সিপিএমের নেতৃত্বে এক সময়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে সেই জমিই এ বার তৃণমূলের লোকজনের মদতে দখল করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। ‘সুবিচার’ চেয়ে ওই জমির দাবিদার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। ঘটনাটি গোঘাটের কাঁঠালি গ্রামের। জমিটির মালিক বলে নিজেকে দাবি করে বিজেপি নেতা জগবন্ধু দে যে অভিযোগ তুলেছেন, তা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় সিপিএম এবং তৃণমূল নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, জমিটি বন্ধক রাখাকে কেন্দ্র করেই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিতর্কিত ২৯ শতক জমিটির মালিক ছিলেন সুফলচন্দ্র রায়। জগবন্ধুবাবুর দাবি, ১৯৯১ সালে তিনি জমিটি সুফলবাবুর থেকে কেনেন। কিন্তু ২০০৭ সালে সুফলবাবুর মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলেরা স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের মদতে ওই জমি দখল করে চাষবাস শুরু করেন। আরামবাগ মহকুমা আদালতের স্মরণাপন্ন হন জগবন্ধুবাবু। আদালতের রায় যায় তাঁর পক্ষেই। জগবন্ধুবাবুর অভিযোগ, তারপরেও সুফলবাবুর ছেলে রবীন্দ্রনাথ রায়, শ্রীকান্ত রায়, আনন্দ রায়েরা মাঝে মধ্যেই ওই জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে একাধিক বার জমি ‘দখলমুক্ত’ করা হয়।
২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সাহায্যে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর ভাইয়েরা ফের ওই জমি দখল করেন বলে অভিযোগ। জমির মাটি কেটে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ও মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে দাবি ওই বিজেপি নেতার। যদিও আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “বিষয়টি পুলিশ দেখছে।” সম্প্রতি এ ব্যাপারে আরামবাগ আদালতে ফের অভিযোগ দায়ের করেছেন জগবন্ধুবাবু।
অভিযুক্ত রবীন্দ্রনাথ রায়ের বক্তব্য, “ওই জমি বন্ধক দিয়েছিলেন বাবা। অন্যায় ভাবে তা নিজের নামে নথিভুক্ত করিয়ে নিয়েছেন জগবন্ধুবাবু। আমরা বন্ধকের টাকা সুদ-সহ মিটিয়ে ওই জমি ফেরত পেতে চাই। কিন্তু উনি তাতে রাজি হচ্ছেন না।” গোঘাটের তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পালের দাবি, “দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে ওই জমিটি নিয়ে বিবাদ চলছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” তাঁদের দলও জমি ‘দখল’-এর সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণ পাত্র। |