রাজ্যের ছ’টি পুরসভায় রবিবার নির্বাচন থাকলেও বালিতে ছিল না। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল বালি পুর এলাকা। আক্রান্ত হল সেখানকার সিপিএম পুর চেয়ারম্যানের বাড়ি। আহত হলেন বালি থানার ওসি এবং দু’পক্ষের অন্য সাত জন। ভাঙচুর হল পুলিশের জিপ এবং অন্য কয়েকটি বাস ও গাড়ি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল জি টি রোড-সহ ছোট-বড় বহু রাস্তা। চলল পুলিশের লাঠি। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না-আসায় নামাতে হল র্যাফ। তার মধ্যেই সিপিএমের চারটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করে একটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা।
পুলিশ জানায়, হাঙ্গামার মূলে ছিল সিপিএমের একটি মিছিল। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে এবং বেশ কয়েক দফা দাবিতে সন্ধ্যায় বালিখাল থেকে ওই মিছিল বেরোনোর কথা ছিল। মিছিল শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৩ কিলোমিটার দূরে কাজিপাড়ায়। মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য সিপিএম-সমর্থকেরা একটি লরিতে বালিখালের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই লালবাবা কলেজের সামনে দু’পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। |
ভাঙচুর চলল বেসরকারি বাসে। ভাঙা হল পুলিশের জিপও। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক |
সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরা ওই লরির চালককে রাস্তায় নামিয়ে মারধর করেন। প্রতিবাদ করেন সিপিএমের লোকজন। তখনই অশোক দত্ত নামে এক তৃণমূল-সমর্থক রাস্তায় পড়ে গেলে তাঁর মাথা ফেটে যায়।
তার পরেই গোলমাল চরমে ওঠে। জিটি রোডে যানবাহন আটকে দেয় তৃণমূল। পুলিশের জিপ ভাঙচুর করা হয়। ইট মেরে কাচ ভেঙে দেওয়া হয় অন্য কয়েকটি গাড়ি ও বাসের। বালির রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। মানুষ আতঙ্কে ঘরে ঢুকে পড়েন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে সিপিএমের লোকজন-সহ লরিটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ফের হাঙ্গামা বাধে। বিরাট পুলিশবাহিনী আসে। র্যাফ লাঠি উঁচিয়ে জনতাকে হটানোর চেষ্টা করে। যুযুধান জনতা বাদামতলায় বালি পুরসভার সিপিএম চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ীর বাড়িতে হামলা করে। অরুণাভবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূলের লোকজন বাড়িতে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করে।” সিপিএমের অভিযোগ, দেওয়ান গাজি, শান্তিরাম রাস্তা, পাঠকপাড়া, খামারপাড়া পার্টি অফিস ভাঙচুর করে তৃণমূল। আগুন লাগায় খামারপাড়া পার্টি অফিসে।
তৃণমূলের বালি ব্লকের সভাপতি তপজিল আহমেদের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম-ই পরিকল্পনা করে তাঁদের লোকজনকে মেরেছে। তিনি বলেন, “আমরা এখনও কিছু বলিনি। তবে বাড়াবাড়ি করলে পথে নামব।” ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “এক জনকে আটক করা হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত হচ্ছে।” সিপিএম থানায় অভিযোগ করেনি। কেন? সিপিএমের বক্তব্য, তৃণমূল থানা আটকে বিক্ষোভ দেখায়। তাই পার্টির লোকজনকে যেতে বারণ করা হয়। পরে অভিযোগ জানানো হবে। |