ঢাকার ঘোষণা
অর্পিত সম্পত্তি চাইতে পারবেন না ভারতীয়রা
ভারতের নাগরিকেরা বাংলাদেশে তাঁদের ফেলে আসা (অর্পিত) সম্পত্তির জন্য দাবি জানাতে পারবেন না। তবে বাংলাদেশে তাঁদের কোনও উত্তরাধিকারী বা অংশীদার থাকলে এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হলে অর্পিত সম্পত্তির জন্য দাবি জানাতে পারেন।
বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব ইব্রাহিম হোসেন খান আজ জানান, নতুন সংশোধিত ‘অর্পিত সম্পত্তি আইন ২০১২’ নিয়ে নানা মহলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সংসদে পাশ হওয়া আইন শুধু বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার এই আইন করেছে। সচিব জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নাগরিকরাই যে অর্পিত সম্পত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, আইনের মুখপত্রে তার উল্লেখ রয়েছে। অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক ও বিশিষ্ট আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী জানিয়েছেন, দেশ ভাগের সময়ে যে সব হিন্দু প্রাণের দায়ে জমি-বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেরই আত্মীয়-স্বজন এখনও বাংলাদেশে থাকেন। তাঁরা অর্পিত সম্পত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখতে পারেন আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা প্রভৃতি দেশের নাগরিকেরা। সেখানে বসবাসকারী হিন্দুরাও বাংলাদেশে ফেলে যাওয়া সম্পত্তির জন্য দাবি জানাতে পারবেন।
কলকাতা থেকে অর্পিত সম্পত্তির মালিকদের একটি সংগঠন জুনে বাংলাদেশে আসছেন, সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে নানা মহলে প্রতিক্রিয়া হয়। বিরোধীরা প্রচার করতে থাকে, শেখ হাসিনার সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করে ভারতের হিন্দুদের হাতে বাংলাদেশের বিপুল জমি ও সম্পত্তি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ঢাকায় বিক্ষোভও দেখায় কয়েকটি সংগঠন।
অমর্ত্য সেন সম্প্রতি লন্ডনে মন্তব্য করেন, দেশ ভাগের সময়ে হিন্দু জোতদার-জমিদারেরা বিপুল সম্পত্তি ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই ভূমি সংস্কার সম্পন্ন হয়। কারণ যে সব গরিব কৃষক এই জমি চাষ করতেন, তাঁদের হাতেই জমির দখল চলে আসে। বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদের মতে, বাংলাদেশ এখন এই ভূমি সংস্কারের সুফল পাচ্ছে। এই মন্তব্যকে উল্লেখ করে কিছু বিশিষ্ট মানুষও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সরকারের নতুন আইনে ভূমি সংস্কারের সুফল থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হতে পারেন। আবার সরকার সমর্থক কিছু সংগঠনের মতে, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে শেখ হাসিনা তাঁদের দখল হওয়া সম্পত্তি ফেরতে যে ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপ করেছেন, অবাঞ্ছিত বিতর্কে তা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভূমি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব আইনটির ব্যাখ্যা করে বিতর্ক মেটাতে এগিয়ে এলেন। তাঁর কথায়, যে কোনও দেশের আইন প্রণয়ন হয় তার নাগরিকদের জন্য। ব্রিটেনের আইন যেমন ব্রিটিশদের জন্য, বাংলাদেশের আইনও তেমনই এ দেশের বাসিন্দাদের জন্য। ভূমি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেউ অর্পিত সম্পত্তির জন্য দাবি না জানালে তার মালিকানা সরকারের হাতে চলে আসবে। সেই সম্পত্তি বিক্রি বা লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এত দিনের দখলদারকেই অগ্রাধিকার দেবে সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.