পুর নির্বাচনে পরাজিত হলেও নলহাটির প্রাক্তন পুরপ্রধান বিপ্লবকুমার ওঝাকে বীরভূমের কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শুক্রবারই রাজ্যপালের তরফে সমবায় দফতরের সচিবের চিঠি বিপ্লববাবুর কাছে পৌঁছেছে। চিঠি পেয়ে বিপ্লববাবুর প্রতিক্রিয়া, “সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের কাজ করব। ১৮ জুন ওই পদে যোগ দেব।”
প্রায় ৩২ বছর পরে সম্প্রতি ওই সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়েছে। সেখানে ৮টি আসনেই তৃণমূলের প্রার্থীরাই জয়ী হন। তৃণমূল সূত্রে শোনা যাচ্ছিল, জেলা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরী কয়েকশো কোটি টাকা মূলধনের এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হবেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিপ্লববাবুকে ওই পদ দেওয়ায় এখন বিকাশবাবু বলছেন, “আমি ভাইস চেয়ারম্যান হব।”
ওই ব্যাঙ্কে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চেয়ারম্যান ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতা রেবতী ভট্টাচার্য। সেই সময় কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত কিছু লোককে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ‘পাইয়ে’ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঋণের বহু বকেয়া টাকা এখনও অনাদায়ি রয়ে গিয়েছে। এই ব্যাঙ্কের অধীনে থাকা বেশ কয়েকটি কৃষি সমবায় সমিতি দুর্নীতির কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকে এখনও ওই সমবায় সমিতিগুলি থেকে গচ্ছিত টাকা তুলতে পারেননি। বিপ্লববাবুর আশ্বাস, “দায়িত্ব নেওয়ার পর সব বেনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিপ্লববাবুকে কংগ্রেস নলহাটি ১ ব্লকের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। লোকসভা নির্বাচনের পরে কংগ্রেসের পুরপ্রধান বিপ্লববাবু ৮ জন দলীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। নলহাটি পুরবোর্ডের দখল পায় তৃণমূল। নলহাটিতে তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধিও হয়। কিন্তু এ বার পুরনির্বাচনে দু’টি ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েও তিনি পরাজিত হন। তাই তৃণমূলের তরফে তাঁকে সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ কাজের উপহার হিসেবে দেওয়া হল বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। |