রাজ্য সরকারের ‘নিজ ভূমি, নিজ গৃহ’ এবং ‘পাট্টা দান’ প্রকল্পে ‘অনিয়ম’-এর অভিযোগ তুলে শুক্রবার পোলবার আলিনগরে ওই দুই প্রকল্পের শংসাপত্র প্রদান অনুষ্ঠানের আগে বিক্ষোভ দেখাল সিপিআই (এমএল) লিবারেশন।
এ দিন ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং স্থানীয় সাংসদ রত্না দে নাগ উপস্থিত ছিলেন। লিবারেশনের অভিযোগ, প্রকৃত গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে ওই সরকারি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় এমন অনেকে আছেন, যাঁরা রীতিমতো সম্পন্ন। এ দিন সেনেট মোড়ে পথ অবরোধ করেন লিবারেশনের সমর্থকেরা। হয় বিক্ষোভ সভা, মিছিল। অবরোধে জেরে তীব্র যানজট হয়। তীব্র গরমে কাজে বেরিয়ে যানজটের জেরে মানুষজন নাকাল হন। শেষে পুলিশ অবরোধকারীদের হঠিয়ে দেয়। পাশের এলাকায় বিক্ষোভ অবশ্য চলতে থাকে। পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “অবরোধে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। তাই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে।” |
পোলবার মোট ৭৮ জনকে ওই শংসাপত্র দেয় দিল রাজ্য সরকার। পোলবা-দাদপুর ব্লকের গোস্বামী-মালিপাড়া পঞ্চায়েতের তালচিনান-সানিহাটি মৌজার ৯ বিঘা খাসজমির পাট্টা প্রদান করা নিয়ে অভিযোগ তোলে লিবারেশন। পঞ্চায়েতটি লিবারেশন পরিচালিত। তাদের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চায়েত প্রধান ৬০ জন কৃষকের একটি তালিকা তৈরি করে প্রশাসনকে জমা দেন। কিন্তু, প্রশাসন সেই সুপারিশ গ্রাহ্য তো করেইনি, উল্টে সম্পন্ন অনেক চাষিকে ওই সরকারি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে। লিবারেশনের নেতা সজল অধিকারী বলেন, “শুধু গরিব চাষিই নয়, অনেক বর্গাদারকেও প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে বঞ্চিত করা হয়েছে। যাঁরা পাট্টা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে পেনশনভোগীও আছেন। জমি-বাড়ি রয়েছে এমন মানুষও আছেন। ওই মৌজায় বসবাসকারী কৃষকদের ছেড়ে দূরবর্তী বালিকুখারি মৌজার বেশ কিছু কৃষককেও এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।” পরিকল্পিত ভাবে লিবারেশন পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধানের সুপারিশ অগ্রাহ্য করা হয়েছে বলে সজলবাবুর দাবি। সপ্তগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত লিবারেশনের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “সরকারি প্রকল্প ঘিরে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সর্বৈব মিথ্যা। বিডিও উদ্যোগী হয়ে প্রকৃত দরিদ্রদের তালিকা তৈরি করেছেন। আদিবাসী, বাউড়ি সম্প্রদায়ের দরিদ্র চাষি জমি পেয়েছেন। আরও অনেক দরিদ্র চাষি জমি পেয়েছেন। শুধু রাজনীতি করার জন্য, সরকারকে হেয় করতে এমন নাটুকে প্রতিবাদ করা হচ্ছে।” প্রশাসনের কর্তারাও লিবারেশনের অভিযোগ মানেননি। |