|
|
|
|
প্রশাসনকে নিরপেক্ষ হওয়ার ডাক বিমানের |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
পুরভোটের শেষবেলার প্রচারে প্রধান শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের সন্ত্রাসের অভিযোগেই সরব হলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। শুক্রবার তিনি পাঁশকুড়া ও হলদিয়ায় পদযাত্রা করেন। এই প্রথম বাম-নেতৃত্ব দুই পুর-এলাকায় পদযাত্রার কর্মসূচি নিলেন। এত দিন তেমন কোনও জনসভা বা বড় মিছিল করতে না পারার জন্যও বাম নেতারা ‘তৃণমূলের সন্ত্রাস’কেই দায়ী করেছেন। হলদিয়ার শ্রমিকভবনে স্থানীয় পুরপ্রধান এবং দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমালিকা পণ্ডাশেঠকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অভিযোগ তোলেন বিমানবাবু। |
|
শেষবেলায় পাঁশকুড়ায় জিনাত আমনকে এনে তৃণমূলের তারকা-প্রচার। |
পাশাপাশি, রাজ্য প্রশাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, “নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা রাজ্য প্রশাসনের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা। তাদেরই সন্ত্রাস মোকাবিলা করে সুষ্ঠু ভাবে ভোট করাতে হবে।
ভোটের আগে বহিরাগতদের এলাকা থেকে বের করে দেওয়াটাও পুলিশ-প্রশাসনের কর্তব্য।”
পাঁশকুড়ায় বহিরাগতদের ঢুকিয়ে তৃণমূল অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে বলে শুক্রবার রাজ্যের মুখ নির্বাচনী আধিকারিক মীরা পাণ্ডের কাছে প্রদেশ কংগ্রেসও অভিযোগ জানিয়েছে। প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ভোটাররা যাতে বুথে আসতে না পারেন, সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা আটকে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। বিমানবাবুর সুরে প্রদীপবাবুরও আর্জি, “ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে বুথে যেতে পারেন, তার ব্যবস্থা হোক।”
হলদিয়ায় বিমানবাবু বলেন, “শুধু আমরা নয় কংগ্রেস, বিজেপিও আক্রান্ত। দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি-সহ কেন্দ্র-রাজ্যের নানা জনবিরোধী নীতির ফলে মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। |
|
হলদিয়ায় মিছিল তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর (বাঁ দিকে)। হলদিয়াতেই বামেদের প্রচারে বিমান বসু (ডান দিকে)। |
এ সবের প্রতিবাদ বন্ধেরও প্রয়াস চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। এত সন্ত্রাস সত্ত্বেও হলদিয়া-পাঁশকুড়ার পুরভোটে বাম-প্রার্থীদের কেউ কিন্তু লড়াই থেকে সরেননি।” বিমানবাবুর সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার, মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী প্রতিম চট্টোপাধ্যায়, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব প্রমুখ। বাম নেতারা জানান, শুধু হলদিয়ায় পুরভোটের আগের সন্ত্রাস নিয়ে ৪৬টি অভিযোগ দায়ের করতে হয়েছে পুলিশের কাছে। তবে বিহিত মেলেনি বলেই তাঁদের অভিযোগ। এর পরেও রাজ্য পুলিশেই আস্থা রেখে বিমানবাবুর কটাক্ষ, “ওঁদের (তৃণমূলের) মতো ইউএনও (রাষ্ট্রসঙ্ঘ) থেকে পুলিশ আনতে বলব না। রাজ্য পুলিশই নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুক।” হলদিয়ার মঞ্জুশ্রীতে তৃণমূলের শেষ প্রচার-সভায় বিমান বসুকে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীও। ‘কুৎসিত কথা’ বলেন বলে বিমানবাবুকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু সিপিএম নেতার প্রতি নিজেও কটু মন্তব্যই করেন। তাঁর কথায়, “এক জনের মিছিলে ময়না, নরঘাট থেকে লোকেদের আনা হয়েছিল। হলদিয়ার মানুষ যোগ দেননি।” পাঁশকুড়ায় আবার তৃণমূল এ দিন প্রচারে এনেছিল হিন্দি চলচ্চিত্রের এক সময়ের অভিনেত্রী জিনত আমনকে।
|
নিজস্ব চিত্র।
|
কাল ভোট দুই পুরসভায় |
রবিবার ৭টা থেকে ৩টে অবধি ইভিএমে ভোটগ্রহণ। গণনা ও ফল মঙ্গলবার। |
হলদিয়া |
• ১৯৯৭ থেকে পুরসভা।
টানা ক্ষমতায় বামফ্রন্ট।
• এ বার ওয়ার্ড ২৬টি। ১, ৪, ৯, ১২, ১৫, ১৯, ২৩ নং (মহিলা), ৫, ২২ নং (তফ মহিলা),
৭, ১৮ ও ২৬ নম্বর (তফসিলি) সংরক্ষিত।
• মোট প্রার্থী এ বার ৯৩। বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের প্রার্থী সব ওয়ার্ডে, ১৮ ওয়ার্ডে বিজেপি,
১৭টি ওয়ার্ডে
লড়ছে কংগ্রেস। বাকি ৬ ‘নির্দল’ প্রার্থী।
• বিদায়ী পুরবোর্ডে বামেরা ছিল ১৯, তৃণমূলের ৭।
• ভোটার ১ লক্ষ ১৭৭৪৭। মহিলা ৫৫৩২৬।
• পুরুষ ৬২৪২১। মোট বুথ থাকছে ১৪৮টি।
জরুরি ফোন নম্বর
• শিল্পা গৌরিসারিয়া, এসডিও ৮৩৪৮৫৯৫৭২৬।
• অমিতাভ মাইতি, এসডিপিও ৯৪৭৪৮৩২৮৩৩। |
পাঁশকুড়া |
• ২০০৭ থেকে ক্ষমতায়
তৃণমূল-জোট। ’০২-এ
ক্ষমতা পেয়েছিল বামেরা।
• এ বার ওয়ার্ড ১৭টি। ৭ (তফ), ২, ৩, ৬, ১০,
১৩, ১৬ নম্বর (মহিলা) সংরক্ষিত।
• মোট প্রার্থী এ বার ৭৪। তৃণমূল ও বাম-প্রার্থীরা
সব আসনে। ১৫টি করে ওয়ার্ডে কংগ্রেস-বিজেপি।
বাকি ১০ জন ‘নির্দল’। বিদায়ী পুরবোর্ডে তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট ১০, বামেরা ৭।
• ভোটার ৩৪ হাজার ৭৪০।(মহিলা ১৬ হাজার ৩৯৫)
(পুরুষ ১৮ হাজার ৩৪৫)। মোট বুথ থাকছে ৪৩টি।
জরুরি ফোন নম্বর
• শশীকুমার চৌধুরী, এসডিও ৮৩৪৮৫৯৫৭১২।
• পারিজাত বিশ্বাস, এসডিপিও ৯৮৩৬০২০৬০১। |
বিমান বসু: শুধু আমরা নয় কংগ্রেস, বিজেপিও আক্রান্ত।
এত সন্ত্রাস সত্ত্বেও বাম-প্রার্থীদের কেউ কিন্তু লড়াই থেকে সরেননি। |
শুভেন্দু অধিকারী: সন্ত্রাস তো ওরাই করেছে। এখন মায়াকান্না চলছে।
ওদের অপরাধের জবাব মানুষ দিয়েছেন, আবার দেবেন। |
হলদিয়ার বাসিন্দা অমিত বৈতালিক: রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আর্জি,
সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখুন। নিরপেক্ষ ভোটদানের সুযোগ চাই। |
|
|
|
|
|
|