রাস্তায় গাড়ি কম, ভোগান্তি
বনধের প্রভাবই পড়েনি শিল্পাঞ্চলে
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিজেপি তথা এনডিএ-এর ডাকা বনধের তেমন প্রভাব পড়ল না দুই মেদিনীপুরের শিল্পাঞ্চলে। অধিকাংশ কারখানা খোলা ছিল। অন্য দিনের মতোই কাজে যোগ দেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। তবে, যান চলাচল স্বাভাবিক না-থাকায় অনেকের কাজে আসতে সমস্যা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শিলাঞ্চল ও পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলে বনধকে ঘিরে তেমন অশান্তিও হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে হলদিয়ার আইওসি, পেট্রোকেম, মিৎসুবিশি প্রভৃতি কারখানার সামনে সভা করেন তমলুকের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর দাবি, “শিল্পাঞ্চলের সব কর্মীই কাজে যোগ দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ বনধ উপেক্ষা করেছেন। তাই জনজীবন স্বাভাবিক থেকেছে।”

বনধে এগরা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি বাস।

ঝাড়গ্রাম শহরও ছিল সুনসান।
তবে সকাল থেকেই যান চলাচল ব্যহত হয়েছে। দুই মেদিনীপুরের কোথাও বেসরকারি বাস চলেনি। সকালের দিকে কয়েকটি সরকারি বাস পথে নামে। খড়্গপুরের ইন্দায় বনধ সমর্থকেরা একটি সরকারি বাস ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। রাস্তায় বাস থামিয়ে কাচ ভাঙা হয়। ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ভাঙচুরে জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বিজেপি-র অবশ্য দাবি, ওই ঘটনার সঙ্গে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা জড়িত নন। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “মিছিল হয়েছে। তবে আমাদের কেউ বাস ভাঙচুর করেনি।” তাঁর দাবি, “সাধারণ মানুষ বনধের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।” খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলে কেন বনধের প্রভাব পড়ল না? বিজেপি-র জেলা সভাপতি বলেন, “কয়েকটি কারখানা জোর করে খোলা হয়েছে বলে শুনেছি।”

স্বাভাবিকই ছিল হলদিয়ার দুর্গাচক।

বনধের দিনও ব্যস্ত ঘাটাল মহকুমাশাসকের দফতর
 
বনধের দিনে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে দুই মেদিনীপুরেই তৎপর ছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সরকারি অফিসগুলোর সামনে নজরদারি চলে। কাঁথি, এগরা থেকে ঝাড়গ্রাম, ঘাটাল-সর্বত্রই সরকারি অফিস খোলা ছিল। তবে হাজির ছিল অন্যান্য দিনের থেকে একটু কম। অধিকাংশ অফিসে সাধারণ মানুষেরও তেমন ভিড় ছিল না। যান চলাচল না-করার ফলেই এই পরিস্থিতি। এ দিন সকালে তমলুকে জেলা আদালতের সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকেরা। হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের মিলননগর, রাধামণি, কাকগেছিয়া, খঞ্চিবাজার এলাকায় অবরোধ হয়। সুতাহাটা-সহ রাজ্য সড়কের কয়েক জায়গাতেও অবরোধ হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। তমলুকে রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখাগুলি বন্ধ ছিল। একই ছবি চোখে পড়ে খড়্গপুর, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, হলদিয়ায়। ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা থেকে শুরু ক্ষীরপাই, রামজীবনপুরে দোকানপাট মোটের উপর খোলা ছিল।

বুধবার সকাল সাড়ে দশটা। ফাঁকা মেদিনীপুরের এলআইসি চক।

কর্মব্যস্ত কালেক্টরেট
ভাঙচুর, সরকারি অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া, অশান্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের অন্তর্গত এলাকা থেকে এ দিন ৪৭ বনধ-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরি বলেন, “যেখানে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেখানেই পুলিশ পদক্ষেপ করেছে।” এ দিকে, পুলিশের এই তৎপরতা কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতির অভিযোগ, অনেক জায়গায় পুলিশই জোর করে অফিস খুলতে বাধ্য করেছে। তাঁর কথায়, “বনধ ব্যর্থ করতে পুলিশ অতি-তৎপরতা দেখিয়েছে।” বিজেপি’র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুকুমার দাস বলেন, “বনধের প্রতি মানুষের নৈতিক সমর্থন ছিল। তাই বনধ সফল হয়েছে।”

বনধ সফল করার চেষ্টা, মেদিনীপুরের কেরানিতলায়

স্কুলেও চেনা ছন্দ
জঙ্গলমহল মহল এলাকায় বনধের মিশ্র প্রভাব পড়ে। ঝাড়গ্রাম, লালগড়, বেলপাহাড়ির দোকানপাট বন্ধ ছিল। ঝাড়গ্রামে অবশ্য মুখ্য ডাকঘর খোলা ছিল। নয়াগ্রাম, সাঁকরাইলেও বেশ কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। বনধের ভাল প্রভাব পড়ে গোপীবল্লভপুর-১ ব্লক এলাকায়। এখানে বিজেপি’র প্রভাব রয়েছে। ঝাড়গ্রামের বিজেপি নেতা প্রকাশ মহাপাত্র বলেন, “পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। তাই মানুষ বনধের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। কেন্দ্র ও রাজ্যের দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।”

ছবি: কিংশুক আইচ, কৌশিক মিশ্র, দেবরাজ ঘোষ।, সৌমেশ্বর মণ্ডল, আরিফ ইকবাল খান ও রামপ্রসাদ সাউ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.