মেদিনীপুর মেডিক্যাল
এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ নিয়ে বিতর্ক
টাকা এসেছিল এক খাতে, আর খরচ হয়েছে অন্য খাতে। অনেক ক্ষেত্রে আবার টেন্ডার ছাড়াই কাজ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের এ ধরনের নানা পদক্ষেপ নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন (এনআরএইচএম) প্রকল্পে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা হাসপাতালের দেখভাল, শৌচাগার সংস্কার, নতুন সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি-সহ বিভিন্ন কাজে খরচ করা হয়েছে। এক খাতের টাকা কেন হাসপাতাল দেখভালে খরচ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ আধিকারিক। যদিও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শুদ্ধধন বটব্যাল অবশ্য বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনেই সব কাজ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কলেজ কাউন্সিলের অনুমোদনও রয়েছে।” অধ্যক্ষের এই বক্তব্যে ‘বিতর্ক’ কিন্তু থামছে না।
কর্তৃপক্ষের দাবি, আগে ওয়েস্টবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন (ডব্লুবিআইআইডিসি) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দেখভাল করত। কোথাও সংস্কার, মেরামতির প্রয়োজন হলে তারাই কাজ করত। এ জন্য আলাদা ভাবে অর্থ বরাদ্দ হত। এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই কলেজ কর্তৃপক্ষকে সব দিক দেখতে হচ্ছে। সমস্যার কথা জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। পরিস্থিতি দেখে কলেজ ও হাসপাতাল ভবনটি পূর্ত দফতরকে হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে। এর ফলে সংস্কার, মেরামতির কাজ পূর্ত দফতরই করবে। হাসপাতালের উন্নতির জন্যই অর্থ বরাদ্দ করে এনআরএইচএম। বরাদ্দ অর্থের খরচ দেখানো গেলে এই প্রকল্পে ফের অর্থ পেতেও সমস্যা হয় না। কিন্তু, গত এক বছরে হেলথ-মিশন প্রকল্পের অর্থেই হাসপাতাল দেখভালের কাজ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার টেন্ডার ছাড়াই কাজ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ। মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে চিঠি লিখে এই খরচের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
ঠিক কী কী খাতে খরচ হয়েছে এই প্রকল্পের টাকা? জানা গিয়েছে, গার্লস হস্টেল সম্প্রসারণে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা, গাড়ি রাখার নতুন শেড তৈরিতে প্রায় ২ লক্ষ টাকা, নতুন সাইকেল-স্ট্যান্ড তৈরির জন্য প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা, গ্রিল গেট-সহ অন্য পরিকাঠামোগত কিছু কাজের জন্য প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা, কয়েকটি শৌচাগার সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা, নতুন কিছু বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কেনা এবং মেরামতের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা, কেমিক্যাল এবং অন্য কিছু দ্রব্য কেনার জন্য প্রায় ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে খরচের পরিমাণ ৩৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। অথচ হাসপাতাল সূত্রে খবর, হেলথ-মিশন প্রকল্পে এই অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল প্রয়োজনীয় কিছু আসবাব ও নির্দিষ্ট সরঞ্জাম কেনার জন্য। এই সব কাজ যখন হয়, তখন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন সুকুমার মাইতি। কেন এ ভাবে এক খাতের টাকা অন্যতে খরচ করা হল? প্রাক্তন অধ্যক্ষ বলেন, “২০১০ সালের অক্টোবর থেকে হাসপাতাল দেখভালের জন্য অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না। ডব্লুবিআইআইডিসি কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ না হলে সমস্যা হবে। বিশেষ করে, এমসিআইয়ের পরিদর্শনের সময়ে জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ করতে হয়েছে।” তাঁর কথায়, “কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত করেই সব পদক্ষেপ করা হয়েছে।” একই বক্তব্য বর্তমান অধ্যক্ষ শুদ্ধধন বটব্যালের। তিনি বলেন, “হাসপাতাল দেখভালে অর্থ বরাদ্দ হলে এই সমস্যা হত না।” কিন্তু টেন্ডার ছাড়া কি কাজ করানো সম্ভব? এ ক্ষেত্রে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, জরুরি ভিত্তিতে সরকারি নিয়ম মেনেই কাজ হয়েছে। এতে অন্যায়ের কিছু নেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.