ঝড়-বৃষ্টি হলে গরম থেকে স্বস্তি। কিন্তু ভাণ্ডারদহ বিলে নৌকা চলাচল তাতেই বন্ধ হয়ে যায় অনেক জায়গায়। বেলডাঙার পিলখানা ঘাটে কচুরিপানা সরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ঝড় উঠলেই সেই কচুরিপানা ঢেকে ফেলে নৌকা যাতায়াতের পথ।
মুর্শিদাবাদের প্রাচীন ভাণ্ডারদহ বিল ছড়িয়ে রয়েছে নওদা, বেলডাঙা, হরিহরপাড়া ব্লক জুড়ে। অনেকগুলি ঘাটেই নৌকা চলাচল করে। তাতে ভিড়ও হয় প্রচুর। কারণ, সড়ক পথে যেতে গেলে যতটা ঘুরে যেতে হয়, তার থেকে অনেক কম সময় লাগে নৌকা করে পারাপার করলে। পরিবহণ খরচও পড়ে কম। কিন্তু সেই কারণেই এই গুরুত্বপূর্ণ জলপথ পরিবহণ নিয়ে যতটা নজরদারি প্রশাসনের থাকার কথা ছিল, ততটা নেই।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বেলডাঙা বড়ুয়া মোড় থেকে রাজ্য সড়ক ধরে নওদা যাওয়ার রাস্তায় কালীতলা মোড় হয়ে মানিকতলা খেয়াঘাট পার হলেই নওদার চাঁদপুর। ভাণ্ডারদহে জল কমেছে ঠিকই। কিন্তু খাত গভীর থাকায় নৌকা চলাচল করছে। যাত্রীদের অবশ্য এখানে বেশ খানিকটা হেঁটে নৌ পারাপার করতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা অসীম পোদ্দার বলেন, “অস্থায়ী ভাবে হলেও গ্রীষ্মকালের জন্য যাত্রীদের সুবিধার্থে জেটি তৈরি করানো উচিত। কাদা পেরিয়ে যাত্রীদের নৌকায় উঠতেই খুব সমস্যায় পড়তে হয়।”
ওই রাস্তা ধরেই বেলডাঙার পিলখানা ঘাট। দু’পাশেই ঘন বসতি। নৌকায় ভিড় লেগেই থাকে। কিছু দিন আগেও কচুরিপানার জন্য এক রকম যাতায়াত বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য কচুরিপানা সরানো হয়েছে। কিন্তু ঝড় উঠলেই কচুরিপানা ফিরে আসছে। এই ঘাট পেরোলে উল্টো দিকে হরিহরপাড়ার ঘোড়ামারায় পৌঁছনো যায়। এলাকার বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল বলেন, “ট্রেন ধরতে স্টেশনে যেতে অনেকেই এই নৌ-পথ ব্যবহার করেন। কিন্তু সে জন্য দরকার ছিল নৌ পথ পরিষ্কার রাখা। প্রশাসনের সে ব্যাপারে কোনও মাথাব্যথা নেই।”
রতনপুর ঘাট, রামপাড়া ঘাট অন্য দিকে বিন্দুবাসিনীতলা ও মহিষমারা ঘাটেও বহু লোক যাতায়াত করেন। সেখানেও জল কম থাকায় যাত্রীদের কাদা পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের সুখেন হালদার বলেন, “এই ঘাটগুলির মধ্যে সব থেকে বড় সমস্যা পিলখানা ও মানিকতলা ঘাটে। কচুরিপানার জন্য হঠাৎ বন্ধ হয়ে যেত নৌকা চলাচল। কিন্তু এখন সেই সমস্যা নেই।”
বহরমপুরের মহকুমাশাসক অধীর বিশ্বাস বলেন, “নৌকা পর্যন্ত যাতায়াত করতে যাতে যাত্রীদের কাদা জল পেরোতে না হয়, তার জন্য ব্যবস্থা করতে বিডিওকে বলছি।” নৌকায় বেশি যাত্রী তোলার প্রবণতা রয়েছে এখানে। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে মাঝ ঝিলে তাতে বিপদ ঘটতে পারে। অধীরবাবু বলেন, “পুলিশকে বলাই রয়েছে নৌকার যাত্রী সংখ্যার উপরে নজর রাখতে।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি পূর্ণিমা দাসের কথায়, “ফেরিঘাটগুলিতে যাত্রীদের সাচ্ছন্দ্য বাড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |