ফ্ল্যাট বিক্রির নামে ‘অভিনব’ প্রতারণা
সিনেমার পর্দায় ‘খলনায়ক’ বোমান ইরানিকে এমন ভাবেই ঠকিয়েছিলেন নবীন নিশ্চল, বিনয় পাঠকরা!
পুলিশি তথ্য অনুযায়ী, অনেকটা সেই ছকেই শ’খানেক বিঘা জমির মালিক সেজেছিলেন বেহালার এক ব্যক্তি। উপনগরী গড়ে সেখানে কম দামে ফ্ল্যাট, জমি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফাঁকা ওই জমিতে ঘুরিয়ে আনা হত সম্ভাব্য ক্রেতাদের। টাকা দেওয়ার পরেই ভুল বুঝতে পারেন ক্রেতারা। তাঁদেরই কয়েক জনের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ মে ওই ব্যক্তি গ্রেফতার হন। পুলিশি হেফাজতে ছিলেন ওই ব্যক্তি। গত বুধবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করে আলিপুর আদালত।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম শুভেন্দু নস্কর। বেহালার সৌরীন রায় রোডে অফিস খুলে লোক ঠকানোর ব্যবসা ফেঁদে বসেন বছর পঞ্চান্নর শুভেন্দুবাবু। সংস্থার বিপণনের দায়িত্ব ছিল সুব্রত রায়ের উপরে। তিনিও গ্রেফতার হন। জামিনে ছাড়া পান তিনিও। পুলিশের দাবি, ওই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে টাকা খুইয়েছেন এক নামী ক্রিকেটার, সুপরিচিত চিকিৎসক, ব্যবসায়ীও।
অভিযুক্তের আইনজীবী বিনয় সিংহ অবশ্য তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, শুভেন্দুবাবুও প্রতারণার শিকার। অভিযোগকারীদের সঙ্গে সমস্যা মিটিয়ে নিতে চান তিনি। যাঁর যা প্রাপ্য, তা দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারণার ছক ছিল আনকোরা। পশ্চিম বিষ্ণুপুরের খড়িবেড়িয়ায় ১১০ বিঘা জমিতে আধুনিক উপনগরী হবে বলে প্রচার শুরু করেছিলেন শুভেন্দুবাবু। চলতি বাজারদর থেকে অবিশ্বাস্য কম দামে ফ্ল্যাট, জমি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
টাকা দেওয়ার আগে ফাঁকা ওই জমি দেখতেও যান ক্রেতারা। পুলিশ জানায়, খড়িবেড়িয়ার ওই জমির আসল মালিকানা স্থানীয় কিছু গ্রামবাসীর। টাকার লোভ দেখিয়ে আগে থেকেই তাঁদের শিখিয়ে রেখেছিলেন শুভেন্দুবাবুরা। খোঁজখবর নিতে যাওয়া ক্রেতাদের ওই বাসিন্দারা জানাতেন, জমির রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে। সেগুলির ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ রয়েছে শুভেন্দুবাবুর নামেই। ‘ভুয়ো’ নথিও তৈরি ছিল। তা দেখার পরে অবিশ্বাসের অবকাশই থাকত না। বছর আড়াই আগে এই ছকে ভুলেই বেহালার সৌরীন রায় রোডে শুভেন্দুবাবুর ‘প্ল্যানেট এক্সপোজার’ নামের সংস্থায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ঢালেন কলকাতার শ’দেড়েক বাসিন্দা। অভিযোগ, সময় কেটে গেলেও বিষ্ণুপুরের জমি আগের মতোই পড়েছিল। তা দেখে, শুভেন্দুবাবুর কাছে টাকা ফেরত চান ক্রেতারা। আশ্বাস মিললেও, টাকা মেলেনি। ইতিমধ্যে বেহালার পুরনো সংস্থা বন্ধ করে ঠাকুরপুকুরে নতুন নামে (প্রোজেক্ট ৫৮১ সি-পার্ক) ব্যবসা শুরু করেন অভিযুক্তেরা। বেহালা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ছ’জন। তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ শুরু করেন ওসি সুদীপ্ত নাগ ও এসআই অরিন্দম ভট্টাচার্য। এর পরেই শুভেন্দুবাবু এবং সুব্রত রায়কে গ্রেফতার করা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.