নাগাল্যান্ড থেকে গারো জঙ্গি সংগঠন জিএনএলএ-র জন্য পাঠানো বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসম্ভার ধরা পড়ল গুয়াহাটির গড়চুক এলাকায়। কাল সন্ধ্যায় একটি গাড়ি থেকে ওই অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে। এদের চারজন গারো, একজন নাগা ও একজন বড়ো জনজাতি সম্প্রদায়ের। ধৃতদের মধ্যে পিন্টো মারাক নামে এক যুবক জিএনএলএ-র প্রধান শোহান ডি শিরার শ্যালক। মেঘালয় পুলিশ সূত্রে খবর পেয়ে গুয়াহাটি পুলিশ গাড়িটি আটক করে। ওই গাড়িতেই লুকিয়ে রাখা ছিল প্রচুর অস্ত্র ও বিস্ফোরক। এরই পাশাপাশি, নাগাল্যান্ডে বিদেশি মেশিনগান বিক্রি করতে গিয়ে স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের অফিসারদের হাতে ধরা পড়লেন সশস্ত্র ব্যাটালিয়ানের সাব ইন্সপেক্টর সসিৎসুংবা রাও। নাগাল্যান্ড পুলিশে একটি সংগঠিত চক্র পুলিশেরই অস্ত্র ও কার্তুজ যে দীর্ঘ দিন ধরে এনএসসিএন (আইএম) জঙ্গিদের বিক্রি করে, এমন অভিযোগ ছিলই। এ বার পুলিশ বিভাগে অস্ত্র কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই কেলেঙ্কারির অন্যতম মাথা আও গ্রেফতার হলেন। উত্তর-পূর্ব ভারত জুড়ে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের আঁতাত এবং সরকারি বিভাগের অন্দরেও তাদের প্রভাব কতটা এই ঘটনা তা নতুন করে জানান দিল। |
গুয়াহাটিতে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি। |
কাল সন্ধ্যায় গুয়াহাটির গড়চুক এলাকায় উদ্ধার করা হয় গ্রেনেড লঞ্চার-সহ ২৫টি গ্রেনেড, একটি এ কে-৭৪ রাইফেল, হালকা বোমা, একটি বেরেটা .৩২ টমক্যালট পিস্তল, ৪০০ রাউন্ড এ কেরাইফেলের গুলি, ২০টি বেরেটার গুলি, ৯০০ রাউন্ড ৯ মিলিমিটার পিস্তলের গুলি। পুলিশ সূত্রে খবর, মণিপুরের তামু থেকে অস্ত্রগুলি আনা হচ্ছিল। গুয়াহাটি হয়ে তা সুযোগমতো পাচার করে দেওয়া হত গারো পাহাড়ে জিএনএলএ জঙ্গিদের হাতে। উল্লেখ্য, জিএনএলএ-র সর্বময় কর্তা চ্যাম্পিয়ান সাংমাও একসময় ছিলেন পুলিশের পদস্থ অফিসার।
অন্য দিকে নাগাল্যান্ডে সশস্ত্র ব্যাটালিয়নের সাব ইনস্পেক্টর সসিৎসুংবা আওয়ের গ্রেফতারের ঘটনাতেও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। চুমুকেডিমা কমপ্লেক্সে অস্ত্র ক্রেতা সেজে আওয়ের জন্য ফাঁদ পাতেন স্পেশাল ব্র্যাঞ্চের অফিসারেরা। ডেনমার্কে তৈরি একটি মিডিয়াম মেশিনগান (এমএমজি) বিক্রি করার চেষ্টা করেন আও। ওই অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করা হয় আওকে। এর আগে, চুমুকেডিমা সেন্ট্রাল স্টোরের দায়িত্বে ছিলেন আও। তবে ২০ এপ্রিল, অস্ত্র বিক্রি সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে ওখার এসপি এস সেজংমং সাংগতাম, এক এএসআইয়ের সঙ্গে আও বরখাস্ত হন।
তদন্তে জানা গিয়েছে, তিন পুলিশকর্মীর সক্রিয় সাহায্যে অনুশীলনের জন্য আসা পুলিশের অস্ত্র ও কার্তুজগত সাত বছর ধরে এনএসসিএন (আই এম) জঙ্গি সংগঠনকে বিক্রি করা হচ্ছিল। তিনজনের বিরুদ্ধেই তদন্ত চলছে। তবে, তাতেও শুধরোননি আও। অভিযানের দায়িত্বে থাকা ডিএসপি ইজরায়েন ডি জুইভি জানান, বেশ কিছুদিন আওয়ের উপরে নজর রাখার পরে ফাঁদ পাতা হয়। সাত লক্ষ টাকার বিনিময়ে, বাড়িতেই অস্ত্র হস্তান্তর করতে চান আও। আওয়ের কাছ থেকে মেশিনগানের তিনটি ম্যাগাজিনও মেলে। ইজরায়েল জানান, মেশিনগানটি অবশ্য পুলিশের নয়।
পৃথক ঘটনায় দুই পরেশপন্থী আলফা জঙ্গিকে গ্রেফতার করে অসম-অরুণাচল সীমানা থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করল পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তিনসুকিয়া পুলিশ, ডুমডুমা নগাঁও গ্রাম থেকে উখল দাদুমিয়া ও গণেশ গগৈ নামে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে পুঁতে রাখা একটি ৫ কিলো আইইডি, ৬ কিলোগ্রাম আরডিএক্স, রিমোট কন্ট্রোল যন্ত্র উদ্ধার হয়। |