|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ১... |
|
বিদ্যাং দেহি |
খান-এর দিন। তবু বিদ্যায় ভাসমান কলকাতা। ঝলক। |
ইন্সপেক্টর রানা, এ সি পি খান, বব বিশ্বাসসবাইকেই এক ঝটকায় কাত করেছিলেন তিনি।
গত মঙ্গলবার একই ব্যাপারের পুনরাবৃত্তি ঘটল।
এ বারও কাত করলেন সেই বিদ্যা বাগচী-ই।
তফাত একটাই। আগেরটা ছিল স্ক্রিনে। পরেরটা জীবনে। গ্র্যান্ড হোটেলের এক মদির সন্ধ্যায়।
এমনই এক দিনে, যখন ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ইডেন মাতাচ্ছেন শাহরুখ খান।
কিন্তু তখন, সেই বল রুমে, বিদ্যা বালনের সহজাত রোয়াবি দেখে মনে হল কেন তামাম বলিউড তাঁকে চার নম্বর ‘খান’ বলে ডাকে।
তখনও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স আর শাহরুখ খানের ভিকট্রি সেলিব্রেশনের ফুর্তিতে আপ্লুত কলকাতা। ঘোর কাটেনি।
সেখানেই চলল আর এক বিদ্যা কাহিনি। ‘হরলিক্স আহার অভিযান’-এর সন্ধ্যায়। সেখানে মুহূর্তের জন্যে তাঁর ছোটবেলায় ফেরা। যে স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে এক হেলথ ড্রিঙ্ক। হরলিকস। সরি, অর্ধেক বলা হল। আসলে
এই হেলথ ড্রিংকের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর বাবা, মায়ের স্মৃতিও। যেটার কথা কথা মনে করে তিনি বললেন, “আই অ্যাম আ হরলিকস বেবি”।
ছিল গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন হেল্থকেয়ার, আনন্দবাজার পত্রিকা আর দ্য টেলিগ্রাফের উদ্যোগে, সিনি’র সহযোগিতায় করা অনুষ্ঠান। “এই হরলিকস প্রীতির পেছনে ছিলেন আমার বাবা। বাড়িতে যখন কোনও অতিথি আসতেন বাবা দায়িত্ব নিয়ে নিজে সবার জন্য হরলিকস বানাতেন। তাই এটা আমার খুব স্ট্রং একটা চাইল্ডহুড মেমরি। প্রায় মন্ত্রের মতো ছিল ওটা...ওই হরলিকস বেবি,” বললেন মোনালিসা গেস্ট হাউসে থাকা এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বিখ্যাত অতিথি।
সেই সঙ্গে যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্ন, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়-সহ ১৪ শিল্পীর আঁকা ছবিও উদ্বোধন করলেন তিনি।
এখন এমন অবস্থা যে তিনি থাকলেই সব হিসেবের গণ্ডগোল হয়ে যায়। |
|
রাজ্যপালের সঙ্গে। |
যেমন ঘটল এর ঠিক পরের দিন। বুধবার। দ্য পার্ক-এ। কলকাতা চেম্বার অফ কমার্স অয়োজিত প্রভা খৈতান পুরস্কারের সন্ধ্যায়।
তাঁর উপস্থিতিতে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন স্বতঃস্ফূর্তভাবে দ্বিতীয় বার বক্তৃতা দিয়ে ফেললেন! ‘কহানি’-র পর তাঁর চৌম্বকশক্তির পারদ এতটাই চড়েছে যে, যে কোনও চ্যালেঞ্জই যেন তাঁর কাছে ডাল-ভাত। সে উল্টো দিকে যেই থাকুন না কেন! কাণ্ড দেখে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা সন্দীপ ভুতোড়িয়া বিড়বিড় করছেন, “নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা থাকলে ভাল হত। আমার প্রাইভেট সিকিওরিটি কত করবে!”
তাঁর চোখ ঝলসানো জনপ্রিয়তার আঁচ নিতে নিতে কয়েকজন অনুরাগী তো ফিসফিস করে তাঁকে বলেই ফেললেন, “আপনি-ই কেকেআর-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে যান না!”
উত্তরে সেই ঝলমলে হাসি। রাজ্যপালের বক্তৃতায় আবেগে ভেসে যাচ্ছেন। অভিজাত পরিবেশে ভেসে আসছে উচ্ছ্বসিত রাজ্যপালের টুকরো কথা, “বিদ্যা আর আমি একই গ্রামের মানুষ। কেরালার ওট্টাপালান গ্রাম। এই গ্রাম অনেক বিখ্যাত সব ডাক্তার, আমলা, বিজ্ঞানীদের জন্ম দিয়েছে। শুধু কমতি ছিল এক জন স্টারের। এ বার বিদ্যাকে দিয়ে সেটাও পুরণ হয়ে গেল। বিদ্যা যদি কোনও দিন অভিনয়ের জন্য নোবেলও পায়, তাহলেও আমি অবাক হব না।”
বিদ্যার বিরুদ্ধে ওঁর ‘অভিযোগ’ও ছিল দ্বিতীয় বারের বক্তৃতায়। “আমি ‘কহানি’ দেখেছি। বিদ্যার বিরুদ্ধে আমার একটাই অভিযোগ। বিদ্যা এক আই বি (ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো) অফিসারকে সন্ত্রাসবাদী করে দিয়েছে। আমিও আই বি অফিসার ছিলাম। আমি কিন্তু সন্ত্রাসবাদী নই! পরের ছবিতে বিদ্যা যেন করেকশনটা করে দেয়!” ততক্ষণে বল রুম ফেটে পড়েছে হাসিতে। |
|
টিম ‘কহানি’-- শাশ্বত ‘বব’ চট্টোপাধ্যায়, নিত্য গঙ্গোপাধ্যায়,
ঋতব্রত, অরিন্দম শীল আর শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। |
হাসছেন তিনিও। সেই হাসি নিয়েই বললেন সব সময় ফিকির খোঁজেন কী করে কলকাতা আসা যায়। “সুজয়কে তো প্রায়ই বলি কলকাতা চল”। তার মধ্যেই বললেন প্রসেনজিতের সঙ্গে তাঁর যে ছবি করার কথা হচ্ছে, সেটা এখনও বেশি দূর এগোয়নি।
এক ঘর নিমন্ত্রিত অতিথির, এবং উপচে-পড়া মিডিয়ার হামলা থেকে বাঁচতে তাঁকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু কী কাণ্ড! সেখানে পড়লেন আরও বড় হামলার মুখে। এ যেন ঘরের শত্রু বিভীষণ! তাঁরা আবার বেশির ভাগই মহিলা! আয়োজকদেরই আত্মীয়স্বজন। রক্ষকই হয়ে গেল ভক্ষক!
আর সব শেষে?
অনেকেই বলাবলি করা শুরু করলেন, “পরের বঙ্গবিভূষণ গৌতম গম্ভীর আর বিদ্যা বালনকে দিলে কেমন হয়?” উত্তরটাতে কারও মুহূর্তের দ্বিমতও ছিল না। |
|
সন্দীপ ভুতোড়িয়ার সঙ্গে। |
আর একটা পাওনাও হল বিদ্যার। রাজভবনটা দেখা বাকি ছিল। সে নেমন্তন্নও পেয়ে গেলেন এ বার। “কলকাতা তো আমার দ্বিতীয় ঘর। এখানকার গভর্নর’স হাউস দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। সেই সুযোগটা হয়ে গেল,” বলছেন বিদ্যা।
জমাটি আড্ডার শেষে হঠাৎ খেয়াল হল ফ্লাইটের জন্য লেট হয়ে যাচ্ছে। হুড়মুড় করে বিদ্যা তখন ছুটছেন। তাই দেখে রাজ্যপালের আবার স্বতঃস্ফূর্ত আমন্ত্রণ“তেমন হলে আমার পাইলট কার আপনাকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ছেড়ে আসতে পারে।”
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য, বিশ্বনাথ বণিক |
|
|
|
|
|