জমি নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ বনপুরায়
ডেবরার পর মেদিনীপুর সদর ব্লকের বনপুরা। আবারও গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়াল রাজ্যের শাসকদল। চলল বোমাবাজি। বোমা ফেটে জখম হলেন জেলা যুব-তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শেখ আলি আকবর। আহত আরও ৪ জন। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে আলি আকবরকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বোমা ফেটে এক জনআহত হয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”
বনপুরায় ভাঙচুর হওয়া গাড়ি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি বর্গা জমিকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর অশান্তি চলছে বনপুরায়। শুক্রবার সকালে ওই জমি পরিদর্শনে আসেন রেভিনিউ ইন্সপেক্টর (আর আই)। তখনই গোলমাল বাধে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। বোমাবাজি শুরু হয়। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, গুলিও চলেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চলার প্রমাণ মেলেনি। অভিযোগ, গোলমাল চলাকালীন আলি আকবরকে লক্ষ করে দলেরই অন্য গোষ্ঠীর লোকজন বোমা ছোড়ে। তিনি তখন চা দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর হাত ও পা বোমার স্প্লিন্টারের ঘায়ে জখম হয়েছে। আহত আকবরের কাকা শেখ ইয়ার মহম্মদের অভিযোগ, “তৃণমূলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর মদতেই আগে যারা সিপিএম-সিপিআইয়ের সঙ্গে ছিল, তারা এখন গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ দিন সকালে ওরাই হামলা চালায়।”বনপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ হোসেন আলি মল্লিক সিপিআইয়ের প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন অবশ্য দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই। বছর দেড়েক আগে ‘দলবিরোধী কাজে’র অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করে সিপিআই। এর পরই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়ে। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা বলেন, “বনপুরার প্রধানকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রধান গোপনে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলছিলেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করা হয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, “বনপুরায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলেই জেনেছি।” একই বক্তব্য সিপিএমের মেদিনীপুর (পূর্ব) গ্রামীন জোনাল কমিটির সম্পাদক নিরঞ্জন মাইতির। তিনি বলেন,“ ওখানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই গোলমাল হয়েছে বলে শুনেছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় অবশ্য বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই গোলমাল হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
মেডিক্যালে যুব-তৃণমূল নেতা আলি আকবর।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোলানাথ আঢ্য নামে এক ব্যক্তির বনপুরায় কিছু জমি রয়েছে। দু’ভাগে এই জমি রয়েছে। এক ভাগে ৪৫ ডেসিমেল। এটি শেখ মুরশেদ নামে এক জনের নামে বর্গা করা। অন্য ভাগে ২৩ ডেসিমেল জমি শেখ মুসলেমের নামে বর্গা করা রয়েছে। এঁরা দু’জনেই তৃণমূল সমর্থক। রাজ্যে পালাবদলের পর জোর করে ওই দু’ভাগের জমিই চাষ করছিলেন শেখ আসাদুল হক নামে এক তৃণমূল কর্মী। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। এই জমি নিয়ে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ রেভিনিউ ইন্সপেক্টরের জমি পরিদর্শন গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। শুরু হয় বোমাবাজি। বৃহস্পতিবার ডেবরার খাজুরি গ্রামেও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বেধেছিল। নতুনে করে অশান্তি না ছড়ালেও খাজুরি এ দিনও ছিল থমথমে। এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বনপুরাতেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গোলমালে জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

ছবি: রামপ্রসাদ সাউ ও সৌমেশ্বর মণ্ডল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.