এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান চালকদের ধর্মঘটের ২৬ দিনের মাথায় চালক ও কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের বেতন, ভাতা, কর্মক্ষেত্রে উন্নতির প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত করতে চার সদস্যের একটি প্যানেল গঠন করা হয়েছে। এই বিষয়ে ৪৫ দিনের মধ্যে প্যানেলকে কাজ শুরু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। যদিও আজ রাত পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনও খবর চালকদের তরফে পাওয়া যায়নি। তবে ‘ইন্ডিয়ান পাইলটস গিল্ড’ (আইপিজি) সূত্রের খবর, বিমান সংস্থার সঙ্গে ধর্মঘটীদের মধ্যে ‘দূরত্ব’ কমছে। শীঘ্রই ধর্মঘট উঠে যেতে পারে, এমনও আশা করছেন অনেকে।
আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ জানিয়েছেন, কেন্দ্র বিচারপতি এম ধর্মাধিকারীর নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্ট মেনে নিয়েছে। আর সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, এগজিকিউটিভ চালকদের বেতন ঠিক করা হবে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক এন্টারপ্রাইজ’ (ডিপিই)-এর নীতি অনুযায়ী। আর শিল্প-নীতি অনুযায়ী অন্য চালকদের বেতন ঠিক করা হবে। তবে চালকরা যদি অবিলম্বে ধর্মঘট প্রত্যাহার না করে তা হলে চালকদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অজিত। |
সাংবাদিক বৈঠকে বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ। ছবি: পি টি আই |
তিনি বলেছেন, “সুপারিশ কার্যকর করতে সরকার এয়ার ইন্ডিয়াকে ৩০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। কিন্তু এটা জনগণের টাকা। এখনই ধর্মঘট প্রত্যাহার না করলে কেন্দ্র আর কোনও টাকা তাদের দেবে না।” সেই সঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান এড়াতে প্রয়োজনে বাইরে থেকে কিছু চালককে ভাড়া করা হতে পারেও বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। যদিও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছে আইপিজি। তারা জানিয়েছে, সরকারের এই সিদ্ধান্তে সাবেক ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের চালকদের প্রতি কেন্দ্রের পক্ষপাতই স্পষ্ট হয়ে উঠল।
২০০৭-এ এয়ার ইন্ডিয়া এবং সাবেক ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স মিলে তৈরি হয় বর্তমান এয়ার ইন্ডিয়া। কিন্তু সাবেক ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের কর্মচারীদের সঙ্গে পুরনো এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মচারী বেতন ও অন্য সুযোগ সুবিধার কিছু বৈষম্য ছিল। সেই সঙ্গে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের চালকরা বোয়িং ৭৭৭ বা ড্রিমলাইনারের মতো উন্নত প্রযুক্তির বিমান চালনার প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলেও এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মচারীরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সেই বৈষম্য মেটাতে ধর্মঘট শুরুর ২৬ দিন পরে পদক্ষেপ করতে হল কেন্দ্রকে। অজিত জানান, কাজ অনুযায়ী অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার পদ্ধতি বন্ধ করা হবে। এতে চালকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হচ্ছিল। এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান কমাতে আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও জানান অজিত। আন্তর্জাতিক যে উড়ানগুলিতে এয়ার ইন্ডিয়ার লাভ বেশি হয় শুধু সেই পথেই উড়ান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। |