অর্থ মন্ত্রক চাইলেও ডিজেল গাড়ির উপর অতিরিক্ত কর চাপানোর ব্যাপারে আপত্তি জানাল কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক।
এর কারণ হিসেবে ভারী শিল্প মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়েছে, কোনও বিশেষ ধরনের গাড়ির উপর এ ভাবে কর চাপালে তা আখেরে গোটা শিল্পের পক্ষেই ক্ষতিকারক হবে। এবং ইতিমধ্যেই অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা গাড়ি শিল্পকে আরও বেশি অন্ধকারে ঠেলে দেবে।
শুক্রবার গাড়ি শিল্পের এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে ভারী শিল্প মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব অম্বুজ শর্মা বলেন, “আমরাও অতিরিক্ত কর চাপানোর বিরুদ্ধে। এটা হলে শিল্পের ক্ষতি হবে, গাড়ি সংস্থাগুলির এই বক্তব্য যুক্তিযুক্ত। সোমবারই এ নিয়ে রিপোর্ট অর্থমন্ত্রকের কাছে পাঠিয়ে দেব আমরা।” উল্লেখ্য, ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেলও ইতিমধ্যেই এ নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রত্যাশিত ভাবেই ভারী শিল্প মন্ত্রকের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন সিয়াম-এর ডিজি বিষ্ণু মাথুর। তিনি বলেন, “ওঁরা নিরপেক্ষ ভাবে বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন। গাড়ি শিল্প ওঁদেরই অধীনে। তাই সব জানেন। তেল মন্ত্রক নয়।”
ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করার সিদ্ধান্ত না-নিলেও, রাজকোষ ঘাটতি কিছুটা ঠেকাতে অর্থ মন্ত্রক ডিজেল গাড়ির (বিশেষ করে নিজস্ব ব্যবহারের জন্য) উপর কর বসানোর কথা ভাবছে। কিন্তু তাতে তীব্র আপত্তি তুলেছে গাড়ি শিল্প। সংস্থাগুলির বক্তব্য, পেট্রোলের চড়া দরের জন্য এমনিতেই তাদের বেহাল দশা। এর উপর ডিজেল গাড়িতে কর বসলে সমস্যা বাড়বে। এ কথা ঠিকই যে, ডিজেলের দাম কম বলে তার চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে। তবে পরিকাঠামোর সমস্যার জন্যই সেই সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কারণ এত দিন ডিজেল গাড়ির তেমন চাহিদা না-থাকায় সেই পরিকাঠামো তৈরি করতে ভরসা পায়নি তারা। তা ছাড়া, বাজেটে যে আগেই এক দফা উৎপাদন শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছে সংস্থাগুলি। তাই এই পরিস্থিতিতে ফের অতিরিক্ত করের বোঝা চাপলে পেট্রোলের মতো ডিজেল গাড়ির বিক্রিও মার খাবে বলে আশঙ্কা গাড়ি শিল্পের।
দিন তিনেক আগে পবন গোয়েন্কা, পি এম তেলাং, শিনজো নাকানিশি-সহ বিভিন্ন গাড়ি সংস্থার শীর্ষ কর্তারা অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানান। গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম-ও এ নিয়ে দরবার করছে। এ দিকে, মূল্যায়ন ও উপদেষ্টা সংস্থা ক্রিসিল-এরও দাবি, ডিজেল গাড়ির উপর কর বসিয়ে সরকারের লাভ কিছু হবে না। কারণ এতে তাদের ভর্তুকির বোঝা খুব একটা কমবে না। বরং তা কার্যকর করতে গিয়ে সমস্যা বাড়বে। |