কালনা মহকুমা হাসপাতাল
ডাক্তার নেই, অনাথ হাসপাতাল
না আছে চিকিৎসক, না টেকনিশিয়ান। কার্যত ‘অনাথ’ হয়ে পড়ে রয়েছে কালনা মহকুমা হাসপাতাল। সবচেয়ে করুণ অবস্থা মেডিসিন বিভাগের। কিন্তু কবে সুরাহা হবে, তা এখনও অজানা।
হাসপাতালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মেডিসিন বিভাগে আপাতত এক জনও চিকিৎসক নেই। প্যাথলজি বিভাগে আছেন মাত্র এক জন। সব সময়ে তাঁকে পাওয়াও যায় না। চোখ-কান-গলা বিভাগে টেকনিশিয়ানের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রয়োজনের তুলনায় কম চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও। স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগেও চিকিৎসক অপ্রতুল।
বর্তমান পরিকাঠামো অনুযায়ী হাসপাতালে তিন জন ওয়ার্ড মাস্টার প্রয়োজন। রয়েছেন দু’জন। ব্লাড ব্যাঙ্কে কোনও মেডিক্যাল অফিসার নেই। এরই মধ্যেই বৃহস্পতিবার অবসর নিয়েছেন এক বক্ষ বিশেষজ্ঞ। হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি বলেন, “মহকুমা হাসপাতালে মেডিসিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চিকিৎসক না থাকা বড় সমস্যা। সুরাহা চেয়ে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা মেটানো হবে বলে আশ্বাস মিলেছে।”
নিজস্ব চিত্র
কালনা মহকুমার পাঁচটি ব্লকের প্রায় দশ লক্ষ মানুষ ওই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। সংলগ্ন হুগলি ও নদিয়া জেলা থেকেও বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অস্ত্রোপচার ও বহির্বিভাগ-সহ মেডিসিন বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন মাত্র দু’জন। তাঁদের মধ্যে অমিত সরকার নামে এক জন মাস ছয়েক আগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বদলি হয়ে গিয়েছেন। সেই পদে অন্য কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে ৭ বা ১৪ দিনের জন্য চিকিৎসক নিয়ে এসে কাজ চলছিল। ইতিমধ্যে মাস দেড়েক আগে জয়ন্ত বিশ্বাস নামে অপর এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিজের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। অস্ত্রোপচার চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে মেডিসিন বিভাগে আর কোনও স্থায়ী চিকিৎসক রইলেন না। শুধু অমিতবাবূর জায়গায় দফায়-দফায় অন্য চিকিৎসক নিয়ে এসে কোনও রকমে কাজ চলছে।
গত শুক্রবার মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এক অস্থায়ী চিকিৎসক বাড়ি গিয়েছেন। ফলে, শনিবার থেকে মেডিসিন বিভাগ কার্যত চিকিৎসক-শূন্য হয়ে পড়ে। হাসপাতালে এসেও চিকিৎসা না পেয়ে বহু রোগী ফিরে যেতে বাধ্য হন। মেডিসিন বিভাগে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে রাখেন রোগীদের বাড়ির লোকজনেরা। হাসপাতালের তরফে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে সমস্যা মেটে।
এই পরিস্থিতিতে কোনও রকমে মেডিসিন বিভাগ সামাল দিচ্ছিলেন হাসপাতালের সুপার অভিরূপ মণ্ডল। কিন্তু স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে আজ, শনিবার থেকে তিনিও ১৪ দিনের ছুটিতে যাচ্ছেন। হাসপাতাল দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুভাষচন্দ্র মণ্ডলকে। তিনি বলেন, “জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশেই মহকুমা হাসপাতালের দায়িত্ব নিয়েছি।” সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমি নিজে দীর্ঘ দিন রোগী দেখি না। চেষ্টা করছি, যাতে দ্রুত মেডিসিনের চিকিৎসক পাওয়া যায়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.