|
|
|
|
নিজঘর হাতছাড়া, শক্ত মাঠে বিশ্বনাথ |
সুব্রত সীট • দুর্গাপুর |
দেড় দশকের কাউন্সিলর আজ ‘বেঘর’।
দল প্রথমে তাঁকে প্রার্থীই করতে চায়নি। কিন্তু তিনিও ছাড়ার পাত্র নন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একেবারে শেষ মুহূর্তে তিনি টিকিট পান। নিজের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়েছেন ৪২ নম্বরে। কঠিন লড়াই লড়তে নেমেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।
১৯৯৭ সালের ভোটে কংগ্রেসের যে ৬ জন জিতেছিলেন, তাঁদের সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন বিশ্বনাথবাবু। ২০০১ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়ে পরের বছর ফের জেতেন। ২০০৭-এ সিপিএম তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে এক নির্দলকে সমর্থন করে। সে সময়ে নিন্দুকেরা বলেছিলেন, মেয়র রথীন রায়ের সঙ্গে দহরম-মহরমের কারণেই তাঁকে কার্যত ‘ওয়াকওভার’ দেওয়া হয়েছিল। যদিও কোনও পক্ষই তা স্বীকার করে না। ওই বছরেই পাশের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেতেন তাঁর স্ত্রী রুমা পাড়িয়াল। এ হেন নেতা এ বার গোড়ায় চাপেই পড়ে গিয়েছিলেন।
এ বার মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ছিল ৭ মে। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বিশ্বনাথবাবুর নাম ছিল না। দলে তিনি যাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত, সেই জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “উচ্চতর নেতৃত্ব এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” অথচ সবাইকে অবাক করে দুপুর ১টা নাগাদ সপার্ষদ মনোনয়ন দাখিল করতে মহকুমাশাসকের অফিস চত্বরে চলে আসেন বিশ্বনাথবাবু। তাঁর অনুগামীদের অনেকেই দলীয় নেতৃত্বের মুণ্ডপাত করতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গেও তাঁদের বচসা বাধে। শেষমেশ বিশ্বনাথবাবু তাঁদের শান্ত করে মনোনয়ন জমা দেন।
বিশ্বনাথবাবুর অনুগামীদের একাংশের মতে, যে তিন তৃণমূল নেতাকে ধরে বিশ্বনাথবাবু টিকিট পান, সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের এক জন। শুভেন্দুবাবু তাঁর হয়ে প্রচারও করে গিয়েছেন। তাঁর সভায় মানুষের উপস্থিতি দেখে বুকে বল পেয়েছেন বিশ্বনাথবাবুও। পরে শহরে এসেছেন মদন মিত্র, মলয় ঘটকেরাও। তবু লড়াই যে বেশ কঠিন হবে, তা ঠারেঠোরে মেনে নিয়েছেন বিশ্বনাথবাবু। গত বার কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ‘অলিখিত সমঝোতা’ ছিল। বিজেপি-র সঙ্গেও তৃণমূলের জোট ছিল। এই ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি, জিতেছিল সিপিএম। এ বার তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ছাড়াও এক নির্দল প্রার্থী রয়েছেন। ভোট ভাগাভাগি অনিবার্য।
বিশ্বনাথবাবু বলছেন, “নতুন ওয়ার্ড। কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আশা করি, তা প্রমাণের সুযোগ পাব।” তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, সিপিএমের অসীমকুমার ঘোষ পাল্টা বলেন, “উনি আর ওঁর সাঙ্গোপাঙ্গ সব বাইরের লোক। ওঁর তো বিশেষ সুনামও নেই!” কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামা সিংহও বলেন, “ওঁর সভাতেও তো বাইরের লোক দিয়ে ভিড় করানো হচ্ছে।”
কে বাইরের আর কে তাঁদের অন্তরের, তা অবশ্য জানে শুধু ভোটার। |
|
|
|
|
|