নেতার স্ত্রীর হার চুরি হতেই তৎপর পুলিশ, গ্রেফতারও |
অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে যে পুলিশি ‘তৎপরতা’র আশায় ছিলেন বাসিন্দারা, পাঁচ মাসে একাধিক ঘটনায় তার দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। অবশেষে এক তৃণমূল নেতার স্ত্রীর গলার হার ছিনতাইয়ের ঘটনার পরে সেই তৎপরতার দেখা মিলল। বৃহস্পতিবার বিধাননগরে এই ছিনতাইয়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অপরাধীদের ধরল পুলিশ। উদ্ধার হল হারটিও।
এ দিনের ঘটনায় বাবু আমিন ওরফে লঙ্কা ও শুভঙ্কর বিশ্বাস ওরফে বোতল নামে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা উল্টোডাঙার বাসন্তী কলোনির বাসিন্দা। সকালে এবি-এসি মার্কেট থেকে বাজার করে ফিরছিলেন এএ-৯০ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা, তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ রাধিকারঞ্জন প্রামাণিকের স্ত্রী মঞ্জুলিকাদেবী (৭২)। তিনি জানান, বাড়ির কাছে আসতেই পিছন থেকে তাঁর গলার হার ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা। গলায় আঘাত পান তিনি। এক বাসিন্দা ধাওয়া করলেও ধরা যায়নি দুষ্কৃতীদের। যদিও পুলিশ কাছেই ছিল বলে দাবি স্থানীয়দের।
খবর পেয়ে দ্রুত বিধাননগর পুলিশের আধিকারিকেরা যান। নজরদারি ক্যামেরা ও নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধান মেলে দুষ্কৃতীদের। বিকেলের মধ্যেই লাবণি থেকে এক দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশ। পরে আরও এক জন ধরা পড়ে। মঞ্জুলিকাদেবী বলেন, “অন্যদের সতর্ক হতে বলতাম, আজ আমার সঙ্গেই এই ঘটনা ঘটল।”
এক মাস পেরিয়েও বিধাননগরের এডি ব্লকের ডাকাতির কিনারা হয়নি। বুধবার এক ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে ধরে বাসযাত্রীরা পুলিশের হাতে তুলে দেন। দুপুরে ময়ূখ ভবনে এক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের চেম্বার থেকে ল্যাপটপ-সহ ব্যাগ খোয়া যায়, রাতে জিডি মার্কেটের বাইরে একটি দোকানে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। গত পাঁচ মাসে কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশ সাফল্য পেলেও কিনারা হয়নি চুরি, ছিনতাই, কেপমারির একাধিক ঘটনার।
বাসিন্দাদের সংগঠন ‘বিধাননগর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “সদিচ্ছা থাকলে পুলিশ পারে, এ ঘটনা তার প্রমাণ।” তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভিআইপি-র ক্ষেত্রে যে পুলিশি তৎপরতা দেখা গেল, সাধারণের ক্ষেত্রে তা নজরে আসে না। তাই পুলিশের এই ‘সাফল্যে’ আতঙ্ক কমেনি। বিধাননগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ আগেও তৎপর ছিল। কোনও ঘটনায় দ্রুত সাফল্য মেলে, কিছু ক্ষেত্রে দেরি হয়। ভিআইপি আর সাধারণে প্রভেদ করা হয় না।” |