সর্ডিহায় ট্রাকে ধাক্কা, মৃত্যু ট্রেনের চালকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
জ্ঞানেশ্বরী নাশকতার সেই সর্ডিহা-বাঁশতলার কাছে প্রহরীহীন লেভেল ক্রসিংয়ে বালি-বোঝাই ট্রাককে ধাক্কা মারল প্যাসেঞ্জার ট্রেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সর্ডিহা ও বাঁশতলার মাঝে ইন্দ্রাবনির জঙ্গল-লাগোয়া এলাকার
ওই দুর্ঘটনার জেরে ট্রাকের চালক প্রাণে বাঁচলেও মারা যান ট্রেনটির চালক এ কে পাল (৪৫)। যাত্রীরা অক্ষত। প্রাথমিক ভাবে রেলের সূত্র জানাচ্ছে, প্রহরীহীন ক্রসিংয়ে ট্রাকটি চলে আসায় ট্রেনের চালক জরুরি-ব্রেক কষেন। ফলে ট্রাকে ধাক্কা মারলেও ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়নি। |
|
মৃত চালক |
চালকের তৎপরতায় ট্রেনের যাত্রীরা বড় বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচলেও তিনি নিজে বাঁচলেন না।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার জানান, খড়্গপুর থেকে টাটানগরগামী ট্রেনটি সন্ধ্যা ৭-২৫ নাগাদ সর্ডিহা স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রাকের একাংশ এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সর্ডিহা-ঝাড়গ্রামের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। টাটাগামী আপ স্টিল এক্সপ্রেসকে সর্ডিহা স্টেশনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম হাসপাতাল থেকে ট্রমা অ্যাম্বুল্যান্স দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিকে সর্ডিহায় নিয়ে আসা হয়েছে। ওই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রীদের স্টিল এক্সপ্রেসে তুলে গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেন রেল-কর্তৃপক্ষ। এর জন্য স্টিল এক্সপ্রেসকে প্রতিটি স্টেশনে থামানো হয়েছে। |
|
চলছে উদ্ধারকাজ। |
সর্ডিহার পরের স্টেশন বাঁশতলা। তার পর ঝাড়গ্রাম। ওই ট্রেনের যাত্রী, ঝাড়গ্রামের দেবকুমার বেরা বলেন, “সর্ডিহা ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিকট শব্দ শুনি। সঙ্গে আগুনের ফুলকি। উড়ে আসা বালি চোখে-মুখে ঢুকে যায়। প্রবল ঝাঁকুনিতে যাত্রীদের কেউ কেউ কামরার ভিতরে এ-দিক সে-দিক ছিটকে পড়েন।” কিছুটা এগিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়। কামরার আলোও নিভে যায় বলে জানিয়েছেন দেবকুমার। তাঁর কথায়, “নেমে দেখি, ট্রাকের ডালার অংশ ইঞ্জিনের মধ্যে সেঁধিয়ে গিয়েছে। ইঞ্জিনের ভিতরে বালিচাপা ট্রেনের চালক।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীরাই চালককে টেনে বের করেন। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাত ৮টা নাগাদ মানিকপাড়া থেকে পুলিশ ও আধা-সেনা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরে ঝাড়গ্রাম থেকে আরও বাহিনী আসে। |
ছবি: দেবরাজ ঘোষ |
|