সীমান্তের এ পারে দাঁড়িয়ে চোরাশিকারিদের হাতে গুলিবিদ্ধ, রক্তাক্ত হাতিটিকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগোতে দেখছেন ওঁরা। কিন্তু কাছে গিয়ে শুশ্রূষা করতে পারছেন না। কারণ ওঁদের কাছে যে বৈধ ভিসা নেই!
শুক্রবার সকালে মেঘালয়-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বনকর্মী ও পশুপ্রেমীদের মধ্যে। হাতি মৃত্যুতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী ও বন বিভাগের অবহেলা ও গাফিলতির প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের বনবিভাগ। প্রধান মুখ্য বনপাল ভি কে নটিয়াল এখন দিল্লিতে। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের এডিজি (অরণ্য) জে কিসওয়ানের সঙ্গে কথা বলবেন। |
বন বিভাগ ও ডব্লিউটিআই সূত্রের খবর, দিন তিনেক আগে চোরাশিকারিদের গুলিতে জখম হয় হাতিটি। পশ্চিম গারো পাহাড়ে যাত্রাকোনার জঙ্গলে বাংলাদেশি শিকারিরা হাতিটিকে গুলি করে বলে অভিযোগ। ভারতের জঙ্গল পার হয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের ৩০০ মিটার ভিতরে গিয়ে পড়ে যায় হাতিটি। এলাকাটি ময়মনসিংহ জেলায়। যুবক হাতিটির পিছনের দুই পা, কান ও কপালে ক্ষত ছিল। একটি দাঁতও ভেঙে গিয়েছিল। চারটি গুলির ক্ষত ছিল তার শরীরে। মেঘালয়ের পশুপ্রেমী সংগঠনের চিকিৎসক ও কর্মীরা খবর পেয়ে ওষুধ-সহ ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বৈধ ভিসা না থাকায় তাঁদের আটকে দেয় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বিনা চিকিৎসায় ওই অবস্থাতেই পড়ে ছিল হাতিটি। গত কাল থেকে তার খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। বিএসএফ সূত্রের খবর, চোরাশিকারিরা গত রাতে মরণাপন্ন হাতিটির উপরে ফের চড়াও হয়। তার দুটি দাঁত উপড়ে নিয়ে যায়। সকালে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় হাতিটিকে ।
বনবিভাগ ও পশুপ্রেমীদের মতে, স্রেফ আইনকানুনের ফাঁসে চোখের সামনে একটি হাতির এ ভাবে মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুভার্গ্যজনক। বিএসএফ, ডব্লিউটিআই, রাজ্য বন দফতর ও সংরক্ষণ ট্রাস্ট রাজ্যের হাতি করিডরগুলি নিয়ে কাজ করছে। তাদের অভিযোগ, সীমান্তে কড়াকড়ির জন্য দুই দেশের হাতি ও অন্য বন্যপ্রাণীদের নিয়ে সমীক্ষা করা বা সংরক্ষণ প্রকল্পে বিস্তর অসুবিধা হচ্ছে।
রাজ্য বন কর্তাদের মতে, সীমান্তে হাতি চলাচলের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। |