোর সেমিফাইনালে জকোভিচের কাছে হার দেখে কষ্টই হচ্ছে যে আমার ভবিষ্যদ্বাণীটা মিলে যাচ্ছে।
একটা কথা স্পষ্ট বলে ফেলা যাক। আর রজার বনাম রাফা নয়। এ বার থেকে ‘টেনিস রাইভ্যালরি’ বলতে রাফা বনাম জোকার বোঝাবে। এ বারে ফরাসি ওপেন এটা ফের স্পষ্ট করে দিয়ে গেল।
সেমিফাইনালে জকোভিচের সামনে যে ফেডেরারকে দেখলাম, সেই ফেডেরার অতীতের ছায়া মাত্র। বোঝা যাচ্ছিল বয়স তিরিশ পেরিয়েছে। নয়তো প্রথম সেটে ডাবল ব্রেক পেয়ে ৩-০ এগিয়ে থেকে ফেডেরার সেই সেট হারাচ্ছে, এ কখনও হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না। প্রথম সেটটা হারার পরে দ্বিতীয় সেটেও জকোভিচকে ভেঙে ৪-২ এগিয়ে গিয়েছিল ফেডেরার। তার পরই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বেশ কিছু ‘আনফোর্সড এরর’। এটা যখন হয়, বুঝতে হবে চ্যাম্পিয়ন্স নার্ভ আর কাজ করছে না। স্নায়ুর চাপ একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জোর দিয়েই বলা যায়, এই ফেডেরারের পক্ষে ক্লে কোর্ট বা হার্ড কোর্টে আর নাদাল বা জকোভিচের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কঠিন। পাঁচ সেটের লড়াই হলেও আরও কঠিন। তবে হ্যাঁ, ঘাসের কোর্টে হয়তো এখনও সম্ভব। সামনে উইম্বলডন আসছে, সেখানে হয়তো সম্ভব। কিন্তু তবু আমি বলব, ফেডেরার আর গ্র্যান্ড স্লাম জিতবে বলে মনে হয় না। যদিও ও যদি আমাকে ভুল প্রমাণ করে, খুশিই হব। এখন ওর লক্ষ্য হওয়া উচিত লন্ডন অলিম্পিক। সেখানে একটা সোনা পাওয়ার লক্ষ্য নিশ্চয়ই থাকবে। তা হলে কেরিয়ার স্বয়ংসম্পূর্ণ। স্বচ্ছ্বন্দে র‌্যাকেট তুলে রাখতে পারে ও।
হেরে রোলাঁ গারোকে বিদায় ফেডেরারের। ছবি: এএফপি।
মোদ্দা কথা হল, অবসরের সঠিক সময়টা বেছে নেওয়া। এই সমস্যাটা বহু চ্যাম্পিয়ন ক্রীড়াবিদের হয়। চারপাশে আরও অনেকেরই হচ্ছে। ফেডেরারও সেই তালিকায় পড়ে। নিজের সেরাটা দিতে পারছে না বয়সের জন্য, ফিটনেসে ঘাটতির জন্য। তবু খেলে যাচ্ছে। ফেডেরার অবশ্য এখনও বিশ্বের তিন নম্বর। কিন্তু প্রশ্ন হল, যে সর্বকালের সেরা সে তিন নম্বর হয়ে খুশি থাকবে কেন? আধুনিক টেনিস যে জায়গায় যাচ্ছে তাতে নাদাল বা জকোভিচের সঙ্গে লড়াটা বেশ কঠিন। শুক্রবার দেখছিলাম কোর্টে বেশ হাওয়া দিচ্ছে। যার জন্য হয়তো ফেডেরারের কিছু শট ঠিকঠাক পড়েনি। তবে সেটা শেষ বিচারে গুরুত্বপূর্ণ নয়। ফল যে ৬-৪, ৭-৫, ৬-৩ হয়েছে তা ঠিকই আছে।
ফাইনালের কথায় আসি। আমার বাজি কিন্তু নাদাল। মনে হচ্ছে বর্গের রেকর্ডটা রবিবারই ভেঙে দেবে ছেলেটা। এ বছর অকল্পনীয় টেনিস খেলছে। ফিটনেস আরও ভাল হয়েছে। শটে নিয়ন্ত্রণও দুর্দান্ত। আর যত বেশি সময়ের ম্যাচ হবে, তত ‘বিগ বুল’ হয়ে উঠবে নাদাল। ওই অবিশ্বাস্য ফিটনেসের সঙ্গে লড়তে হবে জকোভিচকে। বিশ্বের এক নম্বর বনাম নাদালের লড়াই ক্লে কোর্টে নিশ্চয়ই আর একটা ক্ল্যাসিকের জন্ম দেবে। ওই যে বলেছি না, রাইভ্যালরি বলতে এখন রাফা ভার্সাস জোকার।

বর্গের রেকর্ড ভাঙা থেকে এক পা দূরে নাদাল
ইতিহাস মুঠোয় ভরার অপেক্ষায় নাদাল। ছবি: এএফপি।
আগামী রবিবার ইতিহাস সৃষ্টি থেকে এক পা দূরে থাকবেন রাফায়েল নাদাল। জিতলেই নাদালের পকেটে থাকবে সাত-সাতটা ফরাসি ওপেন খেতাব যা বিশ্বে আর কারও নেই। শুক্রবার সেমিফাইনালে স্বদেশীয় ডেভিড ফেরারের বিরুদ্ধে যথারীতি অপ্রতিরোধ্য দেখিয়েছে নাদালকে। একপেশে ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ৬-২, ৬-২, ৬-১ উড়িয়ে দেন নাদাল। ফেরারকে দেখে কখনওই মনে হয়নি জিততে পারেন। ম্যাচ শেষে নাদাল বলেছেন, “রোলাঁ গারোয় সম্ভবত এ বছরের সেরা ম্যাচটা খেলে ফেললাম। ডেভিডের জন্য খারাপ লাগছে। ও আমার খুব ভাল বন্ধু।” সঙ্গে যোগ করেছেন, “রোঁলা গারোয় আরও একটা ফাইনাল খেলব ভেবে দারুণ লাগছে।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.