গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্প নিয়ে বিহারে বিস্তর অভিযোগ। অজস্র অভিযোগ ইন্দিরা আবাস যোজনা নিয়েও। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ পটনায় এসে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে কথাতেও প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। তখন তিনি বিহার সরকারকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শও দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পের টাকা নিয়ে পঞ্চায়েতের কর্তারা গাড়ি কিনেছেন। টাকা নয়ছয় হয়েছে বলেও শোনা গিয়েছে। সেবাযাত্রায় বেরিয়ে এই দুই কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে একাধিক অভিযোগও শুনতে হয়েছে খোদ নীতীশকেও।
কেন্দ্রীয় এই দুই প্রকল্পের কাজে স্বচ্ছতা আনতে তাই এ বার রাজ্যের গ্রামীণ উন্নয়ন দফতর থেকে প্রতিটি জেলাশাসকের কাছে এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতি বুধবার ‘গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা দিবস’ পালন করতে হবে। অর্থাৎ প্রতিটি সপ্তাহের এই দিনটিতে পঞ্চায়েতগুলিতে গিয়ে গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্প এবং ইন্দিরা আবাস যোজনার সরেজমিনে পর্যালোচনা করতে হবে। এবং ওই দিনই রিপোর্ট পাঠাতে হবে জেলাশাসকের কাছে। আদেশনামায় বলা হয়েছে, দেখতে হবে ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা নিয়ে আদৌ ঘর তৈরি করা হয়েছে কিনা।
গ্রামীণ উন্নয়ন দফতরের সচিব এ সন্তোষ ম্যাথিউজ বলেন, “প্রতিটি বুধবারকে গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা দিবস পালন করার জন্য বলা হয়েছে। এই কাজ দেখার জন্য একজন অতিরিক্ত জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করতে হবে। সেখানে পাশের ব্লকের দু’জন বিডিও, পঞ্চায়েত রোজগার সেবক এবং জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার থাকবে।” এই ব্যাপারে একজন ডিভিশনাল কমিশনার জানান, নির্দেশিকায় বলা হয়েছে তদন্তের জন্য ব্লক ঠিক করতে হবে আগের দিন। কারা দলে থাকবেন, যে দিন যাওয়া হবে সেদিনই তাঁদের নাম জানানো হবে। ওই নির্দেশিকায় ২০১০-১১ এবং ২০১১-১২ সালের রিপোর্ট নিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। কমিশনার বলেন, “যদি দেখা যায় কোনও ব্যক্তি টাকা নিয়ে ঘর তৈরি করেননি তা হলে ঘটনাস্থলেই সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বক্তির বিরুদ্ধে নোটিস দিতে হবে।” এ ছাড়াও যদি দেখা যায় টাকা অনুমোদন করার ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম হয়েছে সে ক্ষেত্রে সবিস্তার রিপোর্ট নিয়ে জেলাশাসকের কাছে পাঠাতে হবে।
কমিশনার আরও বলেন, “এই রিপোর্ট নিয়ে গ্রামে সভা ডেকে গ্রামবাসীদের সব জানাতে হবে। সেখানে তাঁদের পরামর্শও শুনতে হবে।” তবে যা করা হবে তার একটি তথ্য রাখতে হবে। গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে বলা হয়েছে, প্রামাণ্য তথ্য হিসেবে পুরো বিষয়টির ‘ভিডিও রেকর্ড’ করতে হবে। এরপর পুরো বিষয়টি সরকারি ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। |