পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোয় তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতে। ওই অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন দলেরই মহিলা উপপ্রধান। অভিযোগ জানানো হয় প্রশাসনে। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে স্বস্তিতে নেই উপপ্রধানও। তাঁকে সরাতে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। এ মাসের ৬ জুন অনাস্থার ওই তলবি সভা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গরিব মানুষদের জন্য বরাদ্দ জিআরের ৭০ কেজি গম না-দিয়ে ১০-৩০ কেজি দেওয়া হয়েছে। অনেককে তা দেওয়া হয়নি। ভুয়ো টিপসই দিয়ে মাস্টার রোলও তৈরি করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। রাস্তা তৈরির কাজেও অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের নিজের ইটভাটা রয়েছে। সেই ভাটা থেকে নিম্নমানের ইটের টুকরো রাস্তার উপর বিছিয়ে লাল মাটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বেনামে ঠিকাদারি নিয়ে প্রধান সেই কাজ করে ৭৫ শতাংশ টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ। আবার ১০০ দিনের কাজে পুকুর খোঁড়া হয়েছে জেসিবি মেশিন দিয়ে। সেই মাটি ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে। পরে শ্রমিকদের দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে বলে তৈরি হয়েছে ভুয়ো মাস্টার রোল। চাঁচলের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেছেন, “উপপ্রধানের অভিযোগ পেয়েই বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ বিডিও ঋতম ঝা বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে জিআরের গম বিলি নিয়ে পঞ্চায়েতের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। অন্য পঞ্চায়েত জিআরের গম বিলি করলেও সুলতান নগর করেনি।” ১৭ আসনের পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ১৩ ও সিপিএমের ৩ সদস্য। এক সদস্যের মৃত্যুতে একটি আসন শূন্য। পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রী কৃষ্ণ শর্মা, উপপ্রধান রীনা মণ্ডল। উপপ্রধান পদ তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত। দলীয় সদস্যদের মধ্যে একমাত্র রীনা দেবী তফসিলি সম্প্রদায়ের। ফলে অনাস্থায় তিনি অপসারিত হলে পদ খালি থাকবে। সম্প্রতি প্রধানের নামে জিআরের গম বিক্রির নালিশ তোলার পর থেকেই সংঘাতের শুরু। উপপ্রধানের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে প্রধান বলেন, “উপ প্রধান সিপিএম তৃণমূলের কথায় মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।” উপপ্রধান রীনা মন্ডল বলেন, “প্রধান যা করছেন মানা যায় না। সত্যিটা তুলে ধরায় আমাকে সরানোর চক্রান্ত হচ্ছে।” হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক কংগ্রসের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “উপপ্রধান দল বিরোধী কাজ করায় তার নামে অনাস্থা আনা হয়েছে। প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়।” |