আরও গুরুত্ব গ্রাহক-সুবিধায়
রোমিং উঠে ব্রডব্যান্ডে গতি
‘স্বচ্ছ’ টেলি-নীতিতে
উপিএ জমানার টেলিকম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এখনও মামলা চলছে আদালতে। সংসদের ভিতরে-বাইরে বিষয়টি নিয়ে অবিরত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন বিরোধীরা। তার মধ্যেই নতুন টেলিকম নীতি ঘোষণা করল মনমোহন সিংহ সরকার, যার আশু সুবিধা পেতে পারেন গ্রাহকরা। কারণ মোবাইল ফোনে রোমিং ব্যবস্থাই তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নয়া নীতিতে। পাশাপাশি গোটা দেশে ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি’ ব্যবস্থাও শুরু হবে পুরোদমে। অর্থাৎ পুরনো মোবাইল নম্বর রেখেই এ বার দেশের যে কোনও প্রান্তের যে কোনও পরিষেবা সংস্থার নতুন গ্রাহক হওয়া যাবে।
নয়া এই টেলিকম নীতিতে আজ অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তবে কবে থেকে এই সব ব্যবস্থা রূপায়ণ হবে তা স্পষ্ট নয়। টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বল বলেছেন, “নতুন নীতি রূপায়ণে সময় লাগবে। কত দিনের মধ্যে এই সুবিধা দেওয়া যাবে, তা বাজারই নির্ধারণ করবে।” টেলিকম মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, নয়া নীতি অনুযায়ী সবার আগে ব্রডব্যান্ডের ডাউনলোড স্পিড বাড়িয়ে প্রতি সেকেন্ডে ন্যূনতম ২ মেগাবাইট করা হবে।
টেলিফোন, বিশেষ করে মোবাইল পরিষেবাকে আরও বেশি গ্রাহক সহায়ক করে তোলা ও গ্রাহকদের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা যেমন নয়া নীতির একটা দিক, অন্য দিকটি অবশ্যই টেলিকম লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম বণ্টনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনা। দ্বিতীয় বিষয়টিই এই মুহূর্তে সরকারের অগ্রাধিকার বলে মনে করা হচ্ছে। সে কারণেই নতুন টেলিকম নীতিতে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা ও স্পেকট্রাম বণ্টনকে পৃথক করা হয়েছে। তা ছাড়া বর্তমান ব্যবস্থায় সিডিএমএ এবং জিএসএম প্রযুক্তির জন্য পৃথক তরঙ্গ ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু নয়া নীতিতে যে কোনও তরঙ্গে যে কোনও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে পরিষেবা সংস্থাগুলি। তবে স্পেকট্রাম তথা রেডিও এয়ারওয়েভ বণ্টন ও তার মূল্য নির্ধারণ আপাতত নতুন নীতির বাইরে রাখা হচ্ছে। টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বলের কথায়, “স্পেকট্রাম বণ্টন স্বচ্ছ ভাবে করা হবে এবং তার মূল্য বাজার নির্ধারণ করবে।”
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ফেব্রুয়ারি মাসে ১২৬টি টু-জি স্পেকট্রাম লাইসেন্স বাতিল করে তা নতুন করে বণ্টনের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। অগস্ট মাসে নিলামের মাধ্যমে ওই স্পেকট্রাম বণ্টন করতে চলেছে সরকার। তার আগে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ এবং নিলাম প্রক্রিয়ার খুঁটিনাটি স্থির করার প্রক্রিয়া এখন চলছে। ৬ জুন বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
কেন্দ্রের সামগ্রিক এই প্রয়াসেই স্পষ্ট যে টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি নিয়ে সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা কাটাতে সক্রিয় প্রধানমন্ত্রী। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক মন্ত্রী জানান, সুখরাম থেকে শুরু করে প্রমোদ মহাজন, দয়ানিধি মারান, এ রাজার মতো টেলিকম মন্ত্রীদের সকলেরই বিরুদ্ধে কমবেশি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই সব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম বণ্টনে অস্বচ্ছতা।
নয়া নীতি টেলিকম ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, সরকার এক দিকে যখন স্পেকট্রাম তথা রেডিও এয়ারওয়েভের মূল্য নির্ধারণ বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছে, তখন কী ভাবে তা গ্রাহক-সহায়ক হতে পারে? কারণ টেলিকম সংস্থাগুলির পক্ষে নিলামে স্পেকট্রাম কেনা খরচ সাপেক্ষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার প্রভাব আখেরে গ্রাহকদের মোবাইল বিলের উপরেই পড়বে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, “সরকার এমন কিছু করবে না যাতে গ্রাহকদের ওপর চাপ বাড়ে। বরং মোবাইলকে আরও সাধ্যের মধ্যে আনাই লক্ষ্য। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই স্পেকট্রাম বণ্টন করা হবে।” টেলিকম মন্ত্রী জানান, নয়া নীতির আর একটি উদ্দেশ্য ভারতকে মোবাইল ও টেলিকম যন্ত্রাংশ উৎপাদনের কেন্দ্র করে তোলা। এ দেশে মোবাইল ও টেলিকম যন্ত্রাংশ তৈরি শুরু হলে দাম যেমন কমবে, বহু কর্মসংস্থানও হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে মাস খানেকের মধ্যে নয়া উৎপাদন নীতিতে অনুমোদন দেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.