সঞ্চয়ের নিয়মিত খতিয়ান জরুরি
শুধু গাছ লাগালেই হল না। ভাল ফল পেতে হলে তার পরিচর্যা করতে হয়। কথাটা খাটে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের ব্যাপারেও। লগ্নির জায়গা এখন অনেক। বিভিন্ন জায়গায় লগ্নি করে গেলেই চলবে না। মাঝেমধ্যে করতে হবে তার পর্যালোচনা। প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে হবে উপযুক্ত ব্যবস্থা। আজকের আলোচনা এই ব্যাপারেই।
ব্যাঙ্কিং:
(১) একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলে খেয়াল রাখুন, প্রত্যেকটিতে যেন অন্ততপক্ষে বছরে এক বার টাকা জমা দেওয়া এবং তোলা হয়। তা না হলে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট অকার্যকর (ইনঅপারেটিভ) হয়ে পড়তে পারে।
(২) পাশবই নিয়মিত লিখিয়ে নিন। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি সাধারণত পাশবইয়ের বদলে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট পাঠিয়ে থাকে। স্টেটমেন্ট অনেক ক্ষেত্রে নিয়মিত পাওয়া যায় না। হারিয়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। এই ব্যাপারে অসুবিধা থাকলে লিখিত ভাবে স্টেটমেন্টের জায়গায় পাশবই চাইতে পারেন, যা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক দিতে বাধ্য বিনা মাসুলে।
(৩) পাশবই খুঁটিয়ে দেখে নিন, সব জমা বিশেষ করে ইসিএস-এর মাধ্যমে সমস্ত ডিভিডেন্ড এবং সুদ জমা হয়েছে কি না। না-হলে ব্যবস্থা নিন।
(৪) সময় মতো মেয়াদি জমা নবীকরণ করিয়ে নিন।
(৫) প্রতি বছর শেষ তারিখের আগেই লকার ভাড়া মিটিয়ে দিন।
(৬) ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড / এটিএম কার্ডের নম্বর, পিন নম্বর এবং পাসওয়ার্ড কোনও সুরক্ষিত জায়গায় লিখে রাখুন, যাতে কার্ড হারিয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে তা জানানো যায়। সাঙ্কেতিক ভাষায় এই সব নম্বর নিজের মোবাইলেও লিখে রাখা যেতে পারে।
(৭) পুরনো অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ‘কে ওয়াই সি’ সংক্রান্ত কাগজপত্র অর্থাৎ পরিচিতি, ঠিকানার প্রমাণ, ছবি ইত্যাদি দেওয়া না-হয়ে থাকলে তার ব্যবস্থা করুন।
(৮) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নমিনেশন করে রাখা বাঞ্ছনীয়।
(৯) প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যাকাউন্ট থাকলে অপ্রয়োজনীয় অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
(১০) বেশি পুরনো অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে সই না-মিললে ব্যাঙ্কের কাছে নতুন করে সই দাখিল করতে পারেন।
মিউচুয়াল ফান্ড:
(১) ন্যাভ্-এর দিকে নিয়মিত নজর রাখুন। যে-ফান্ড অন্যদের তুলনায় খারাপ করছে, সময় মতো তা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বিবেচনা করুন।
(২) দেখে নিন, মার্চ মাসের পর সব প্রকল্পের স্টেটমেন্ট এসেছে কি না।
(৩) এস আই পি করা থাকলে নজর রাখুন, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট টাকা আছে কি না।
(৪) কোনও ইউনিট বিক্রি করা হলে তার স্টেটমেন্ট আনিয়ে রাখুন। আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যাপারে প্রয়োজন হবে।
(৫) ইউলিপ-এ লগ্নি করা থাকলে চিন্তা করুন বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী ইক্যুইটি থেকে ঋ
ণপত্র বা উল্টোটা, অথবা ব্যালান্সড ফান্ডে সরে আসা (‘সুইচ ওভার’) উচিত কি না।
(৬) ডিভিডেন্ড ঘোষণার দিকে নজর রাখুন এবং দেখে নিন সব ডিভিডেন্ড ব্যাঙ্কে জমা পড়ল কি না।
বন্ড / ডিবেঞ্চার: সময় মতো সুদ আসছে কি না দেখে নিন। নজর রাখুন বাজার দরের দিকেও। মেয়াদ শেষ হলে ভাঙানোর ব্যবস্থা করুন।
শেয়ার:
(১) ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টে নমিনেশন করা না -থাকলে এ বার তা করিয়ে নিন।
(২) শুরু হে চ্ছডিভিডেন্ডের মরসুম। নজর রাখুন, কোন কোম্পানি কত ডিভিডেন্ড ঘোষণা করল এবং তা সময় মতো আপনার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ল কি না।
(৩) শুধু মাত্র শেয়ার-সূচক নয়, নিয়মিত নজর রাখুন নিজের হাতে থাকা শেয়ার ওঠাপড়ার উপর। সময়মত সিদ্ধান্ত নিন কেনা অথবা বিক্রি করার।
(৪) কেনার এক বছরের মধ্যে কোনও শেয়ার বিক্রি করে লাভ হলে তার উপর দিতে হয় শর্ট টার্ম ক্যাপিটাল গেন্স ট্যাক্স বা স্বল্প মেয়াদি মূলধনী লাভ-কর। লাভের উপর কোনও কর প্রযোজ্য হয় না, যদি এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে রেখে শেয়ার বিক্রি করা হয়।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং লগ্নির সব তথ্য কোনও এক জায়গায় নথিবদ্ধ করে রাখুন এবং তা জানিয়ে রাখুন নিকট কাউকে। সব লগ্নি যুগ্ম নামে রাখলে ভাল হয়। সম্ভব না-হলে অবশ্যই নমিনেশন করে রাখুন। ঠিকানার পরিবর্তন হয়ে থাকলে তা দ্রুত জানান সংশ্লিষ্ট সবাইকে। প্রবীণ নাগরিকেরা প্রয়োজন মনে করলে উইল করে রাখার কথা ভাবতে পারেন। এই ভাবে প্রতি মাসে কিছু সময় যদি সঞ্চয়ের খতিয়ান নেওয়ার কাজে ব্যয় করা যায়, তবে ভবিষ্যতে অনেক লোকসান এবং ঝামেলা এড়ানো সম্ভব হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.