নয়ের দশকে তাইল্যান্ডে আর্থিক কেলেঙ্কারির জেরে ৫টি ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১০ বছরের জেল হল ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাকেশ সাক্সেনার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যাঙ্কক ব্যাঙ্ক অফ কমার্সে কাজ করার সময়ে জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার সংগ্রহ করেন তিনি। এর জেরে এক সময় ব্যাঙ্কটি দেউলিয়া ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। এমনকী এর ফলে বাট (তাইল্যান্ডের মুদ্রা)-এর দাম পড়ে যাওয়ায় দেশে আর্থিক সঙ্কটও তৈরি হয়। ১৯৯৭ সালে যা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র এশিয়া জুড়ে।
ব্যাঙ্ককের দক্ষিণ ফৌজদারি আদালতে মামলা চলাকালীন উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ব্যাঙ্কটির আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সময় তাইল্যান্ডে প্রায় ৬০টি সংস্থা তৈরি করেন সাক্সেনা। সেই সংস্থাগুলির কার্যকরী মূলধনের নামে ব্যাঙ্কটি থেকে ঋণের মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার সংগ্রহ করেন তিনি। সেই অর্থের বেশিরভাগই সুইৎজারল্যান্ডে তাঁর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাঠান সাক্সেনা। সঠিক তথ্য না জানা গেলেও, এ ভাবে প্রায় ৬ থেকে ৮.২ কোটি ডলার পাচার করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর। সাক্সেনা এবং তাঁর সঙ্গীদের জালিয়াতির ফলে ব্যাঙ্কের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪,০০০ কোটি বাট। এই লোকসান সামলাতে না পেরে ব্যাঙ্কটির মূলধন কমে যায় এবং শেষ পর্যন্ত তার পতন হয়।
১৯৯৬ সালেই কানাডায় স্কি করার সময় সাক্সেনাকে গ্রেফতার করা হলেও, তাইল্যান্ডে তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে, এই দাবি করে তিনি আদালতের দারস্থ হন। আইনি লড়াই করে তাঁকে তাইল্যান্ডে ফিরিয়ে আনতে লেগে যায় ১৩ বছর। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে আনা মামলার রায় ঘোষণা করল আদালত। জেলের পাশাপাশি, ব্যাঙ্কের ক্ষতির অঙ্ক স্বরূপ তাঁকে ১১৩ কোটি বাট এবং জরিমানা স্বরূপ আরও ১০ লক্ষ বাট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা। এ ছাড়াও ব্যাঙ্কক ব্যাঙ্ক অফ কমার্সের আরও ডজন খানেক কেস-এর বিচার এখনও বাকি। যদিও এ দিনের এই রায়কে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে দাবি করেছেন ৫৯ বছরের সাক্সেনা। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, তাইল্যান্ড ছাড়াও কানাডায় পাসপোর্ট জাল করা এবং সিয়েরা লিওনে হিরের খনিতে জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। |