পুরনো চালানেই চোরাই কয়লা, দাবি পুলিশের
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বৈধ চালান ব্যবহার করে চোরাই কয়লা পাচার হচ্ছে, বলছে বর্ধমান জেলা পুলিশ।
দীর্ঘদিন ধরে পুলিশকে হাতে রেখেই কয়লা পাচার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ ছিল। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে তা কিছুটা শক্ত হয়ে গিয়েছে। তাই এই নয়া কায়দা বলে পুলিশের দাবি।
জেলা পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, আইনত হাতে পাওয়া ইসিএল, বিসিসিএল, সিসিএলের কয়লার চালান পাচারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে? জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার মতে, “ইসিএল প্রথমে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে কয়লা সরবরাহ করে। পড়ে থাকা তুলনায় নিম্নমানের কয়লা পরে নিলাম করা হয়। সেই কয়লা কিনে নেন ডিপো মালিকেরা। তখন তাঁদের যে চালান দেওয়া হয় সেটাই বারবার ব্যবহার করেন তাঁরা।”
ইদানীং বর্ধমান জেলার গ্রামীণ থানা এলাকাগুলিতে প্রায় প্রতি দিনই কিছু না কিছু কয়লা বোঝাই ট্রাক আটক হচ্ছে। সেই সব ট্রাকের চালকদের কাছ থেকে যে চালান পুলিশ পাচ্ছে, তা ইসিএল, বিসিসিএল বা সিসিএলের মত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার। সেখানে কয়লার গুণগত মানের বর্ণনা মোতাবেক যা বলা হচ্ছে, ট্রাকে থাকা কয়লা কিন্তু সে ধরনের নয়। আটক হওয়া কয়লার লরি থেকে যে চালান পাচ্ছে পুলিশ, তা-ও কয়েক দিনের পুরনো। আর তা দেখেই পুলিশের সন্দেহ, ওই কয়লা আসলে পাচার করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশের একটি সূত্রের মতে, রানিগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড় ও বাংলা-ঝাড়খন্ড সীমান্তের ডুবুরডিহি চেকপোস্টে এই সরকারি চালান হস্তান্তর করে লক্ষ-লক্ষ টাকা রোজগার করে একটি চক্র। এমনকী ডিপো মালিকেরা টাকার বিনিময়ে মাফিয়াদের হাতেও তুলে দেন ওই চালান। পাচার হওয়া কয়লার বড় অংশই আসে আসানসোল ও ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে। ঝাড়খণ্ডের বিসিসিএলের কয়লা সাধারণত ‘হার্ড কোল’ জাতীয়। কিন্তু দুর্গাপুর-আসানসোলের খনি থেকে সাধারণত ‘সফ্ট স্টিম কোল’ জাতীয় কয়লা পাওয়া যায়। ফলে পুলিশের অফিসারেরা সাদা চোখেই দুই ধরনের কয়লার পার্থক্য বুঝতে পারছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেই কাঁকসা থানা ১৪ টন কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক আটক করেছিল। সেই ট্রাকে যে চালান মিলেছে, তা জামশেদপুরের কাছে অবস্থিত বিসিসিএলের একটি কোলিয়ারির। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই খনির পাঠানো কয়লা কাটোয়ার একটি ইটভাটায় সরবরাহ করা হয়েছে বেশ কয়েক দিন আগেই। ট্রাকের চালক, কলকাতার রাসেল স্ট্রিটের বাসিন্দা মহম্মদ ইমতিয়াজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই কয়লা যাচ্ছিল হুগলির মগরায়।
শুধু ওই ঘটনাই নয়। মাত্র এক মাসের মধ্যে একই চালান দু’বার ব্যবহার করে কয়লা নিয়ে যাওয়া অন্তত পাঁচটি ট্রাক ধরা পড়েছে কাঁকসায়। মন্তেশ্বর থানার পুলিশও এমনই একটি ট্রাক আটক করেছে, যারা পুরনো সরকারি চালানে চোরাই কয়লা নিয়ে মগরার দিকে যাচ্ছিল। প্রসঙ্গত, হুগলির ওই এলাকায় সক্রিয় কয়লা মাফিয়া কমল দাসকে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে। কিন্তু একই চালানে বারবার পাচার রুখতে কী করছে প্রশাসন? পুলিশ সুপার বলেন, “থানাগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যাতে এই ধরনের কয়লা বোঝাই ট্রাক সহজে পার হতে না পারে। এ ছাড়াও ইসিএল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যদি চালানের তারিখ, কয়লার পরিমাণ, ট্রাক নম্বর, চালকের নাম ইত্যাদি ওয়েবসাইটে দিয়ে দেন, তা হলে সেই ট্রাকটিকে আটক করা সহজ হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.