পরপর চার দিনে প্রায় ৭০০ পয়েন্ট বেড়ে গত এক মাসের ঘাটতি পুষিয়ে নিল সেনসেক্স। দৌড়ে সামিল ভারতীয় টাকাও। গত তিন দিনে ডলারের তুলনায় তার দাম বেড়েছে ৭১ পয়সা। যাতে ভারতের চাঙ্গা শেয়ার বাজার ছাড়াও ইন্ধন জুগিয়েছে অপ্রত্যাশিত ভাবে চিনের শীর্ষ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে সুদের হার কমানো। যার প্রভাব শেয়ার বাজারেও পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, বৃহস্পতিবার চিনা শীর্ষ ব্যাঙ্ক পিপ্ল্স ব্যাঙ্ক অফ চায়না এই সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের শেয়ার বাজার বন্ধ হওয়ার পরে।
এ দিকে, আর্থিক সংস্কারকেই হাতিয়ার করে অর্থনীতিকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার যে অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ করেছেন, সেটাই ভারতীয় লগ্নিকারীদের উৎসাহ জোগাচ্ছে বলে বাজার সূত্রের খবর। বিশেষ করে চলতি অর্থবর্ষে পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে প্রধানমন্ত্রীর বুধবারের বৈঠক লগ্নিকারীদের আস্থা ফেরাতে অনেকটাই সাহায্য করেছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ইঙ্গিত
এশীয় বাজার চাঙ্গা থাকায় বৃহস্পতিবার সকালেই ১০০ পয়েন্ট বেড়ে যায় সেনসেক্স। বিশ্ব জুড়েই বিভিন্ন শীর্ষ ব্যাঙ্ক নিজেদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে নতুন করে উৎসাহ প্যাকেজ ঘোষণা করতে চলেছে, এই আশায় উঠতে থাকে ইউরোপের বাজারও। তার প্রভাবও পড়ে ভারতীয় বাজারে। দিনের শেষে সেনসেক্স ১৯৫ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছে যায় ১৬,৬৪৯ পয়েন্টে। বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি এ দিন ভারতের বাজার থেকে ৬৭৫ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার কেনায় টাকার চাহিদা বাড়ার জেরে ডলারে তার দাম বাড়ে ৪২ পয়সা। দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৪.৯৪ টাকা। প্রায় তিন সপ্তাহ বাদে টাকার এই ৫৪-র কোঠায় ফিরে আসাকে ভাল লক্ষণ বলেই মনে করছেন বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনকারীরা। টাকার উত্থানে এ দিন প্রভাব ফেলেছে কিছুটা আচমকাই চিনের সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত।
ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই এক বছরের ঋণে সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬.৩১% করল চিনা শীর্ষ ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি, আমানতে সুদও ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৩.২৫% করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। বিশ্ব জুড়েই সুদ কমানোর প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চিনের এই সিদ্ধান্তে তাদের হাতেও নগদের জোগান বাড়াবে। সে ক্ষেত্রে ভারতের শেয়ার বাজারে ওই অর্থের একাংশ প্রবেশ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ দিনই চিনের সিদ্ধান্তের জেরে ইউরোপ, আমেরিকার শেয়ার সূচক বেড়েছে। ডলারের তুলনায় দাম বাড়ে ইউরো-রও। ভারতীয় টাকার দাম বাড়াতেও তা সাহায্য করে। এ দিকে, মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ-এর চেয়ারম্যান বেন বার্নান্কে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আরও আর্থিক উৎসাহ ঘোষণা করবেন বলে বৃহস্পতিবারই ইঙ্গিত দেন। মার্কিন কংগ্রেসের সামনে তিনি বলেন, ইউরোপের সঙ্কট এবং সে কারণে মার্কিন অথর্নীতির ঝুঁকি কতটা বাড়ছে, সে দিকে নজর রাখছে ফেড রিজার্ভ। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি বাজারকে চাঙ্গা করে তোলে। |