একে বেহাল ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার উপরে পুলিশের নাকের ডগায় চলছে বেআইনি পার্কিং ও জবরদখল। উধাও হয়েছে ফুটপাত। ইসলামপুর শহরের ছবি। ফুটপাত না-থাকায় যানজট ও দুর্ঘটনায় কাহিল হলেও নিরুপায় সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, সমস্যার কথা পুরসভা ও প্রশাসনের কর্তাদের জানালে আশ্বাস দেওয়ার বাইরে কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। শহরের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা অস্বীকার করেননি স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইলাল অগ্রবাল। যদিও তিনি বলেন, “ফুটপাত দখলমুক্ত করা একা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ইসলামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুবিমল পাল বলেন, “বেআইনি পার্কিং শহরের বড় সমস্যা। বিষয়টি নিয়ে পুরসভা ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে পুরসভা ও পুলিশ কর্তারা যাই বলুন না কেন স্থানীয় বাসিন্দারা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, সবাই বলছেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটা কবে? মাসের পর মাস একই ভাবে কাটছে। ভোগান্তি বেড়ে চলেছে। তার পরেও কেন বলা হচ্ছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর আগে কয়েকবার প্রশাসনের তরফে একই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এমনকী সর্বদলীয় সভা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। ফলে পথচারীদের কাছে ফুটপাত আজও অধরা থেকে গিয়েছে। রাস্তার হাল ফেরেনি। অল্প বৃষ্টিতে জাতীয় সড়ক ভাসছে। বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে যানজটে জেরবার হতে হচ্ছে। দুর্ঘটনা নিত্যসঙ্গী। ইসলামপুর শহরের পেট চিরে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। বিভিন্ন কারণে ওই সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হয়নি। থমকে গিয়েছে বাইপাসের কাজও। শহরের মিলনপল্লি থেকে শ্রীকৃষ্ণপুর কালী বাড়ি পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা দীর্ঘদিন থেকে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। খানাখন্দে ভরা রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল করে দিব্যি চলছে বিভিন্ন সামগ্রীর ব্যবসা। সেখানে রাতারাতি গজিয়েছে দোকান। তার উপরে রয়েছে বেআইনি পার্কিং। পথচারী রাস্তা পারাপারের জন্য দাঁড়াবেন উপায় নেই। ওই পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের। রঞ্জিত দাস, মিঠু দাসের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের ফুটপাত দখল হলে দেখার কেউ নেই। চালকরা রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে চলে যাচ্ছে। যানজটে জেরবার হতে হচ্ছে পথচারীদের। দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জাতীয় সড়কের পাশে রয়েছে শহরের বেশিরভাগ স্কুল। ফুটপাত দখল হওয়া, বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে পড়ুয়াদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় যানজট। যানবাহনের ফাঁক গলে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে পড়ুয়ারা দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। ছেলেমেয়েরা স্কুল থেকে বাড়িতে না ফেরা পর্যন্ত নিশ্চিত থাকতে পারেন অভিভাবকদের কেউ। স্কুলে আসা থেকে ছুটির পরে ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে ফিরে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় থাকেন শিক্ষকরা। শিক্ষক মিথিলেশ রজক বলেন, “রাস্তা ও ফুটপাত সমস্যা সমাধানের জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। খুবই উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটছে। ছুটির পরে ছেলেমেয়েরা বাড়িতে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারি না।” |