সাফল্যের মুখ |
|
দারিদ্রের মেঘ সরিয়ে মাধ্যমিকে উজ্জ্বল সূর্য |
এক চিলতে ঘরে হ্যরিকেনের আলোতেই তার পড়া। বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারে বাবা অমিতবাবু ও মা কমলিনীদেবী চাষবাস ও দিনমজুরি করেন। এই দারিদ্রকে উপেক্ষা করেই এগোতে চায় শীপুর গ্রামের বাসিন্দা সূর্যকিরণ দাস। এগরার শীপুর কেশবেশ্বর হাইস্কুলের ছাত্র। প্রাপ্ত নম্বর ৬১১। প্রিয় বিষয় বিজ্ঞান। গবেষণা করতে চায় ভবিষ্যতে। ক্রিকেট খেলে ও রহস্য রোমাঞ্চ কাহিনী পড়ে অবসর কাটাতে ভালোবাসে। অভাবের সংসারে পড়ার ফাঁকে বাবা-মার সঙ্গে মাঠেও যেতে হয়েছে সূর্যকে। গ্রামেই সামান্য টিউশন পড়েছে। ভালো স্কুলের ছাত্রাবাসে থেকে পড়তে চায় সে। প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু কর বলেন, “দারিদ্রের মেঘে ঢাকা পড়েছে সূর্য। মেঘ সরলে তার মেধার বিচ্ছুরণ হবেই।”
|
বৈজ্ঞানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে রিতম |
নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণপুর মিশনে পড়তে চায় পটাশপুর নেকুড়শুনি কৃষি শিল্প শিক্ষাসদনের ছাত্র রিতম পাল। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৪৮। বাবা কৃষ্ণপদ পাল অন্ধ্রপ্রদেশের একটি সংস্থায় শ্রমিকের কাজ করেন। সামান্য চাষ জমি রয়েছে। মা লিপিকাদেবী গৃহবধূ। স্থানীয় বাবুই দাঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা রিতম ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখে বৈজ্ঞানিক হওয়ার। বিবেকানন্দ ও আইনস্টাইন তার আদর্শ। প্রিয় বিষয় ভৌত বিজ্ঞান ও গণিতে পুরো নম্বর পেয়েছে সে। ক্রিকেট খেলা ও গোয়েন্দা কাহিনী পড়তে ভালবাসে। ক্লাসের ফাঁকে স্কুলের শিক্ষক ও বাড়িতে মায়ের কাছেই পড়েছে সে। প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ গিরি বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত গ্রামে নানা সুযোগ সুবিধার অভাবে রিতম আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। সুযোগ সুবিধা পেলে ও অনেক বড় হবে বলে আশা করি।”
|
অভাবের কাছে হার না মেনে সফল রাহুল |
পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমে এখন অভাবের মধ্যেও আনন্দের হাট। আশ্রমের আবাসিক রাহুল মান্না মাধ্যমিকে ৫৯৮ নম্বর পেয়েছে। জল-বসন্তে আক্রান্ত রাহুল ‘সিক’ বেডে শুয়ে পরীক্ষা দিয়েও স্টার আদায় করে নিতে পেরেছে। এই কৃতিত্বের জন্য সে কৃতজ্ঞতা জানাতে চায় আশ্রমের প্রধান বলরাম করণকে। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছে রাহুল। মা পরিচারিকার কাজ করে দিন গুজরান করেন। রাহুল বলে, “ছোটবেলাতেই হারিয়ে যেতাম যদি না উনি আশ্রমে নিয়ে আসতেন। উনিই শিখিয়েছেন লড়াই না করলে সাফল্য আসে না। আশ্রমের অন্য ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আমাকেও প্রতিপালন করতে বাড়ি-বাড়ি ভিক্ষে করেছেন। দেবতা স্বরূপ মানুষটি বাবা মায়ের অভাব মিটিয়েছেন তার ভালোবাসা দিয়ে।’’ এই আনন্দের হাটে অন্য আশ্রমিকরা নিজেদের পরিচর্যা করা বাগানের ফুল-পাতার স্তবক দিয়ে রাহুলকে সংবর্ধনা দিতে ভোলেনি। |
|