গ্রাম কমিটির সচিবের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল। তার জেরে ওই প্রকল্পে কাজ করা দিনমজুরেরা প্রাপ্য মজুরির দাবিতে শুক্রবার মহম্মদবাজারের আঙ্গারগড়িয়া পঞ্চায়েতে কর্মীদের ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। একই সঙ্গে তাঁরা ঘণ্টাখানেক ধরে সাঁইথিয়া-মহম্মদবাজার রাস্তাও অবরোধ করেন। পরে বিডিও আশ্বাসে অবশ্য ওই ক্ষুব্ধ মজুরেরা তালা খুলে দেন ও পথ অবরোধ তুলে নেন।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে আঙ্গারগড়িয়া সংসদ এলাকায় ১০০ দিন প্রকল্পের ওই কাজ হয়েছিল। পঞ্চায়েতের অ্যাসিস্টান্ট একজিকিউটিভ অফিসার মহম্মদ মোবিন আলি বলেন, “মোট ২ লক্ষ ৪০ হাজার ২৮০ টাকার কাজ হয়। কাজ শেষে আমরা নিয়ম মতো কুবিলপুর পোস্ট অফিসে দিনমজুরদের নামের তালিকা অনুাযায়ী ড্রাফ্টও জমা দিই।” পরে কয়েকজন মজুরের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা পায়নি। ওই মজুরদের অভিযোগ, আঙ্গারগড়িয়া গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সচিব মঙ্গলময় ঘোষ পোস্ট অফিস থেকে সমস্ত টাকা তুলে নিয়েছেন। ঘটনার কথা জানার পর থেকেই প্রাপ্য মজুরির জন্য তাঁরা পোস্ট অফিস থেকে বিডিও অফিস হন্যে হয়ে ঘুরছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু এতদিনেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়াতেই এই প্রতিবাদ বলে জানিয়েছেন ওই মজুরেরা। ওই দিনমজুরদের পক্ষে নিমাই মাড্ডি, সুশান্ত কর্মকার, ফড়িং বাগদিদের দাবি, “আমরা সরল মনে বিশ্বাস করেই গ্রামোন্নয়ন কমিচির সচিব মঙ্গলবাবুর কাছে পোস্ট অফিসের পাশবই, জব কার্ড দিয়েছিলাম।”
এ দিকে ১০০ দিন প্রকল্পের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই পরিবার নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন ওই অভিযুক্ত সচিব মঙ্গলময় ঘোষ। মহম্মদবাজারের ব্লক সভাপতি, তৃণমূলের জিতেন ভট্টাচার্য বলেন, “খোঁজ নিয়ে জেনেছি গ্রামের গরিব মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে মঙ্গলবাবু টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।” জিতেনবাবু প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট পোস্ট মাস্টারের ভূমিকা নিয়ে। তাঁর প্রশ্ন, “পোস্ট মাস্টার কেন এতগুলো টাকা একজনের হাতে দিয়ে দিলেন?” যদিও পোস্ট মাস্টার জীবন গড়াইয়ের দাবি, “আমি একজনের হাতে টাকা দিইনি। মঙ্গলবাবু ৪-৫ দিন ধরে ১৫-২০ জনকে নিয়ে এসেছিলেন। বৈধ পাশবই দেখেই তাঁদের হাতে টাকা দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু যাঁরা টাকা নিয়েছেন তাঁদের পাশবইয়ের ছবির সঙ্গে কি চেহারা মিলিয়ে দেখা হয়েছিল? জীবনবাবু বলেন, “পাশবইয়ে কার্যত কারও ছবি নেই বললেই চলে। তাই বলেছি এ বার ছবি লাগবে।”
মজুরদের প্রতিবাদের কথা জানতে পেরেই বিডিও সুতীর্থ দাস জয়েন্ট বিডিওকে অভিযোগ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, স্থানীয় বিধায়ক, সিপিএমের ধীরেন বাগদি বলেন, “প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছি দল বা সংগঠন না দেখে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে প্রাপ্য টাকা মেটানো হোক।” |